নওগাঁর রাণীনগর থেকে আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ পর্যন্ত দীর্ঘ ২২ কিলোমিটার রাস্তা কাদা-পানিতে যেন একাকার হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে হঠাৎ করেই বৃষ্টিপাতে পানি জমে পুরো ২২ কিলোমিটার রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে রাস্তা দিয়ে যান চলাচলে অসহনীয় দূর্ভোগে পরেছে এলাকার লাখ লাখ মানুষ। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ পর্যন্ত মোট ২২ কিলোমিটার রাস্তায় যানবাহন চলাচলে চাপ বাড়লে এবং এলাকার জনমানুষের জীবন-মান উন্নয়নে রাজধানী ঢাকার সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে এলজিইডি থেকে সড়ক ও জনপথ বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। রাস্তাটি রাণীনগর থেকে আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ হয়ে নাটোরের সিংড়ার ঢাকা-রাজশাহী মহা সড়কের সাথে মিলিত হয়েছে। ২৬টি কালভার্ট ও ৪টি ব্রীজ পূর্ণ নির্মান এবং রাস্তাটি টেকসই,মজবুত ও প্রসস্থ্য করে পাকা করনের লক্ষে ২০১৮ সালে সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে টেন্ডার দেয়া হয়। এর পর রাস্তার সমস্ত কার্পেটিং তুলে কোন রকমে রোলার দিয়ে ফেলে রাখে এবং বেশ কিছু কালভার্ট ও ব্রীজ ভেঙ্গে নির্মান করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। গত ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও পরে সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদার অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন করেন। এর পর অতিরিক্ত সময়েও কাজ শেষ করতে না পারায় গত বছরের মে মাসের প্রথম সপ্তাহে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ঠিকাদারের কার্যাদেশ বাতিল করে নতুন করে টেন্ডার দেয়। এতে আগের ঠিকাদার নতুন করে দেয়া টেন্ডারের উপর নিষেধাঙ্গা চেয়ে মামলা দায়ের করেন। অবশ্য ওই বছরের ২৯ নভেম্বর মামলাটি নিষ্পত্তি হয়। এর পর নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ চেয়ে সংশ্লিষ্ঠ মন্ত্রনালয়ে আবেদন করে নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কিন্তু আবেদনের দুই মাস অতিবাহিত হলেও এখনো নতুন ঠিকাদার নিয়োগের অনুমতি মেলেনি। এলাকা বাসি জানান, দীর্ঘ দিন কাজ বন্ধ থাকায় রাস্তার মধ্যে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তার কোথাও কোথাও টেউ টিনের মতো উচুঁ-নিচু হওয়ায় যানবাহন চলা চল করছে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে। হঠাৎ করেই বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত থেমে থেমে বৃষ্টি হলে পুরো রাস্তায় বৃষ্টির পানি জমে কাদা-পানিতে একাকার হয়ে পরেছে। শনিবার সকাল থেকেই রাস্তায় যান বাহন চলাচল করছে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে। ইতি মধ্যে বেশ কয়েটি যাত্রীবাহী গাড়ী উল্টে পরে দূর্ঘটনার কবলে পরেছে। পথযাত্রী হাবিবুর রহমান বলেন,রাণীনগর থেকে আবাদপুকুর আসতে পড়নের জামা-কাপড় কাদা-পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া রাস্তায় বেশ কয়েকটি অটোরিক্সা উল্টে পরে আছে। যাত্রী মিজানুর রহমান,সাইদ হোসেনসহ আরো কয়েকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,আমরা কি ভিন্ন গ্রহের বাসিন্দা যে এতো দীর্ঘ বছর ধরে দূর্ভোগ পোহাতে হবে? কেউ কি নেই আমাদের এই র্দর্ভোগ লাঘব করবে? দেশে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায় হচ্ছে অথচ আমাদের এই রাস্তার কাজ চার বছর ধরে বন্ধ হয়ে আছে। তাই রাস্তার কাজ শেষ করতে প্রধান মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসি। নওগাঁ জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান বলেন,নতুন ঠিকাদার নিয়োগের অনুমতি চেয়ে সংশ্লিষ্ঠ মন্ত্রনালয়ে আবেদন করা হয়েছে। অনুমতি পেলেই দ্রুত রাস্তার কাজ শুরু করা হবে। আর আপাতত: যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে রাস্তায় জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের জন্য এখনই ব্যবস্থা নেয়া হবে।