মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

২০৯টি বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণী টিকে আছে ঢাকায়

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০২২

সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, ইট কাঠের কংক্রিট নগরী ঢাকাতে এখনো ২০৯ প্রজাতির বন্যপ্রাণী টিকে আছে, যাদের অনেকগুলোই এখন বিরল কিংবা বিপন্ন প্রায়। গত কয়েক দশকে ঢাকায় পাল্লা দিয়ে বেড়ে যাওয়া আকাশচুম্বী ভবন, আর শহরের অলিগলি কিংবা পাশ ঘেঁষে থাকা গাছপালা, ঝোপঝাড়, নদী-নালা, খাল এবং উন্মুক্ত জমি কমে যাওয়ার পরও শহরে হঠাৎই ডেকে উঠতে পারে অচেনা ভীমরাজ পাখি। বুড়িগঙ্গা বা তুরাগ নদীতে এখনো হঠাৎই ভেসে উঠতে পারে দেশি শুশুক। অথবা শহরের ভেতরকারই কোন জলাশয় থেকে লাফিয়ে ডাঙায় উঠতে পারে ঝিঁঝিঁ ব্যাঙয়ের মত অচিন প্রাণী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মোঃ ফিরোজ জামানের নেতৃত্বে চালানো এক গবেষণায় পাওয়া গেছে এসব তথ্য। অধ্যাপক জামান বিবিসিকে বলেছেন, যেসব প্রাণী এখনও টিকে আছে, তাদের সংরক্ষণের ব্যবস্থা না নিলে অচিরেই হারিয়ে যাবে তারাও—এমন আশংকাও রয়েছে।
যেসব বন্যপ্রাণী পাওয়া গেল গবেষণায়: অধ্যাপক মোঃ ফিরোজ জামান জানিয়েছেন, ২০১৫ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্যপ্রাণী রিসার্চ ল্যাবরেটরির অধীনে শুরু হয়েছে গবেষণার কাজ। এটি চলবে ২০৩০ সাল পর্যন্ত। বর্তমান গবেষণাটি সম্প্রতি ইতালির বায়োডাইভার্সিটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
২০১৫ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত তিন বছরে শহরের বন্যপ্রাণী চিহ্নিত করা এবং জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতে জানা যাচ্ছে ঢাকায় মোট ২০৯ জাতের বন্যপ্রাণীর বাস। ঢাকার রমনা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান, দিয়াবাড়ী, উত্তরা, খিলক্ষেত, রামপুরার আফতাবনগর, বুড়িগঙ্গা এবং তুরাগ নদীসহ মোট ২২টি এলাকা এবং এর আশপাশের জলাশয়, বনভূমিতে এ গবেষণাটি চালানো হয়েছে।
এতে দেখা যাচ্ছে, ২০৯ প্রজাতির বন্যপ্রাণীর মধ্যে বসন্ত বাউরি, ফিঙে ও ছোট ভীমরাজ পাখিসহ মোট ১৬২ প্রজাতির পাখি রয়েছে ঢাকা শহরে। সবুজ, গেছো ব্যাঙ, কটকটি ব্যাঙ, ঝিঁঝিঁ ব্যাঙ ও ঘড়িয়ালসহ উভচর প্রাণী আছে ১২ প্রজাতির। তক্ষক, গুইসাপ, খৈয়া গোখরা, পদ্মগোখরার মত সরীসৃপ আছে ১৯ প্রজাতির। এছাড়া বানর, শিয়াল, বনবিড়াল, শুশুক বা ডলফিনসহ ১৬ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী চিহ্নিত করেছে গবেষণা দল। সুন্ধি কাছিম, তরাকরি কাইট্টা প্রজাতির কচ্ছপসহ কয়েক প্রজাতির কচ্ছপ আছে।
কিন্তু প্রজননের পরিবেশের অভাবে বাড়ছে না বন্যপ্রাণীর সংখ্যা। গবেষণায় দেখা গেছে, লালবুক টিয়া, চন্দনা ও হীরামনসহ মোট টিয়া পাখি আছে চার প্রজাতির। কিন্তু টিয়া পাখির জন্য যে ধরণের উঁচু গাছের প্রয়োজন হয়, তা আছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এবং রমনা পার্কের মত ঢাকার পুরনো কয়েকটি পার্ক ও উদ্যানে। আবার বিরল প্রজাতির ভুবনচিল দেখা যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর ও এর আশেপাশের এলাকায় উঁচু শিরীষ গাছে।
যেভাবে নিরূপণ করা হয়: ঢাকা শহরের বন্যপ্রাণী গণনার ক্ষেত্রে মূলত একেকটি ট্রেইল ধরে সেটিকে বিভিন্ন অঞ্চল ভাগ করা হয়। এরপর ভাগ করা অংশে থাকা পশু এবং পাখি আলাদা করে গণনা করা হয়েছে। সবশেষে সেটিকে প্রতি বর্গকিলোমিটার হিসাব করে একেকটি প্রজাতির ঘনত্ব হিসাব করা হয়েছে। অধ্যাপক জামান বলেছেন, গবেষণায় দেখা গেছে পাখির মধ্যে এখনো বিপন্ন প্রজাতি তেমন নেই। কিন্তু স্তন্যপায়ী প্রাণীর ক্ষেত্রে বিপন্ন প্রজাতি আছে কয়েকটি। এর মধ্যে তুরাগ ও বুড়িগঙ্গায় থাকা দেশি জাতের শুশুক বা ডলফিন এবং বানর আছে সবচেয়ে ঝুঁকিতে। অধ্যাপক জামান বলেছেন, “প্রতিকূল পরিবেশে ঢাকায় বাস করা এসব প্রাণীর বড় অংশটি এখন অস্তিত্বের সংকটে রয়েছে। কিন্তু ঢাকার পরিবেশ থেকে সবুজ যেভাবে কমছে তাতে সেদিন খুব দূরে নয় যখন এসব প্রাণী হারিয়ে যাবে।”




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com