বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির ও সিএইচডিআর বনানীর প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, সুস্থ ধারার ক্রীড়া-সংস্কৃতিচর্চা স্বাস্থ্যবান ও মননশীল জাতি গঠন এবং নতুন প্রজন্মের সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটায়। মূলত, খেলাধুলা মানুষের মধ্যে উদারতা, সহিষ্ণুতা ও মূল্যবোধ সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। যা প্রমাণ হয়েছে একটি ক্লাব কর্তৃক তাদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি স্থগিত করে সিএইচডিআরের আজকের টুর্নামেন্ট আয়োজনের সুযোগ করে দেয়ার মাধ্যমে। তাই দেশ ও জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে প্রতিভাবান, দক্ষ ক্রীড়াবিদ ও সংস্কৃতিকর্মী সৃষ্টির জন্য সরকার, ক্রীড়া সংগঠন, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, চ্যারিটি সংস্থাসহ সমাজের বিত্তবান মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। গত শুক্রবার রাজধানীতে সিএইচডিআর যুব বিভাগ-বনানীর আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে টি-১০ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট-২০২২-এর ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং জীবিত ভাষা সৈনিকসহ শহীদ পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
সেলিম উদ্দিন বলেন, আজকের যুব সমাজই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। ইসলামের সূচনালগ্ন থেকেই দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে যুবসমাজই অগ্রসৈনিকের ভূমিকা পালন করেছে। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামসহ জাতির যেকোনে ক্রান্তিকালে যুবসমাজ থেকেছেন আপোষহীন। তাই ন্যায় ও ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় যুবসমাজকে নেতৃত্বের জন্য যোগ্যতর করে গড়ে তুলতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদের সংবিধানে ২-এর (ক) অনুচ্ছেদে ঘোষিত রাষ্ট্র ধর্ম ইসলামের সুমহান আদর্শের ভিত্তিতে ও মহান স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আর্ত-মানবতার কল্যাণে যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। তিনি বলেন, সাম্য, সামাজিক ন্যায়বিচার, আইনের শাসন ও উদার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যই আমরা সর্বাত্মক মুক্তিসংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। কিন্তু স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অতিক্রান্ত হলেও আমাদের প্রাপ্তিটা খুব একটা সমৃদ্ধ হয়নি। সাম্যের পরিবর্তে বৈষম্য, ন্যায়বিচারের পরিবর্তে অবিচার, আইনের শাসনের পরিবর্তে জুলুমবাজী আর গণতন্ত্রের পরিবর্তে স্বেচ্ছাতন্ত্র জাতির ঘাড়ে চেপে বসেছে। সরকার আগামীতে আবারো পাতানো ও তামাশার নির্বাচন করার জন্যই নতুন পাঁয়তারা শুরু করেছে। তারা কেয়ারটেকার সরকারের গণদাবি উপেক্ষা করার জন্য নানা ছলচাতুরীর আশ্রয় নিচ্ছে। কিন্তু সচেতন জনতা সরকারের সে স্বপ্ন কখনোই বাস্তবায়িত হতে দেবে না। তিনি নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সকারের গণদাবি আদায়ের লক্ষ্যে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। তিনি আরো বলেন, দেশে মূল্যস্ফীতি এখন সব সীমা অতিক্রম করেছে। চাল, ডাল, তেল, আটা, লবণ, চিনি, পেঁয়াজ, ডিম, গোস্ত ও তরিতরকারিসহ সবকিছুতেই অগ্নিমূল্য। সরকার এক মাসের ব্যবধানে আবার নতুন করে এলপি গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির কারণে জনদুর্ভোগ ব্যাপকভাবে বেড়ে গেলেও সরকারের মন্ত্রীরা জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে বলে পরিহাস শুরু করেছেন। তাই এই গণবিরোধী সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন গণপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলনে যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে সবার প্রতি আহবান জানান।
বনানী থানা আমির ও সিএইচডিআর পরিচালক মিজানুর রহমান খানের সভাপতিত্বে ও থানা সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুর রাফির পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ও সংগঠনের উপদেষ্টা ডা: ফখরুদ্দীন মানিক। উপস্থিত ছিলেন শাহজাহান সরকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুজ্জামান, মাওলানা মোকাররম হোসাইন, ইমামুল ইহসান, তাজুল ইসলাম, মোতালেব হোসেন, ফয়েজ আহমদ, হাফিজুর রহমান, আব্দুস শাকুর, আনোয়ার ইলাহী, নিয়ামত উল্লাহ, জাকির হোসেন ও ইঞ্জিনিয়ার জিকরুল ইসলাম প্রমুখ। আলোচনা শেষে প্রধান অতিথি বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার এবং মাঠে নিয়মিত খেলাধুলা করা অন্যান্য খেলোয়ারদের সাথে সকালের নাস্তায় অংশগ্রহণ করেন।