রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার তেমন উন্নতি না হলেও লিভারে রক্তক্ষরণ আপাতত বন্ধ রয়েছে। গত সোমবার বেগম জিয়ার একজন চিকিৎসক এ তথ্য জানান। ওই চিকিৎসক জানান, রক্তক্ষরণজনিত গুরুতর সমস্যাসহ গত ১৩ নভেম্বর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল বেগম জিয়াকে। হাসপাতালে নেয়ার পর তার লিভার সিরোসিস শনাক্ত হয়। এই রক্তক্ষরণ কোনোক্রমেই পুরোপুরি বন্ধ করা যাচ্ছিল না। বাইরে থেকে রক্ত ও অন্যান্য খনিজ দিয়ে তার চিকিৎসা চলছিল। পরে চিকিৎসকদের সিদ্ধান্তে বিদেশ থেকে ক্যাপসুল আনিয়ে তার ক্যাপসুল এন্ডোস্কপি করা হয়। এতে রক্তক্ষরণের উৎস হিসেবে তার ক্ষুদ্রান্তের নিচে একটি ক্ষত শনাক্ত করা সম্ভব হয়। চিকিৎসকদের চেষ্টায় দীর্ঘ সময় ধরে এন্ডোস্কপির মাধ্যমে ব্যান্ড লাইগেশন করে সে ক্ষতটি বন্ধ করা হয়। এতে করে আপাতত বেগম জিয়ার রক্তক্ষরণ বন্ধ রয়েছে। তবে এতেই তিনি ঝুঁকিমুক্ত হননি। এ দিকে গত রোববার রাতে খালেদা জিয়াকে সিসিইউ (ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট) থেকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে।
রাত সাড়ে ৮টায় বিএনপি চেয়ারপারসনকে তার মেডিক্যালে বোর্ডের সুপারিশে কেবিনে নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানান অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন। যিনি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিক্যাল বোর্ডের অন্যতম সদস্য। তিনি বলেন, মেডিক্যাল বোর্ডের সুপারিশে ম্যাডামকে রাত সাড়ে ৮টার দিকে সিসিইউ থেকে কেবিনে নিয়ে আসা হয়েছে। কেবিনে সিসিই্উর সব সুবিধাদি রাখা হয়েছে এবং সিসিইউর নার্সরা কেবিনে তার সেবায় নিয়োজিত থাকছেন।
গত ১৩ নভেম্বর এভারকেয়ার হাসপাতালে কেবিনে ভর্তির পরদিনই লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার অবস্থার অবনতি হলে দ্রুতই তাকে সিসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় ৫৭ দিন পর তাকে আবার কেবিনে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ডে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এই দুরাগ্যো ব্যাধির চিকিৎসা কাজে নিয়োজিত আছেন। তারা ইতোমধ্যে তাকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণে সুপারিশ করেছে। সেই অনুযায়ী পরিবারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে পঞ্চম দফা আবেদনও করেন। কিন্তু সরকার সেই আবেদন নাকচ করে দিয়েছে।