শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৬ অপরাহ্ন

ঢাকা মেডিক্যালে করোনা উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীর চাপ বাড়ছে

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২২

করোনা উপসর্গ নিয়ে রাজধানীর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হওয়ার চাপ বেড়েছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই করোনা শনাক্ত হয়ে এবং উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে উপসর্গ নিয়ে এখানে ভর্তি হচ্ছেন প্রতিদিন ১৫-১৬ জন করে রোগী। এর মধ্যে ভ্যাকসিন নিয়েছেন এমন রোগীও রয়েছেন। চিকিৎসকরা বলছেন, দুই ডোজ টিকা নেওয়ার পরও স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণেই আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। করোনা থেকে বাঁচতে প্রতিরোধ ব্যবস্থা শুধু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, মাস্ক ব্যবহার করা।
করোনা রোগী এবং উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায়, আবারও পর্যায়ক্রমে করোনা বেডের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা ইউনিটে। মোটামুটি সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রস্তুতির অংশ হিসাবে পর্যায়ক্রমে কয়েকটি ওয়ার্ড ফাঁকা করা হয়েছে। এ ধরনের রোগীর প্রকোপ বড়ে গেলে পর্যায়ক্রমে আগের মতো করা হবে।
চিকিৎসকরা বলছেন, আমাদের এ হাসপাতালে (ঢামেক) আইসিইউ সাপোর্ট থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে। ডেল্টা আর ওমিক্রন; যাই হোক আমাদের অবশ্যই সবার ভ্যাকসিন নিতে হবে আর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। মাস্ক ছাড়া বাইরে যাওয়া যাবে না। করোনা প্রতিরোধের বিকল্প নেই। আচরণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে নিজেকে, পরিবারকে এবং দেশকে করোনামুক্ত রাখতে হবে।
ঢামেক হাসপাতালের এক পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের মে মাস থেকে গেল ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত উপসর্গ ও করোনা নিয়ে ৩২ হাজার ৭৮১ জন ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ ছিলেন ১৩ হাজার ৯২৩ জন। আর করোনায় সংক্রমিত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৫৮০ জন। মারা যাওয়াদের মধ্যে ৯৭২ জন পুরুষ ও ৬০৮ জন নারী।
নতুন করে দেশে করোনার প্রকোপ বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় (৬ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত) নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ১৪০ জনের। তার আগের ২৪ ঘণ্টায় ৮৯২ জন শনাক্ত হওয়ার কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদফতর। অর্থাৎ গত ২৪ ঘণ্টায় এক লাফে ২৪৮ জন রোগী বেশি শনাক্ত হয়েছেন। দেশে এর আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর একদিনে ১ হাজার ১৭৮ জন করোনা শনাক্ত হয়েছিল। এর মাঝে আর একদিনে এত বেশি সংখ্যায় কোভিড আক্রান্ত হয়নি।
স্বাস্থ্যবিধি না মানাতেই এই উচ্চহারে করোনায় সংক্রমণ বাড়ছে বলে মনে করেন ঢামেক হাসপাতাল পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক। তিনি বলেন, বর্তমানে মানুষ মনে করেন, ভ্যাকসিন নিয়েছেন আর করোনা হবে না, তা ঠিক না। শুধু ভ্যাকসিন নিলেই হবে না, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ভ্যাকসিনও নিতে হবে এবং মাস্কও পরতে হবে। ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।
ঢামেক হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক মো. আশরাফুল আলম বলেন, করোনার শুরু থেকে এ পর্যন্ত ঢামেক হাসপাতাল ৩শ’ শয্যা থেকে শুরু করে পর্যায়ক্রমে মেডিসিন বিভাগসহ বেশ কয়েকটি বিভাগের কার্যক্রম কমিয়ে দিয়ে হাসপাতালের দুটি ভবন, শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনিস্টিউটের কিছু অংশ, আইসিইউ, এইচডিইউসহ প্রায় ৯শ’ শয্যা করোনা ডেডিকেটেড করা হয়। যেখানে সর্বোচ্চ ভর্তি ছিল প্রায় সাড়ে ৮’শ জন রোগী। এক সময় এখানে দৈনিক একশত’র বেশি করোনা রোগী ভর্তি হতো, একদিনে সর্বোচ্চ ভর্তি হয়েছিল ১১৯ জন।
তিনি বলেন, গেল কয়েক মাসে করোনা রোগী কমে গিয়েছিল। তবে আবহাওয়া পরিবর্তনে অন্যান্য সাধারণ রোগীর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল। আর তাছাড়াও মেডিক্যাল কলেজের একাডেমিক কারণে করোনা উপসর্গ নিয়ে আসা ও করোনা রোগীদের জন্য কয়েকটি ওয়ার্ড রেখে বাকিগুলোতে আবার ধীরে ধীরে মেডিসিন বিভাগ থেকে শুরু করে বন্ধ রাখা বিভাগগুলো সীমিত আকারে পুনরায় চালু করা হয়েছিল।-বাংলাট্রিবিউন




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com