চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুরুতর আহত দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহাদী জে আকিবের জ্ঞান ফিরেছে। তিনি হাসপাতালের আইসিইউ বেডে এখন নড়াচড়া করছেন। তবে, তার অবস্থা এখনও শঙ্কামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
সোমবার সকালে বাংলাদেশ জার্নালকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আকিবের চিকিৎসার তত্ত্বাবধানে থাকা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের নেতা ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান। এর আগে চিকিৎসাধীন আকিবের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ছবিতে আকিবের মাথায় ব্যান্ডেজ দেখা যায় এবং ওই ব্যান্ডেজের ওপর লেখা ‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না।’ ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, আকিবের ব্রেনে অপারেশন করতে হয়েছে। ওর ব্রেনের বিভিন্ন জায়গায় রক্ত জমে গিয়েছিল। ওই রক্তগুলো সরানো হয়েছে। রোববার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় তার জ্ঞান ফিরেছে। তবে এখনও তাকে আইসিইউতে রেখেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তার সুস্থ হতে অনেক সময় লাগতে পারে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের প্রধান রঞ্জন কুমার নাথ বলেন, জ্ঞান ফেরার পর আকিবের লাইফ সাপোর্টও খুলে নেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির দিকে। তবে এখনই তাকে শঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না। আকিব হোসেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি কুমিল্লায়। সে এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ ফাইভ পেয়ে কুমিল্লা জেলা স্কুল থেকে পাশ করেছে। আর নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসিতেও গোল্ডেন জিপিএ ফাইভ পেয়েছে। এরপর ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়। মাহাদী শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীরা তাকে মারধর করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টায় প্রথম দুই পক্ষের মধ্যে ছাত্রবাসে সংঘর্ষ হয়। পরে দ্বিতীয় দফায় শনিবার সকাল ৯টার দিকে আবারও সংঘর্ষে জড়ায় উভয় গ্রুপ। এতে মাহফুজুল হক (২৩), নাইমুল ইসলাম (২০) এবং মাহাদী জে আকিব (২০) নামের তিনজন আহত হন। এদের মধ্যে আকিব শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসন চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। আর মাহফুজ ও নাইমুল ইসলাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। এ ঘটনায় ১৬ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন- সাদ মোহাম্মদ গালিব (২১), আহসানুল কবির রুমন (২১), জাহিদুল ইসলাম জিসান (২১), মাহাদি বিন হাশিম (২৪), আসিফ বিন তাকি (২৫), ইমতিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী (২১), মাহতাব উদ্দিন রাফি (২১), জাহিদুল আলম জিসান (২১), সৌরভ ব্যাপারী (২১), মো. আনিস (২১), রক্তিম দে (২১), এইচ এম আসহাব উদ্দিন (২১), তানভীর ইসলাম (২১), নাজমুস সাদাত আসিফ (২১), এনামুল হাসান সীমান্ত (২১) ও রিজওয়ান আহমেদ (২১)।