বর্তমান সরকার দেশ পরিচালনা করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শনিবার (২৩ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এ দাবি করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার মানুষের খাওয়া-পড়ার দাম কমাতে পারে না। তারা কথা দিয়েছিল ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে। এখন চাল খাওয়াচ্ছে ৭০ টাকা। এক সপ্তাহের মধ্যে সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ৬০ টাকা। চিনির দাম বেড়েছে, লবনের দাম বেড়েছে, সবজির দাম বেড়েছে, ডালের দাম বেড়েছে। মানুষ কী খাবে সেদিকে সরকারের খেয়াল নাই, তারা খেতে পারলেই হলো। আওয়ামী লীগ খাবে, পেট মোটা করবে, শরীর মোটা করবে আর দুর্নীতি করে বিদেশে টাকা পাচার করে বিদেশে বাড়িঘর তৈরি করবে। অর্থাৎ এই সরকার দেশ পরিচালনা করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, এই সরকার একদিকে যেমন নিত্যপণ্যের দাম কমাতে ব্যর্থ হয়েছে, গরিব মানুষকে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান দিতে ব্যর্থ হয়েছে অন্যদিকে দেশে সরকার সা¤প্রদায়িক সম্প্রীতি অক্ষুণ্ণ রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। আজকে পুলিশ প্রশাসন দিয়ে পুজামণ্ডপে কোনো প্রকার নিরাপত্তা দেওয়া হয় না এবং সরকারের মদদেই এই সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। এর একটাই কারণ সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করে মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা। এই সরকার মানুষের অধিকারগুলোকে হরণ করছে, ধ্বংস করে দিচ্ছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, মানুষ আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মানুষ এখন তাদের অধিকার চায়, ভোটের অধিকার চায়, দেশনেত্রীকে মুক্ত দেখতে চায়, আমাদের ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে যে মামলা তা প্রত্যাহার চায়, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা তা প্রত্যাহার চায়।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে কেন আমরা ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করেছিলাম। একটা স্বাধীন, গণতান্ত্রিক মুক্ত বাংলাদেশের জন্য। সেই বাংলাদেশকে এই সরকার ধ্বংস করেছে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে। তারা একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল গঠন করতে চায়। আমরা পরিষ্কারভাবে বলে দিতে চাই, অবিলম্বে গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। আমাদের নেতা তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। তার বিরুদ্ধে থাকা সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। চাল, ডাল ও তেলের দাম কমাতে হবে।
ফখরুল আরও বলেন, সরকারকে বলবো, দয়া করে মানুষের ওপর অত্যাচার বন্ধ করে অবিলম্বে পদত্যাগ করুন এবং একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে দায়িত্ব দিন যারা একটি নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম নিরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।