মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

শব্দখেলায় মেতেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম

আইটি ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০২২

আপনি যদি গত দুই সপ্তাহে কোনও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে থাকেন তবে আপনি সম্ভবত সবুজ, হলুদ এবং কালো স্কোয়ারের একটি গ্রিড দেখেছেন। এটি ওয়ের্ডল নামক একটি অনলাইন গেম যা ব্যবহারকারীদের প্রতিদিন একটি নতুন শব্দ ধাঁধা দেয়। ওয়ার্ডল এখন ইন্টারনেটের নতুন সেনসেশন। পুরো ইন্টারনেট এখন এই শব্দ খোঁজার খেলায় মেতে উঠেছে। এই খেলায় একটি বিশেষত্ব রয়েছে। আপনি মোট ছয়বার অনুমান করতে পারবেন। তবে প্রোগ্রাম আপনাকে সাহায্য করবে। প্রতিবারই আপনার অনুমিত শব্দটি লেখার পর প্রোগ্রামটি আপনাকে আপনার ব্যবহৃত অক্ষর সম্পর্কে নিশানা দেবে এভাবে * যদি অক্ষরটি কাঙ্ক্ষিত শব্দে না থাকে তাহলে ওই টাইলটি ধূসর বর্ণের হবে;
* যদি অক্ষরটি কাঙ্ক্ষিত শব্দে থাকে; কিন্তু যে স্থানে লিখেছেন সেখানে নয়, তাহলে টাইলটির রং হবে হলুদ * যদি অক্ষরটি কাঙ্ক্ষিত শব্দের একই স্থানে থাকে, তাহলে সেটি সবুজ হবে।
আর এভাবে আপনি যদি শব্দটি খুঁজে পান, তাহলে ওই দিনের মতো আপনার খেলা শেষ। আপনি ইচ্ছা করলে আপনার খেলার ফলাফল অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারবেন যেকোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যেহেতু সারা বিশ্বের সবাই একই শব্দ খোঁজে, তাই শেয়ার করার সময় কেবল তিন রঙের গ্রিডটিই শেয়ার হবে, শব্দগুলো নয়! ধারণা করা হচ্ছে, বর্তমানে প্রায় ২০ লাখ মানুষ প্রতিদিন ইন্টারনেটে ওর্ডলে মেতে উঠছেন।
নিউইয়র্কের ব্রুকলিনের কম্পিউটার প্রোগ্রামার জোশ ওয়ের্ডল এই খেলাটি তৈরি করেছেন। জানুয়ারি মাসের ৩ তারিখে নিউইয়র্ক টাইমসের টেকনোলজি সেকশনে ওয়ের্ডল নিয়ে যে প্রতিবেদন, সেখানে সেটির শিরোনাম দেওয়া হয়Íওয়ের্ডল ইজ অ্যা লাভ স্টোরি। কারণ, জোশ ওয়ের্ডল তার সঙ্গী পলক সাহাকে খুশি করার জন্য এই খেলাটি তৈরি করেন। সেখান থেকে জানা যাচ্ছে, ওয়ের্ডল ২০১৩ সালে প্রথম শব্দ অনুমানের এমন একটি খেলা তৈরি করেন। কিন্তু তার সঙ্গী অভিভূত না হওয়ায় তিনি প্রজেক্টটি বাতিল করেন। ২০২০ সালে তারা দুজনই নিউইয়র্ক টাইমসের বানানের খেলা ‘স্পেলিং বী’ ও প্রতিদিনের শব্দভেদ সমাধানে বেশ আগ্রহী হয়ে ওঠেন। ‘কাজে আমি এমন একটা গেম বানাতে চেয়েছি যা সে উপভোগ করবে’ নিউইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছেন ওয়ের্ডল।
তবে ইন্টারনেটের অন্য ১০টি জনপ্রিয় গেমের তুলনায় এটি একেবারেই ভিন্ন। বিশ্লেষকদের মতে, এই গেমের তুমুল জনপ্রিয়তার জন্য এ কারণগুলোই মুখ্য।
১. এই গেমটি খেলার জন্য আপনাকে মোবাইল ফোনে কোনো অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে না। নিজের নাম, ঠিকানা ও বৃত্তান্ত দিয়ে কোনো অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে না। শুধু একটি ডিভাইস, যা দিয়ে ওয়েব ব্রাউজ করা যায়, সেটি দিয়েই আপনি খেলতে পারবেন।
২. এই খেলাটি আপনাকে কোনো একটি চক্করে ফেলে না। এর কোনো পরের রাউন্ড নেই। একের পর এক নতুন শব্দ বের করতে হয় না। এটি আপনাকে কোনো নোটিফিকেশন পাঠায় না। ২৪ ঘণ্টায় মাত্র একবার খেলা যায়।
৩. এই খেলায় জিতে আপনি কোনো পয়েন্ট অর্জন করতে পারবেন না। সেই ‘পয়েন্ট’ জমিয়ে আপনি কোনো কেনাকাটাও করতে পারবেন না।
৪. আর সব থেকে আকর্ষণী হলো ওয়ের্ডলের ওয়েবসাইটে কোনো ধরনের বিজ্ঞাপন নেই। সাধারণত যেকোনো ওয়েবসাইটে গেলেই দেখা যায় এক গাদা বিজ্ঞাপন।
ওয়ের্ডলের মতো অনেক শব্দ খোঁজার খেলা ইন্টারনেটে আছে। কিন্তু যেহেতু ওয়ের্ডল গেমটি নিজেদের জন্য বানিয়েছেন, তাই এতে কোনো ‘গ্রোথ হ্যাকিং ফিচার’ রাখা হয়নি। খেলোয়াড়কে পরদিন ডেকে আনার কোনো চেষ্টা এখানে নেই। ওর্ডলের ব্যবহারকারীদের সঙ্গে একটি গভীর সম্পর্ক স্থাপনের কোনো চেষ্টাও ওয়ের্ডলের নেই। তার মতে, এটি এমন কিছু যা আপনার মিনিট তিনেক সময় নিয়ে আপনাকে ছেড়ে দিচ্ছে।
তবে এর আগে ডিসেম্বর পর্যন্ত ওয়ের্ডলে ফলাফল শেয়ার করার কোনো সিস্টেম ছিল না। এ সময় নিউজিল্যান্ডের এক নারী টুইটারে প্রথম ইমোজি ব্যবহার করে রেজাল্ট শেয়ার করেন। এটা দেখার পর ওয়ের্ডল সেটাই গেমে যুক্ত করে দিয়েছেন। তারপর থেকে এটি মহামারীর মত ছড়িয়ে পরতে শুরু করে।
ওয়ের্ডলে নিয়মিত জেতার কৌশল: ওয়ের্ডল শব্দ খোঁজার খেলাতে সফল হওয়ার বেশ কিছু কৌশল রয়েছে। দাবা খেলার মতো প্রথম শব্দ নির্বাচনে কুশলী হতে পারলে দ্রুত সমাধানে পৌঁছানো যায়। ইংরেজি ভাষাতে মাত্র পাঁচটি স্বরবর্ণ (ধ, ব, র, ড়, ঁ) আছে। কাজেই আপনি যদি শুরুতে স্বরবর্ণগুলো বের করে ফেলতে পারেন, তাহলে কাজটা এগিয়ে যায়। এ জন্য অনেকেই চারটি স্বরবর্ণওয়ালা শব্দ, যেমন অটউওঙ, অউওঊট কিংবা ছটঊজণ। তারপর সেখান থেকে এগোনো সহজ। ঢাকার প্রকৌশলী আহমেদ শাহরিয়ার তিনটি শব্দ খুঁজে নিয়েছেন, যেগুলো ১৫টি ভিন্ন ভিন্ন অক্ষর নিয়ে গঠিত। সেখান থেকে তিনি এগোতে পারেন। কেউ কেউ আগের দিনের সমাধান দিয়ে শুরু করেন। স্বরবর্ণ বোঝার পর খেয়াল করতে হয় ব্যঞ্জনবর্ণের। ইংরেজিতে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত ব্যঞ্জনবর্ণ হলো ঞ, ঘ, ঝ, জ, ঐ ও খ। এসব বর্ণ দিয়ে তৈরি শব্দ ব্যবহার করেও আপনি মোক্ষ লাভ করতে পারেন।
কেন খেলে? এটি কত জনপ্রিয় হয়েছে, সেটির একটি নমুনা হলো গুগল! ইন্টারনেটে তথ্য খোঁজার এই ওয়েবসাইটে ‘ড়িৎফষব’ খুঁজলে গুগল মজার একটি কাজ করে। গুগলে ড়িৎফষব লিখে আপনি সেটা দেখে নিতে পারেন। বিশ্বের প্রায় সব জনপ্রিয় গণমাধ্যম ওয়ের্ডল নিয়ে কোনো না কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বিখ্যাত কলাম লেখক ও ভাষা বিশেষজ্ঞরা এই খেলায় জেতার কৌশল নিয়ে নিবন্ধ লিখছেন। এই খেলার অনুকরণে এর মধ্যে প্রায় ৫০টির মতো খেলা তৈরি হয়েছে। এর কোনোটি মৌলিক সংখ্যা খুঁজে, কোনোটি জোড়া শব্দ খুঁজতে বলে। বেশির ভাগ ভাষার জন্য সেই ভাষার ওয়ের্ডল ভার্সন তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্গে ইন্টারনেটে ভেসে বেড়াচ্ছে কীভাবে আপনি এই খেলার ফলাফল আগেই জেনে নিতে পারেন তার উপায়। তবে, নিবিষ্ট মনে যারা খেলছেন, তাদের বেশির ভাগই আগেভাগে উত্তর জেনে নিতে আগ্রহী নন। তাছাড়া, ওয়ের্ডলের ওয়েবসাইটে রাত ১২টা ১ মিনিটে প্রতিদিন নতুন শব্দ পাওয়া যায়। এ জন্য অনেকে রাত ১২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। তারপর সমাধান করে ঘুমাতে যান। এই দলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক যেমন রয়েছেন, তেমনি রয়েছেন অনেক ফ্রিল্যান্সার। ফ্রিল্যান্সাররা অনেকেরই রাত জেগে কাজ করেন। তারপর ঘুমাতে যাওয়ার আগে এটি খেলেন। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর নিজের পর্বটি শেষ করেন, এমন লোকের সংখ্যাও কিন্তু কম নয়।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com