৩৫ বছরে একজনও শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি রাজশাহী কলেজের উর্দু বিভাগে। কলেজটিতে সর্বশেষ ১৯৮৬ সালে একজন ছাত্র ছিল। তার পরে দীর্ঘ সময়ে আর একজন শিক্ষার্থীও ভর্তি হয়নি। বর্তমানে কলেজটিতে উর্দু বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে সিলেবাস বন্ধ রয়েছে। তাই ভর্তি বন্ধ। তবে ১৯৮৬ সালের আগে শিক্ষার্থী ভর্তি হতো এই বিষয়ে বলে রাজশাহী কলেজ সূত্রে জানা গেছে। কলেজটিতে উর্দু বিভাগ থাকলেও বর্তমানে নেই শিক্ষক-শিক্ষার্থী। ফলে বছরের পর বছর তালাবদ্ধ থাকে বিভাগটি। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে- দেশের ছয়টি সরকারি কলেজে উর্দু বিভাগে ৩৫ বছর ধরে কোনো শিক্ষার্থী নেই। তবে বিসিএসের মাধ্যমে এসব বিভাগের জন্য শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হতো। বর্তমানে তিনটি সরকারি কলেজ ও দুই অধিদপ্তরে পাঁচজন কর্মরত রয়েছেন। যাঁদের একজন ২৬তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার ও চারজন ৩৩তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা। তবে, কেউ কেউ বলছেন সংখ্যা আরো বেশি। শিক্ষা ক্যাডার সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়ার মতো কোনো পদ্ধতি এখন চালু হয়নি। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, রংপুরের কারমাইকেল কলেজ, রাজশাহী কলেজ, সিলেট এমসি কলেজ, সিলেট আলিয়া মাদরাসা, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ও চট্টগ্রাম কলেজে উর্দু বিভাগ আছে। এর মধ্যে কারমাইকেল কলেজ, রাজশাহী কলেজ ও সিলেট আলিয়া মাদরাসায় একজন করে উর্দু শিক্ষক আছেন। তবে রাজশাহী কলেজের উর্দু শিক্ষক আমিনুল ইসলাম ছুটিতে আছেন। করছেন পিএইচডি। এছাড়া এখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উর্দু বিভাগ রয়েছে। রাজশাহী কলেজের উর্দু বিভাবের শিক্ষক আমিনুল ইসলাম জানান, ‘আমি ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ছুটি নিয়েছি। বর্তমানে পিএইচডি করছি। আমি সর্বশেষ শিক্ষক ছিলাম রাজশাহী কলেজে। উর্দু ভাষা মানুষ সেই ভাবে নেই না। মানুষ মনে করে উর্দু মানে ১৯৫২- ’৭১ বিরোধী বা পাকিস্তানের ভাষা। তিনি আরো বলেন, মধ্যপাচ্যের দেশগুলোতে ভালো উর্দু জানা মানুষের কদর রয়েছে। যদিও সেই দেশগুলোতে আরবি ও ফার্সি ভাষা বেশি চলে। তবে আরবি ও ফার্সি ভাষায় অনেক উর্দু ভাষা ব্যবহার হয়। আর হিন্দি ভাষার কাছাকাছি উর্দু। রাজশাহী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ হবিবুর রহমান জানান, উর্দু পাকিস্তানি ভাষা। আশির দশকের আগে শিক্ষার্থী ভর্তি হতো এই ভাষায় পড়া-শোনার জন্য। এই বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে সিলেবাস বন্ধ। নেই শিক্ষক-শিক্ষার্থী। এই কলেজেই সর্বশেষ একজন ছাত্র ছিল ১৯৮৬ সালে। তার পরে আর কেউ ভর্তি হয়নি। নি আরো বলেন, কোনো ভাষাকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। তবে বিশ্বায়নের যুগে কোন ভাষার বেশি গুরুত্ব সেদিক বিবেচনায় রাখতে হবে। আমাদের দেশের প্রচুর মানবসম্পদ সৌদি আরব, দুবাই, কোরিয়াতে কাজ করে। সেই দিকে খেয়াল রেখে আরবি ভাষা, কোরিয়ান ভাষার গুরুত্ব রয়েছে। তবে উর্দু ভাষার চাহিদা আমাদের দেশে আছে কিনা সেটি বিবেচনা করা দরকার।