সজনার ডাটা গ্রাম-বাংলার একটি সুস্বাদু খাবার। বিভিন্ন সবজির মধ্যে সজনা ডাটা বাঙলীর প্রিয় সবজি। শুরু হয়েছে সজনার মৌসুম, গাছে গাছে ফুটেছে সজনার সাদা ফুল, ফুলের মাঝে ঝুলছে কোচি সজনা ডাটা। আবার তা বিক্রি করেও অনেকে জীবিকা নির্বাহ করে কয়েক মাস। দিনাজপুরের হিলির সাতনি গ্রামের সাজেদা বেগমও অনেকটা চলে তার সজনা ডাটা বিক্রি করে। হিলির শহর-গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, রাস্তা-ঘাট, পুকুরপাড়, জমির আইলে, বাড়ি আঙ্গিনায় ও তার চারপাশে এবং কি শহরের অফিস সহ বিভিন্ন স্থানে সজনার গাছ। এবার চলতি সজনার মৌসুমে প্রতিটি গাছে পর্যাপ্ত ফুল এসেছে। আবার প্রতিটি ফুলের ভিতর দিয়ে বেয়ে বেড় হতে শুরু করেছে কোচি কালচে সজনার ডাটা। আর মাত্র ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে খাওয়ার উপযোগী হয়ে উঠবে এসব সজনা ডাটা। সুস্বাদু এবং দাম বেশি হওয়াতে বর্তমান প্রায় বাড়িতে দেখা যায় সজনার গাছ। বাড়ির চাহিদা পুরন করেও সবাই তা বিক্রি করে অর্থ আয় করে। প্রথমের দিকে যারা বাজার জাত করে তারা ১৫০ টাকা কেজিরও ওপরে দাম পেয়ে থাকে। সজনা ডাটা চাষ বা গাছ লাগাতে কোন খরচ হয় না। কিংবা এর কোন যতেœরও প্রয়োজন হয় না। বর্ষাকালে সজনা গাছের ডাল কেটে তা যেকোন স্থানে লাগিয়ে দিলেই সজনা গাছটি আপন শক্তিতে বেড়ে উঠে। ডাল লাগানোর পরে সজনার মৌসুম শুরু হলে ঐডালে সজনার ফুল আসতে শুরু করে। এক সময় সজনা ডাটার চাহিদা কম ছিলো এবং দামও কম ছিলো। মানুষ তেমন এটা চাষে আগ্রহী ছিলো না। বর্তমান প্রায় মানুষ বাণিজ্যিক ভাবে সজনার গাছ লাগাচ্ছেন। অনেকেই তাদের বাড়ির আশপাশের ফাঁকা জায়গায় বর্ষাকাল আসলেই সজনার ডাল লাগায় লাভের আশায়। কেননা এথেকে ফল পেতে কোন বাড়তি খরচ বা শ্রম দিতে হয় না। একদিকে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে অন্যদিকে বাজারে দামও ভাল পাওয়া যায়। হিলির সাতনি গ্রামের সাজেদা বেগম বলেন, আমার তিনটা সজনা ডাটার গাছ আছে। একটি গাছের বয়স প্রায় ৮ বছর, প্রতিবছর প্রচুর সজনা ধরে এই গাছে। এবছরও প্রচুর ফুল এসেছে, আশা করছি সজনাও অনেক ধরবে। বাড়িতে খেয়েও আমি অনেক সজনা বিক্রি করি। গতবারও প্রথমের দিকে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে সজনা বিক্রি করেছিলাম। সজনা বিক্রির টাকা দিয়ে আমার সংসারের অনেক চাহিদা পুরন করে থাকি। হিলি মহিলা কলেজ পাড়ার আবু সিদ্দিক বলেন, সজনার ডাটা আমার খুবি প্রিয় তরকারি, শরীরের জন্যও অনেক উপকার। বাড়ির ভিতরে আমার একটা সজনার গাছ আছে। অনেক সজনা ধরে, এবারও ধরেছে। আমি বিক্রি করি না। নিজে খাই এবং প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে দিয়ে দেয়। হিলি বাজারে সবজি কিনতে আসা আলামিন হোসেন বলেন, বাজারে সবজি কিনতে আসছি, সব জায়গায় সজনার গাছে ফুল আর ডাটা দেখছি। তাই ভাবলাম বাজারে পাওয়া যায় কি না সজনার ডাটা, বাজারে এখনও তা উঠেনি। তবে কয়েক দিন আগে ভারতের সজনার ডাটা দেখে ছিলাম দাম তার ২০০ টাকা কেজি। হিলি বাজারের সবজি ব্যবসায়ী সোহেল রানা বলেন, এখনও দেশি সজনা ডাটা উঠতে শুরু করেনি। তবে আর কয়েক দিনের মধ্যে উঠে যাবে। বাজারে ক্রেতারা সজনা ডাটার খোঁজ নিচ্ছে, সারা বছর এডাটার চাহিদা আছে।