জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘সামনে আন্দোলনের ডাক আসছে। যার যার অবস্থান থেকে যুগপৎভাবে একই ইস্যুতে আমরা আন্দোলন করবো। সকলে একত্রিত হয়ে এই সরকারকে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বিদায় নিতে বাধ্য করবো ইনশাআল্লাহ।’ গতকাল শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তা না হলে আগে স্বৈরাচার সরকার যে পথে বিদায় হয়েছে সেই রাজপথই আমরা বেছে নিতে বাধ্য হব।’
তিনি বলেন, ‘বিদেশে যে দূতাবাসগুলো রয়েছে, তাদের দেশের ও জনগণের পক্ষে কাজ করার কথা। কিন্তু তা না করে তারা সরকার ও আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করছে। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। যারা বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তা রয়েছেন, জনগণের টাকায় বেতন নেন, তারাও জনগণের কথা না বলে আওয়ামী লীগের কথা বলছেন।’ বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘এই সরকারের অধীনে ভবিষ্যতে আর কোনো নির্বাচন হতে পারে না। বিশ দলীয় জোট আগেই জানিয়েছে, শেখ হাসিনার অধীনে আমরা কোনো নির্বাচনে যাব না। কেননা শেখ হাসিনার অধীনে বিগত দুটি নির্বাচন প্রমাণিত হয়েছে যে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না, জনগণ ভোট দিতে পারে না, সেই নির্বাচনের কোনো অর্থ হয় না।’ মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘কিছুদিন আগে সংলাপের নামে একটি নাটক হলো। আমরা আগেও বলছি এটা একটা নাটক ছিল। কেননা সরকার দেশের জনগণকে আবার ধোঁকা দেয়ার জন্য একটি আইন করেছে। এখন নির্বাচন কমিশন গঠন করার জন্য একটি সার্চ কমিটি গঠন করেছে। প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করে সার্চ কমিটি গঠন করা হবে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট সেটা করেন নাই, এটা করা হয়েছে আইনের মাধ্যমে। যাদেরকে দিয়ে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে সকলেই আওয়ামী লীগের সমর্থক। তারা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন। তাদেরকে দিয়ে আজ সার্চ কমিটি।’ তিনি বলেন, ‘এই সরকার থাকলে সার্চ কমিটি তাদের হবে। এই সার্চ কমিটিকে শেখ হাসিনা বা সরকার যাদের নাম দেবে তারাই নির্বাচন কমিশন হবে। এটাতে অংশগ্রহণ করা বা এটা নিয়ে মাথা ঘামানো আমরা মনে করি অর্থহীন। এটা হচ্ছে ক্ষমতায় টিকে থাকার সরকারের আরেকটি নাটক। এটা সরকারের চুরির, ডাকাতির নির্বাচন করার জন্য।’ আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ঐক্যজোট চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুর রকিব, এনডিপির চেয়ারম্যান কারী আবু তাহের, ডিএলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, জাগপা সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, এলডিপির যুগ্ম-মহাসচিব এম এ বাসার প্রমুখ।