হাদিসের ভাষায় জুমার দিন মুসলমানদের জন্য একটি বড় নিয়ামত। এ দিনটি গরিব মুসল্লিদের হজের দিন। এ দিন প্রতিটি ঈমানদারের সামনে হাজির হয় অফুরন্ত কল্যাণ ও সৌভাগ্যের বার্তা নিয়ে। সপ্তাহের এই দিনে জোহরের ওয়াক্তে জুমার নামাজ জামাতের সঙ্গে পড়া ফরজ। জুমার নামাজ নিজ গৃহে একাকী পড়া যায় না। এই নামাজ ইমামসহ আরো তিন বা এর বেশি মুসল্লি মিলে মসজিদে জামাতে আদায় করতে হয়।
জুমাবারের কিছু করণীয়-বর্জনীয় নি¤œ রূপ- ১. যাদের ওপর জুমা ফরজ তাদের জন্য এদিনে গোসল করাকে রাসুল (সা.) ওয়াজিব করেছেন। ২. এই দিন নখ ও চুল কাটা। ৩. জুমার সালাত আদায়ের জন্য সুগন্ধি ব্যবহার করা। ৪. মেসওয়াক করা। ৫. গায়ে তেল ব্যবহার করা। ৬. উত্তম পোশাক পরিধান করে জুমা আদায় করা।
৭. মুসল্লিদের ইমামের দিকে মুখ করে বসা। ৮. মনোযোগসহ খুতবা শোনা ও চুপ থাকা ওয়াজিব। ৯. আগেভাগে মসজিদে যাওয়া। ১০. পায়ে হেঁটে মসজিদে গমন করা। ১১. কাউকে উঠিয়ে দিয়ে সেখানে বসার চেষ্টা না করা। ১২. জুমার আগে মসজিদে জিকর বা কোনো শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান না করা। অর্থাৎ ভাগ ভাগ, গোল গোল হয়ে না বসা। ১৩. কেউ কথা বললে ‘চুপ করুন’ এটুকুও না বলা। ১৪. মসজিদে যাওয়ার আগে কাঁচা পেঁয়াজ, রসুন না খাওয়া ও ধূমপান না করা। ১৫. ঘুমের ভাব বা তন্দ্রাচ্ছন্ন হলে বসার জায়গা বদল করে বসা।
১৬. জুমার দিন ফজর নামাজে প্রথম রাকাতে সূরা সিজদা আর দ্বিতীয় রাকাতে সূরা দাহর পড়া। ১৭. সূরা জুমা ও মোনাফিকুন দিয়ে জুমার সালাত আদায় করা। অথবা সূরা আলাক ও সূরা গাশিয়া দিয়ে জুমা আদায় করা।
১৮. জুমার দিন ও রাতে বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা। ১৯. এদিন বেশি বেশি দোয়া করা। ২০. মুসল্লিদের ঘাড় ডিঙিয়ে সামনের কাতারে আগানোর চেষ্টা না করা। ২১. ইমামের খুতবা শ্রবণকালে দুই হাঁটু উঠিয়ে না বসা।
২২. খুতবার সময় ইমামের কাছাকাছি বসা। হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, জান্নাতে প্রবেশের উপযুক্ত হলেও ইমাম থেকে দূরে উপবেশনকারীরা বিলম্বে জান্নাতে প্রবেশ করবে। ২৩. জুমার দিন সূরা কাহফ তেলাওয়াত করা। এতে পাঠকের জন্য আল্লাহ তায়ালা দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়কে আলোকিত করে দেন। ২৪. জুমার আজান দেয়া।
২৫. জুমার ফরজ নামাজ আদায়ের পর মসজিদে চার রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করা। ২৬. ওজর ছাড়া একই গ্রাম ও মহল্লায় একাধিক জুমা চালু না করা। আর ওজর হলো এলাকাটি খুব বড় হওয়া, প্রচুর জনবসতি থাকা, মসজিদ দূরে হওয়া, মসজিদে জায়গা না পাওয়া বা কোনো ফেতনার ভয় থাকা। ২৭. এতটুকু জোরে আওয়াজ করে কোনো কিছু না পড়া, যাতে অন্যের নামাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা মনোযোগে বিঘœ ঘটে। ২৮. খুতবার সময় খতিবের কোনো কথার সাড়া দেয়া বা তার প্রশ্নের উত্তর প্রদানে কোনা সমস্যা নেই। ২৯. হানাফি ওলামায়ে কেরামের মতানুযায়ী, ভিড় বেশি হলে সামনের মুসল্লির পিঠের ওপর সেজদা দেয়া জায়েজ। দরকার হলে পায়ের ওপরও দিতে পারে। (আর রাউদুল মুরবি)। ৩০. যেখানে জুমার ফরজ আদায় করা হয়েছে, উত্তম হলো ওই একই স্থানে সুন্নত না পড়া।এবং কোনো কথা না বলে পরবর্তী সুন্নত নামাজ আদায় করা। ৩১. ইমাম-খতিব সাহেব মিম্বরে এসে হাজির হওয়ার আগ পর্যন্ত তাসবিহ-তাহলিল, তওবা-এস্তেগফার ও কোরআন তেলাওয়াতে রত থাকা।