সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার সড়াতৈল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরনো ভবনটি এখন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এই ভবনে দু’টি শ্রেণি কক্ষ রয়েছে। এই জরাজীর্ণ শ্রেণিকক্ষে ঝুঁকি নিয়ে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। বর্ষাকালে ঘরের টিনের চাল দিয়ে পানি পড়ে। দেয়ালের পলেস্তারা খুলে পড়ছে প্রতিদিন। এ অবস্থাতেই শিক্ষার্থীদেরকে এই ভবনে বসে ক্লাস করতে হচ্ছে। বর্তমানে স্কুলটিতে প্রায় ২৫০ জন শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক শাহাদৎ হোসেন মল্লিক জানান, অতি প্রাচীন এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্বাধীনতার পর স্থানীয়ভাবে বিদ্যানুরাগী ব্যক্তিদের সহযোগিতায় একটি টিনশেড ভবন নির্মান করা হয়। এই ভবনেই কম ছাত্র নিয়ে ক্লাস পরিচালনা করা হতো। ২০০৪-২০০৫ অর্থ বছরে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে এখনে একটি দুই কক্ষের একতলা ভবন নির্মান করা হয়েছে। এই ভবনে এখন প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ক্লাস নেওয়া হয়। ছাত্র সংখ্যা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে পুরানো ধ্বংসপ্রায় টিনশেড ভবনে নিরুপায় হয়ে অন্যান্য ক্লাস নিতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এই ভবনটি সংস্কার অভাবে ব্যবহারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মরিচা পরে ভবনের টিনের চাল অনেক জায়গায় নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে বর্ষা বৃষ্টির দিনে এই ভাঙ্গা চাল দিয়ে শ্রেণি কক্ষে পানি পড়ে। পুরানো দেয়ালের পলেস্তারা প্রতিনিয়তই খুলে পড়ছে। নষ্ট হয়ে গেছে মেঝের সলিং। এ অবস্থায় চরম ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীরা এখন এই পুরনো ভবনে ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা প্রতিদিনই তাদের সন্তানদের সমস্যার কথা বলে নতুন ভবন তৈরির দাবি জানাচ্ছেন। প্রধান শিক্ষক আরো জানান, স্কুলের ছেলে মেয়েদের টয়লেট বহুদিন আগে ভেঙ্গে গেছে। আপাততঃ টিন দিয়ে অস্থায়ীভাবে একটি টয়লেট তৈরি করে কোনভাবে কাজ চালানো হচ্ছে। অন্যান্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরকারীভাবে ওয়াশব্লক তৈরি করা হলেও আজ পর্যন্ত সড়াতৈল স্কুলে কোন ওয়াশব্লক নিমার্ণ করা হয়নি। বিগত কয়েক বছরে স্কুল থেকে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকতার্র মাধ্যমে তাদের ধ্বংসপ্রায় ভবনটি অপসারন করে সেখানে নতুন শ্রেণিভবন নিমার্ণের জন্য শিক্ষা অধিদপ্তরে একাধিকবার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এখানে নতুন ভবন নিমার্ণের কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে চরম সমস্যায় পড়েছেন শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকতার্ শাহনেওয়াজ পারভীনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি পুরনো ভবনে শিক্ষার্থীদের ক্লাস পরিচালনায় দুভোর্গের কথা স্বীকার করে জানান, উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে বেশ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন শ্রেণি ভবন নিমার্ণের জন্য শিক্ষা অধিদপ্তরে তালিকা পাঠানো হয়েছে। ওই তালিকায় সড়াতৈল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম রয়েছে। খুব শিগগিরই এই বিদ্যালয়ে নতুন শ্রেণি ভবন নিমার্ণ সম্ভব হলে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই শিক্ষা কর্মকর্তা।