বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে পিটার ডি. হ্যাসের মনোনয়নে অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন সিনেট। এতে বর্তমান রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলারের উত্তরসূরি হিসেবে বাংলাদেশে দায়িত্ব নেবেন পিটার ডি. হ্যাস। আর্ল মিলার ২০১৮ সালে পূর্বসূরী মার্শা বার্নিকাটের স্থলাভিষিক্ত হন।
পেশায় কূটনীতিক পিটার ডি. হ্যাস বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের অধীন ইকোনমিক অ্যান্ড বিজনেস অ্যাফেয়ার্স বিভাগের অ্যাকটিং অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অব স্টেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একই সঙ্গে বিভাগটির প্রিন্সিপাল ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারির দায়িত্বেও রয়েছেন তিনি।
কূটনীতিক ও নীতিনির্ধারক হিসাবে তিন দশকের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন পিটার ডি. হ্যাস এর আগে ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের মুম্বাই মিশনে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। প্যারিসে অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টে যুক্তরাষ্ট্রের উপমিশন প্রধান হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার।
হ্যাস মার্কিন দূতাবাস জাকার্তায় অর্থনৈতিক পরামর্শদাতা এবং লন্ডন ও রাবাতে মার্কিন দূতাবাসে ইকনোমকি কাউন্সেলর হিসাবে কাজ করেছেন। এছাড়া পূর্ব ইউরোপিয় অ্যাসিস্ট্যান্স অফিস, হাইতি ও জার্মানির বার্লিনে মার্কিন দূতাবাসের ইকনোমিক অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন পিটার ডি. হ্যাস।
ইলিনয় ওয়েসলিয়ান ইউনিভার্সিটি থেকে ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ ও জার্মানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন পিটার হ্যাস। তিনি লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সে একজন মার্শাল স্কলার হিসেবে যোগদান করেন, যেখানে তিনি বিশ্ব অর্থনীতি এবং তুলনামূলক সরকার উভয় ক্ষেত্রেই স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পররাষ্ট্র দফতরের একাধিক পারফরম্যান্স পুরষ্কার পেয়েছেন তিনি, যার মধ্যে রয়েছে জেমস ক্লিমেন্ট ডান অ্যাওয়ার্ড ফর এক্সিলেন্স ও কর্ডেল হুল অ্যাওয়ার্ড ফর ইকোনমিক অ্যাচিভমেন্ট। তিনি ইংরেজি ছাড়াও জার্মান ও ফরাসি ভাষায় সাবলীল।
এদিকে, বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, ফ্রান্স, মোনাকো ও চিলিতেও নতুন রাষ্ট্রদূত মনোনীত করেছে বাইডেন প্রশাসন। মার্কিন সিনেট এসব মনোনয়নে অনুমোদনও দিয়েছে। সব মিলিয়ে সিনেটে গতকাল মোট ৩০ জন রাষ্ট্রদূতের মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়। মার্কিন সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা চাক শুমার রাশিয়া থেকে জার্মানি পর্যন্ত নড স্ট্রিম ২ পাইপলাইন নির্মাণে জড়িত কোম্পানির বিরুদ্ধে বিধিনিষেধ আরোপে ভোটগ্রহণে সম্মতি দেয়ার পর রাষ্ট্রদূতদের মনোনয়ন চূড়ান্ত করা নিয়ে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ম অনুযায়ী, যেকোনো একজন সিনেটর চাইলে কোনো রাষ্ট্রদূতের নিয়োগ আটকে দিতে পারেন। সিনেটে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে চলমান বৈরিতার কারণে রাষ্ট্রদূত নিয়োগের প্রক্রিয়াটি আটকে ছিল এতদিন। তবে গতকাল চাক শুমার বড়দিনের ছুটির আগে বিষয়টি সমাধান না হলে সিনেট অধিবেশন দীর্ঘায়িত হওয়ার হুমকি দিলে ভোটগ্রহণে সম্মত হন সিনেটররা।