শালগম শীতকালীন সবজি হিসেবে পরিচিত । এটি এক প্রকার রূপান্তরিত মূল এবং মাটির নিচের অংশ খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। শালগম দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। শালগমে প্রচুর আঁশ থাকায় এটি কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। এটি কফ, ব্রঙ্কাইটিস ও অ্যাজমা নিরাময়ে সহায়তা করে। এতে থাকা ভিটামিন-সি দেহের কোষ ক্ষয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। শালগম শীতকালীন সবজি হিসেবে বাংলাদেশে সুপরিচিত হলেও এর উৎপাদনের পরিমাণ খুব কম। এটি নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের ফসল। সাধারণত ১৫ থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এটি সবচেয়ে ভালো জন্মে। শালগম, চাষের দু’মাসের মধ্যে পরিপক্ক হয়ে যায়। হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার পূর্ব দ্বিমুড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল আউয়াল প্রায় ১০ শতক পতিত জমিতে শালগম চাষ করেন। ফলন বেশ ভালো হয়েছে। খরচ হয়েছে ৭ হাজার টাকা। ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন তিনি। এতে বেশ লাভ হয়েছে তার। আব্দুল আউয়াল বলেন, আমার কাছে শালগম চাষ করা সহজ মনে হয়েছে। ক্ষেতে সামান্য পরিমাণে সার ও অধিক পরিমাণে গোবর দিয়েছি। শালগম চাষে আব্দুল আউয়ালের সফলতা দেখে এলাকার অন্য কৃষকরা উৎসাহিত হয়েছেন। অনেকেই যোগাযোগ করেছেন আব্দুল আউয়ালের সঙ্গে। তিনিও শালগম চাষে কৃষকদেরকে উৎসাহ দিচ্ছেন।
দ্বিমুড়া কৃষি ব্লকের কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীম বলেন, শালগম চাষ করতে কৃষক আব্দুল আউয়ালকে পরামর্শ দিয়েছিলাম। তিনি শালগম করে চাষ করে সফল। তার সফলতা দেখে অন্যান্য কৃষকরাও শালগম চাষে উৎসাহিত হয়েছেন। আশা করছি আগামী মৌসুমে শালগমের চাষ বাড়বে। তিনি আরও বলেন, প্রতি ১০০ গ্রাম শালগমে আছে ০.৫ গ্রাম আমিষ, ৬.২ গ্রাম শর্করা, ০.৯ গ্রাম আঁশ, ০.২ গ্রাম চর্বি, ২৯ কিলোক্যালরি শক্তি, ৩০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৪০ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ৪৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন। জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. তমিজ উদ্দিন খান বলেন, হবিগঞ্জে শালগম চাষ হারিয়ে যাচ্ছিল। আমরা কৃষকদেরকে উৎসাহিত করে এ সবজির চাষ বাড়ানোর চেষ্টা করেছি। জেলার নানা স্থানে কৃষকরা শালগম চাষ করে ভাল ফলন পেয়েছেন। বাজারে ক্রেতাদের কাছে শালগমের চাহিদা রয়েছে। দামও ভাল।