জেলার ডাকাতিয়া নদী থেকে পলো দিয়ে শত শত মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে মাছ শিকার করছে। আজ রোববার জেলার মোহাম্মদপুর, তারাপাইয়া ও ইছাপুরা এলাকায় ডাকাতিয়া নদীতে শতাধিক মাছ শিকারী মাছ ধরা উৎসবে অংশগ্রহণ করে। দলে দলে পলো নিয়ে মাছ ধরার দৃশ্যটি ছিল চোখের পড়ার মতো। সকাল থেকেই পলো, জাল, দঁড়িসহ মাছ শিকারের বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে নদীর পাড়ে এসে জড়ো হতে থাকেন। প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে পলো দিয়ে পানিতে একের পর এক ঝাঁপ দেওয়া আর হৈ হুল্লোর করে সামনের দিকে ছন্দের তালে তালে এগিয়ে যেতে থাকেন তারা। এ যেন হারিয়ে যাওয়া বাংলার সৌন্দর্যময় দৃশ্য আর ঐতিহ্যের জয়গান। শিকারীদের অনেকেই বোয়াল, গজার, শোলসহ বিভিন্ন দেশি প্রজাতির মাছ ধরেন। কেউ কেউ একাধিক ধরলেও কেউ ফিরেন শূন্য হাতে। একজন মাছ ধরতে পারলে আওয়াজ তুলে আনন্দে শরীক হন সবাই। পলো ছাড়াও ফার জাল, ছিটকি জাল, ঝাঁকি জাল, পেলুন ইত্যাদি দিয়ে মাছ শিকার করেন অনেকে।
একসময় ডাকাতিয়া নদীতে বছরব্যাপী বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় সুস্বাদু মাছ পাওয়া যেত। কালের বিবর্তনে নদীটি সংকুচিত হওয়ায় এখন আর আগের মতো মাছ পাওয়া যায়না। চলতি শীত মৌসুমেই নদীটির বিভিন্ন স্থান শুকিয়ে গেছে। কোথাও কোথাও হাঁটু বা কোমর সমান পানি। আর তেমনি এলাকা লাকসামের মোহাম্মদপুর, তারাপাইয়া ও ইছাপুরা এ এলাকায় ডাকাতিয়া নদীতে মৎস্য শিকারের উৎসবের পরিণত হয়। কারও হাতে পলো, কারও হাতে চাবিজাল, খেয়াজাল, টানাজাল বা ছেঁকাজাল। মাছ পাওয়া থেকেও উৎসবে অংশ নেয়াটাই ছিল আনন্দের-এমনটি জানালেন কয়েকজন মৎস্য শিকারী। এ বিষয়ে মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া বাসসকে বলেন, নদী থেকে পলো দিয়ে মাছ ধরা আমাদের একটি ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন উৎসব। এতে দেশীয় মাছ পাওয়া যায়। এ শখের উৎসব ধরে রাখার সঙ্গে জড়িতদের আমি সাধুবাদ জানাই। এটি একটি আনন্দের বিষয়।