শেষ ২ ওভারে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের প্রয়োজন ২২ রান। কিন্তু ফরচুন বরিশালের দুই বোলার মেহেদী হাসান রানা ও মুজিব উর রহমানের দারুণ বোলিংয়ে শেষ পর্যন্ত পারলো না কুমিল্লা। তাদের ১০ রানে হারিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) এবারের আসরের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে সাকিব আল হাসানের বরিশাল। সোমবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের প্রথম কোয়ালিফায়ারে মুখোমুখি হয়েছিল বরিশাল-কুমিল্লা। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে উত্তেজনাপূর্ণ এক ম্যাচ মঞ্চায়িত হয়েছে। নির্ধারিত ২০ ওভারে বরিশালের ৮ উইকেটে করা ১৪৩ রানের জবাবে কুমিল্লা ৭ উইকেটে করতে পারে ১৩৩ রান। হারলেও অবশ্য কুমিল্লার ফাইনাল স্বপ্ন শেষ হয়ে যাচ্ছে না। বুধবার চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার দিয়ে সুযোগ থাকবে শিরোপা নির্ধারণী মঞ্চে ওঠার।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ১৪৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুটা ঠিক টি-টোয়েন্টিসুলভ করতে পারেনি কুমিল্লা। দুই ওপেনার লিটন দাস ও মাহমুদুল হাসান জয় মিলে ৬২ রান তুলেছেন ঠিকই, কিন্তু তাদের কেউই স্টাইকরোটেট করতে পারেননি। বিশেষ করে, জয় স্লো ব্যাটিং করেছেন। ৩০ বলে ২০ রান করা জয়ই মূলত দলের চাপ বাড়িয়েছেন। একে তো স্লো ব্যাটিং, তার ওপরে ৬ রানের মধ্য ৩ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে কুমিল্লা।
জয়ের বিদায়ের পর ইমরুল কায়েসও (৫) দ্রুত বিদায় নেন। এরপর ফিরে যান লিটনও। ৩৫ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৩০ রানের ইনিংস খেলেন এই ওপেনার। টপ অর্ডারের তিন ব্যাটারের বিদায়ের পর মঈন আলী ও ফাফ ডু প্লেসি মিলে দলকে ম্যাচে ফেরানোর চেষ্টা করেন। সেই চেষ্টা করতে গিয়েই মঈন তিন ছক্কায় ১৫ বলে ২২ রান করে ডোয়াইন ব্রাভোর বলে বোল্ড। ইংলিশ ব্যাটারের বিদায়ের পর ডু প্লেসিও আউট। ১৫ বলে ১ চার ও ১ ছক্কায় তিনি ২১ রানে যখন থামেন, তখনও জয় থেকে ২০ রান দূরে ছিল কুমিল্লা। বাকি থাকা ১০ বলে ২০ রান করতে পারেননি সুনিল নারিন-নাহিদুল-মাহিদুল। নারিন ১৬ বলে ১৭ রান করে আউট হতেই ম্যাচ চলে যায় বরিশালের পকেটে। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বরিশালের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন মেহেদী হাসান রানা ও শফিকুল ইসলাম। মেহেদী রানা ১৫ রান দিয়ে তুলে নেন ২ উইকেট। অন্যদিকে শফিকুল ১৬ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। এছাড়া মুজিব ৩৩ রানে নেন ২ উইকেট। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে জয় ও ডু প্লেসিকে ফেরানো মেহেদী রানা জিতেছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করেছিল বরিশাল। মুনিম শাহরিয়ার ও ক্রিস গেইল মিলে পাওয়ার প্লেতে তুলে ফেলেছিলেন ৫৮ রান। ১৯ বলে ২২ রান করে গেইল আউট হলে মাঠে নামেন নাজমুল হোসেন শান্ত। পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলা শান্তর সঙ্গে ২৬ রানের জুটি গড়েন মুনিম। তিনি আউট হতেই ছন্দপতন ঘটে বরিশালের ব্যাটিং লাইনআপে। মুনিম ৪৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে তানভীরের বলে এলবিডব্লিউর শিকার। ৩০ বলে ২ চার ও ৪ ছক্কায় নিজের ইনিংসটি সাজান এই ব্যাটার। মুনিমের বিদায়ের পর বাকি ব্যাটাররা দায়িত্ব নিতে পারেননি। অধিনায়ক সাকিব ১ রান করে রান আউটের শিকার। ব্রাভোর ২১ বলে ১৭ ও জিয়াউর রহমানের ১২ বলে ১৭ রানে ভর করে বরিশাল নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪৩ রান করে। কুমিল্লার শহিদুল ইসলাম ২৫ রানে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া মঈন আলী ২টি এবং নারিন ও তানভীর একটি করে উইকেট নেন।