সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেই দুর্নীতর পৃষ্ঠপোষকতা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আইনমন্ত্রী-উপদেষ্টার ফোনালাপের প্রসঙ্গ টেনে মঙ্গলবার বিকেলে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই অভিযোগ করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশে এখন দুর্নীতির এক মহোৎসব চলছে। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেই চলমান এই লুটপাট আর দুর্নীতিকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া হচ্ছে। মন্ত্রী, এমপি ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, ক্ষমতাসীন দলের মেয়র-চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে এমন কোনো ব্যক্তি নেই, যে দুর্নীতির সুযোগ নিচ্ছেন না। রাষ্ট্রীয় বাহিনীসমূহের কতিপয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ গোটা প্রশাসনকে অংশীদার করা হয়েছে দুর্নীতির এই চক্রে।’ ‘শুধু তাই নয়, সংবিধান ও রাষ্ট্রের অভিভাবক খোদ বিচার বিভাগকেও এখন দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে ফেলার অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। দুর্নীতিতে যুক্ত হয়ে সরকারি দলের লোকেরা এখন দিকবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে। নিজেদের অপকর্ম এখন এমন পর্যায় পড়েছে যে, শত চেষ্টা করেও আর তা তারা চেপে রাখতে পারছে না। কোনো না কোনো উপায়ে তা প্রকাশ্যে জনসমক্ষে চলে আসছে। ভেসে বেড়াচ্ছে ভার্চুয়াল জগতে। ফাঁস হয়ে যাচ্ছে নানান অপকর্মের কুৎসিত চিত্র। খসে পড়ছে মহা দুর্নীতিবাজদের মুখোশ,’ বলেন তিনি। সম্প্রতি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও প্রধানমন্ত্রীর বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের টেলিফোনালাপের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, মন্ত্রী ও উপদেষ্টার এই ফোনালাপ এই সরকারের দুর্নীতির একটি প্রকৃতচিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আজকে জাতির কাছে এটি একটি প্রমাণিত সত্যের দলিল।
বিএনপিসহ দেশবাসী এই ঘটনার ইতোমধ্যে তদন্ত দাবি করেছে। কিন্তু আজকে পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। এমন পরিস্থিতিতে বিএনপি আবারো দাবি করেছে, দুর্নীতি নিয়ে সরকারের দুই ক্ষমতাধরের কথোপকথন অস্বীকার না করে আইনমন্ত্রী তা যেহেতু স্বীকার করে নিয়েছেন, তাই এ ঘটনার কালবিলম্বে না করে অবশ্যই তা তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ার আওতায় আনতে হবে।
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি তথা দেশবাসী এটা মেনে নিতে পারে না। দুর্নীতির সাথে বিচার বিভাগকে জড়িয়ে ফেলার স্বীকৃত অপরাধকে আলাদাভাবে বিবেচনায় নেয়ার দাবি জানাচ্ছে বিএনপি।’
‘তদন্ত প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতার জন্য বিএনপি এই মুহূর্তে আইনমন্ত্রী, বিনিয়োগ উপদেষ্টা ও তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টাসহ এই ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের পদত্যাগ দাবি করছে। অবিলম্বে তদন্তসাপেক্ষে ঘটনার সাথে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর জোর দাবি জানাচ্ছি।’ চাঁদপুরের প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণের শিক্ষামন্ত্রীর আত্মীয়-স্বজনদের সম্পৃক্ততা, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়সহ সকল ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে গণমাধ্যমের সংবাদও মহাসচিব তুলে ধরেন এই সংবাদ সম্মেলনে।