শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৯:১৩ পূর্বাহ্ন

একদিনে সাগরিকায় দুই গল্প

স্পোর্টস ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২১

সকালের সূর্য দেখে নাকি বোঝা যায় দিনটি কেমন যাবে! কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা এতটাই ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ যে সকাল দেখে দিনের হিসাব করা বেশ কঠিনই। চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিন সে কথাই বলে যায়। সাগরপাড়ের স্টেডিয়ামে তৃতীয় দিনের সকালে এতটাই ভালো করেছিল, যা প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে যায়। পাকিস্তানকে ২৮৬ রানে অলআউট করে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামে মুমিনুল হকরা। কিন্তু শেষ সেশনে এসে নিজেরা ৩৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে লিখে নেয় অন্য গল্প। সাগরিকার সকাল আর বিকাল মেলানো সত্যি কঠিন!
চতুর্থ দিনে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে হলে প্রথম সেশন বিনা বাধায় কাটিয়ে দিতে হবে মুশফিকুর রহিম ও ইয়াসির আলীকে। তাহলেই হয়তো পাকিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের ফলটা নিজেদের পক্ষে আনা সম্ভব হবে।
কিন্তু দুই দলের জন্যই আতঙ্কের নাম হয়ে আছে প্রথম সেশন। শুক্রবার প্রথম সেশনে বাংলাদেশ দল হারিয়েছে টপ অর্ডারের চার ব্যাটার। দ্বিতীয় দিন প্রথম সেশনে অবিচ্ছন্ন থাকা লিটন-মুশফিকদের বিদায় করে ৩৩০ রানে থামিয়ে দেয় পাকিস্তানের বোলাররা। ওইদিন বাকি সময়টায় কোনও উইকেট না হারিয়ে ১৪৫ রান করে সফরকারীরা। রবিবার তৃতীয় দিন মাঠে নেমে প্রথম সেশনে পাকিস্তান হারায় ৪ উইকেট। তাইজুল ইসলামের বিষাক্ত স্পিনে নীল পাকিস্তান ২৮৬-তেই থেমে যায়। ৮৩ রানের লিড পাওয়া বাংলাদেশ চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনটা কীভাবে পার করে, সেটাই দেখার।
রবিবার রৌদ্রজ্জ্বল সকালে দারুণ করেছিল বাংলাদেশ। দিনের প্রথম ওভারেই পরপর দুই বলে পাকিস্তানের দুই ব্যাটারকে ফিরিয়ে দলকে ম্যাচে ফেরান তাইজুল। এরপর থেকেই মেহেদী-তাইজুল মিলে পাকিস্তানের ব্যাটারদের চেপে ধরেন। ১০ উইকেটের মধ্যে ৮ উইকেটই যায় স্পিনারদের পকেটে। বাকি দুটি উইকেট নেন পেসার এবাদত হোসেন। মূলত তাইজুলের মায়াবী জাদুতেই ছত্রখান হয়ে যায় পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপ। সফরকারীরা ২৮৬ রানে অলআউট হলে বাংলাদেশ লিড পায় ৪৪ রানের। সকাল থেকে শুরু করে পাক্কা সাড়ে ৪ ঘণ্টা প্রতিপক্ষকে শাসন করেছে বাংলাদেশে। কিন্তু বিকাল নামতেই চিত্রনাট্যে পরিবর্তন!

নতুন বলে বাংলাদেশের টপ অর্ডারের দুর্বলতা দীর্ঘদিনের। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও একই সমস্যায় পড়ে টপ অর্ডার। আগের ইনিংসে ৪৯ রানে ৪ উইকেট হারানো বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে আরও বাজে অবস্থায় পড়ে যায়। শাহীন আফ্রিদি ও হাসান আলীর তোপে ২৫ রান তুলতেই ফিরে যান বাংলাদেশের চার ব্যাটার। ইনিংসের শুরুতেই ফিরে যান ওপেনার সাদমান ইসলাম। শাহীনের লেগ স্টাম্পের একটি বল ফ্লিক করতে গিয়ে ব্যাটে বল সংযোগ করতে না পেরে এলবিডব্লিউর শিকার হন। রিভিউ নিলেও থার্ড আম্পায়ার ফিল্ড আম্পায়ারের ‘কল’ বহাল রাখেন। সাদমানের বিদায়ের পর নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক রানের খাতা না খুলেই আউট। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসে অধিনায়ক মুমিনুল দলের জন্য কিছুই করতে পারেননি।
এদিকে বেশ কিছুক্ষণ টিকলেও প্রথম বল থেকেই অস্বস্তিতে ছিলেন ওপেনার সাইফ হাসান। ফুটওয়ার্ক, টেকনিক, পেস আক্রমণের বিপক্ষে অদক্ষতা, আত্মবিশ্বাসহীনতা- সবকিছুই গত দুই ইনিংসে স্পষ্ট ফুটে উঠেছে তার ব্যাটিংয়ে। দুই ইনিংসেই শাহীনের বাউন্সার বুঝতে না পেরে আনাড়ি ব্যাটারের মতো আউট হয়েছেন তিনি।
২৫ রানে টপ অর্ডারের চার ব্যাটারকে হারিয়ে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশকে টেনে তোলার চেষ্টায় মুশফিক ও অভিষিক্ত ইয়াসির। তৃতীয় দিন শেষে দুজন মিলে ১৪ রান যোগ করে অবিচ্ছিন্ন আছেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে স্কোরবোর্ডে লড়াইয়ের পুঁজির জন্য প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও একই দায়িত্ব নিতে হবে মুশফিককে। কিন্তু চট্টগ্রাম টেস্টের তিন দিনেই প্রথম সেশনে কোনও ব্যাটার দাঁড়াতে পারেননি। প্রতিদিনই প্রথম সেশনে চারটি করে উইকেট গিয়েছে। এরপরই ছোটখাটো জুটিতে দলকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে দুই দল। সেই হিসাবে সোমবার চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনটি মুশফিক-ইয়াসিরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শাহীন-হাসানের পেস আক্রমণ প্রথম ঘণ্টায় রুখে দিতে পারলে বড় রানের লক্ষ্য দেওয়া সম্ভব হবে।-বাংলাট্রিবিউন




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com