যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে ছয় কোটি ২৪ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর ফলে আলোচিত মামলাটির বিচার শুরু হলো। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এর বিচারক মোহাম্মদ আলী হোসাইন এই আদেশ দেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো: আল-আমিন তালুকদার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মঙ্গলবার এ মামলায় অভিযোগ গঠনের জন্য দিন ধার্য ছিল। বিচারক আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২২ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন।
এর আগে গত ৬ অক্টোবর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ দুদকের দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন এরপরে মামলাটি বিচারের জন্য এই আদালতে বদলির নির্দেশ দেন। গত বছর ৪ আগস্ট দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ দুদকের উপপরিচালক শাহীন আরা মমতাজ বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় পাপিয়ার বিরুদ্ধে মোট ছয় কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর থেকে ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলের ২৫টি রুম ভাড়া নেন পাপিয়া। তিনি নগদে মোট তিন কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৬১ টাকা বিল পরিশোধ করেন। ওয়েস্টিন হোটেলে থাকা অবস্থায় প্রায় ৪০ লাখ টাকার কেনাকাটা করেন পাপিয়া। এসব অর্থের কোনো বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি তিনি। এ ছাড়া ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালে এপ্রিল পর্যন্ত বাসা ভাড়া ৩০ লাখ টাকা, গাড়ির ব্যবসায় বিনিয়োগ এক কোটি টাকা, নরসিংদীতে কেএমসি কার ওয়াশ সলিউশনে বিনিয়োগ ২০ লাখ টাকা এবং বিভিন্ন ব্যাংকে নিজের ও স্বামীর নামে জমা রাখা ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৮ টাকারও কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি দুদকের অনুসন্ধানে।
অন্যদিকে, র্যাবের অভিযানে তার বাসা থেকে ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং সুমনের নামে হোন্ডা সিভিএ ২০১২ মডেলের ২২ লাখ টাকার গাড়ি জব্দ করা হয়। এরও কোনো বৈধ উৎস মেলেনি দুদকের অনুসন্ধানে। মোট ছয় কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার ৭১৮ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া যায়। এসব অর্থের বৈধ উৎসের দালিলিক প্রমাণ না পাওয়ায় পাপিয়া এবং তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমনের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।