সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ
নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতির অনুমোদিত সার্চ কমিটির সদস্যদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। দলীয়ভাবে সদস্যদের নিয়ে এ ধরনের কোনও অবস্থান বিএনপির পক্ষ থেকে এটাই প্রথম। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এ কমিটির সদস্যদের নিয়ে মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করলেও সদস্যদের নাম উল্লেখ করে বিস্তারিত কথা বলেছেন রিজভী। গতকাল রবিবার ৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর নয়া পল্টনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী দলের অবস্থা তুলে ধরেন।
লিখিত বক্তব্যে রিজভী বলেন, ‘বর্তমান সার্চ কমিটির প্রধান আগের দুই সার্চ কমিটিরও সদস্য ছিলেন। সার্চ কমিটির প্রধান ওবায়দুল হাসান ও তার পরিবার পরীক্ষিত আওয়ামী লীগার। তিনিও আওয়ামী লীগের এমপি প্রার্থী ছিলেন। তার পরিচয় তিনি বাকশাল ছাত্রলীগের বড় নেতা ছিলেন। এদের সুপারিশেই নিয়োগ পেয়েছিলেন রকিব ও হুদা কমিশন; যারা নজীরবিহীন ভোট ডাকাতির নির্বাচন জাতিকে উপহার দিয়েছিলেন।’ ‘ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আরেক বিশেষজ্ঞ, এই সার্চ কমিটির সদস্য হয়েছেন সাবেক বহু বিতর্কিত নির্বাচন কমিশনার মো. ছহুল হোসাইন। ২০১৮ সালে সিলেট-১ (সিলেট সদর ও সিটি কর্পোরেশন) আসন থেকে নৌকার প্রার্থী হতে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন’, বলে উল্লেখ করেন রিজভী আরেক সদস্য কুদ্দুস জামান প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘রাজবাড়ী শহরের ভবানীপুর এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম হামিজ উদ্দিন সেখের পুত্র কুদ্দুস জামান। এই কুদ্দুস জামান সার্চ কমিটির সদস্য। তার ভাই স্থানীয় আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা।’ ‘আরেক সদস্য অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক জন্মান্ধ আওয়ামী লীগার হিসাবে পরিচিত’ দাবি করে রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের একান্ত অনুরাগী ও দৃঢ় সমর্থক প্রয়াত লেখক সৈয়দ শামসুল হকের স্ত্রী তিনি। তিনি স্বাধীনতাযুদ্ধের পুরোটা সময় পাকিস্তান বিমান বাহিনীর মেডিক্যাল সেন্টারে চাকরি করেছেন।’ সদস্যদের নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে রিজভী যোগ করেন, ‘সুতরাং এই সার্চ কমিটি অথবা নির্বাচন কমিশন নিয়ে দেশের জনগণ বা বিএনপির কোনও আগ্রহ নেই।’ তিনি বলেন, ‘জনগণ বিশ্বাস করে-নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। আমাদের দাবি নির্দলীয় সরকার গঠনের পর সেই সরকার নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। সেই নির্বাচন কমিশনের অধীনেই কেবল সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। জনগণ ঘৃণাভরে এই আওয়ামী সার্চ কমিটির নামে এই খাস কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।’ সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, ‘বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ছয় সদস্য বিশিষ্ট একটি সার্চ কমিটি করেছেন। যার ভিত্তি হচ্ছে স¤প্রতি সংসদে পাস হওয়া তথাকথিত ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনার নিয়োগ আইন ২০২২’। এই আইন জনগণকে ঠকানোর কৌশল মাত্র।’ তার দাবি, ‘এই অনুসন্ধান কমিটির দ্বারা মনোনীত নির্বাচন কমিশন হবে একান্তভাবে সরকারের আস্থাভাজন। এগুলো দিয়ে জনগণের সঙ্গে নাটক প্রহসন প্রতারনা রঙ তামাশা চলছে। নির্বাচন কমিশন নয়, জনগণের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার।’