চুয়াডাঙ্গা জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল পান। এ জেলার অসংখ্য চাষি স্বাবলম্বীও হয়েছেন এই পান চাষে। দেশজুড়ে পানের চাহিদাও রয়েছে । বিদেশেও রফতানি হতো চূয়াডাঙ্গার পান। তবে করোনাসহ নানা কারণে বিদেশে রফতানি বর্তমানে বন্ধ। এ অঞ্চলে সাধারণত দুই জাতের মিষ্টি পান ও সাঁচি পানের আবাদ করা হয়।
অসময়ে বৃষ্টি, ছত্রাকজনিত নানা রোগ, কুয়াশা ও তীব্র শীতে পান পেকে যাওয়া, সার, কীটনাশক, মজুরিসহ উপকরণের দাম বৃদ্ধিতে লোকসান গুনতে হচ্ছে পানচাষিদের। পানের সালমনিয়া রোগে চিন্তিত চাষিরা। সব মিলিয়ে পানচাষে আগ্রহ কমেছে চাষিদের। এদিকে নতুন করে পানের বাজারে বড় দরপতনে আবারো শঙ্কায় পড়েছেন তারা।
অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এ জেলায় প্রচুর পান হয়ে থাকে। তুলানামূলক উঁচু জমিতে পান আবাদ ভালো হওয়ায় যুগ যুগ ধরে পানের আবাদ করে আসছে এখানকার চাষিরা। পানকে জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল বলা হলেও বর্তমানে তা কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ। পান বাদ দিয়ে অনেকেই শুরু করেছেন ভুট্টা, ধানসহ অন্য আবাদ।
চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, ২০১৮ সালে ১৭৭৪ হেক্টর, ২০১৯ সালে ১৭৩০ হেক্টর, ২০২০ সালে ১৬৭০ হেক্টর, ২০২১ সালে ১৬০৯ হেক্টর ও ২০২২ সালে ১৬৩৩ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়েছে। তবে ক্রমান্বয়ে এই পান চাষে কৃষকদের আগ্রহ কমেছে বলেও স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানায়।
সম্প্রতি জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার খাদিমপুর ইউনিয়নের পানবাজারে পানের আড়তে গিয়ে দেখা যায়. বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্রির জন্য চাষিরা পান নিয়ে এসেছেন। আগের মতো বাইরের ক্রেতা তেমন একটা নেই। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, চাষিদের পান চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কাজ করে যাচ্ছি। আধুনিক পদ্ধতিতে পানের আবাদে চাষিদের লাভ বেশি হবে।
উপ-পরিচালক ড. আবদুল মাজেদ বলেন, পানচাষিরা বহুমুখী সঙ্কটে রয়েছেন। পানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি। চাষিরা যেন সিন্ডিকেটের কবলে না পড়েন সেজন্য নিয়মিত বাজার তদারকি করা হচ্ছে।