সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৮:৫৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
সদরপুরে বাতাসে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন সোনালী আঁশ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হাজী দিদার পাশার পক্ষে আলোচনা সভা পঞ্চগড়ের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশুতোষ বর্মণের বদলীর দাবীতে মানববন্ধন নগরকান্দায় ভূত আতংকে অসুস্থ হয়েছে শিক্ষার্থীরা ডিমলায় ১০০ পরিবারের মাঝে ঢেউটিন ও অর্থ বিতরণ ভয় পাবার কোন কারণ নাই, আমাদের একজন শেখ হাসিনা আছেন টুঙ্গিপাড়া জাতির পিতার সমাধিতে যুব লীগের চেয়ারম্যানের শ্রদ্ধা নিবেদন টিয়া পাখির মতো আপনাদের কাছে প্রিয় হয়ে থাকতে চাই-সাংবাদিক বাবু পলাশবাড়ী উপজেলা দলিল লেখক সমিতির ত্রি বার্ষিক নির্বাচন কুয়াকাটায় মধ্যরাত থেকে শুরু মাছ ধরার উপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা

জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যায় ইন্ধনদাতারা নজরদারিতে

খবরপত্র ডেস্ক
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৮ মার্চ, ২০২২

রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী সামিয়া আফনান প্রীতিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় শুটার মাসুম মোহাম্মদ আকাশকে দেওয়া কন্ট্রাক্টের নেপথ্যে থাকা একাধিক ব্যক্তির নাম পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। জানিয়েছে মাসুমকে গ্রেফতার করার বৃত্তান্ত ও হত্যায় তার জড়িয়ে পড়ার নেপথ্যের কিছু কারণ।
শুটার মাসুম ফোনে এই হত্যার প্রস্তাব পায়। অজ্ঞাত ব্যক্তির কথা অনুযায়ী হত্যাকা-ে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও পিস্তল মতিঝিলের এজিবি কলোনি থেকে সংগ্রহ করে সে। হত্যাকা- ঘটিয়ে গোড়ান এলাকায় মোটরসাইকেল ও পিস্তল রেখে আসে। গোয়েন্দা-পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মাসুম ওরফে আকাশ গোয়েন্দা পুলিশকে এসব তথ্য জানায়। গতকাল রবিবার ২৭ মার্চ জয়পুরহাট-বগুড়া এলাকার মাঝামাঝি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে মতিঝিল গোয়েন্দা-পুলিশ। তাকে গ্রেফতারে সহায়তা করে বগুড়া জেলা পুলিশ।
‘ট্রেস করলেন কীভাবে!’: গোয়েন্দারা বলছেন, মাসুমের ধারণা ছিল তাকে কেউ গ্রেফতার করতে পারবে না। কারণ, হত্যাকা-ের সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করেনি সে। গুলি ছোড়ার সময় হেলমেট ও মাস্ক পরা ছিল। তাই গ্রেফতার হওয়ার সময় তাকে বেশ আশ্চর্য হতে দেখা যায়। এ সময় পুলিশকে উদ্দেশ করে সে বলে, আপনারা আমাকে ট্রেস করলেন কীভাবে! আমাকে তো খুঁজে পাওয়ার কথা নয়।
জিজ্ঞাসাবাদে মাসুম আরও জানায়, পরিকল্পনা অনুযায়ী এই হত্যাকা- ঘটিয়েছে সে। সবই ঠিক ছিল। হত্যাকা- ঘটিয়ে রাজধানী থেকে জয়পুরহাট পর্যন্ত নির্বিঘেœ চলেও গিয়েছিল সে। ভেবেছিল দেশের বাইরে পালিয়ে যেতে পারবে সময় মতো।
গোয়েন্দারা জানান, ঘটনার পর তার কাছের লোকজনই তাকে গ্রেফতারে সহায়তা করে। বেশ কিছু কথাবার্তার পরিপ্রেক্ষিতে গোয়েন্দাদের কয়েকটি বিষয়ে খটকা লাগে। সেসব অনুসন্ধান করতে গিয়েই মাসুমকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন তারা।
হতাশা থেকে ভাড়াটে খুনি: প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাসুম ঘটনার দায় স্বীকার করলেও এই ঘটনার জন্য সে অনুতপ্ত বলেও জানায়। পরিবার থেকে বিচ্যুত ছিল। বাবা-মা এমনকি স্ত্রীর সঙ্গেও ছিল না ভালো সম্পর্ক। সবুজবাগ এলাকায় ডিশ ব্যবসায় জড়িত ছিল। ব্যবসাও ভালোভাবে চলছিল না। এসব নিয়ে হতাশা কাজ করছিল তার ভেতর। এলাকায় স্থানীয় রাজনীতিতে জড়িত থাকলেও ছিল না কোনও পদ।
গোয়েন্দারা জানতে পারেন, বিভিন্নভাবে পারিবারিক-সামাজিক ও আর্থিক হতাশাকে কাজে লাগিয়ে কাছের লোকজনই তাকে এই হত্যাকা-ের জন্য ভাড়া করে। তাকে বলা হয়, এ কাজ করা হলে তার নামে থাকা চারটি মামলা থেকে তাকে রেহাই দেওয়া হবে।
মাসুম গোয়েন্দাদের আরও জানায়, হত্যাকা-ের সময় রাস্তার অপর পাশে মোটরসাইকেলে থাকা ব্যক্তির সঙ্গে কন্ট্রাক্ট কিলিং নিয়ে তার দফারফা হয়। এতে আরও যারা জড়িত ছিল তাদের অনেকের তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। তারাও আছে নজরদারিতে। যে মোটরসাইকেলে ঘটনাস্থল থেকে মাসুম পালায়, মূলত সে মোটরসাইকেলের চালকই এই হত্যার জন্য চুক্তিবদ্ধ করে তাকে। এ কাজে ‘কাটআউট’ পদ্ধতি বেছে নেয় তারা। এতে মূল আদেশদাতা বা একজনের সঙ্গে আরেকজনের সরাসরি কোনও যোগাযোগ থাকে না। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মাধ্যমে নির্দেশনা দেওয়া হয় শুধু। ওই মোটরসাইকেল চালককেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
মাসুম গোয়েন্দাদের জানিয়েছে, ২৩ মার্চ কমলাপুরে টিপুকে হত্যার একবার চেষ্টা করেছিল। পরদিন বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) মতিঝিল থেকে বাসায় ফেরার পথে রাতে তার প্রাইভেটকার অনুসরণ করতে শুরু করে। একপর্যায়ে শাহজাহানপুর রেলগেটের কাছে প্রাইভেটকারটি যানজটে পড়লে জাহিদুল ইসলাম টিপুকে লক্ষ্য করে ১২ রাউন্ড গুলি ছোড়ে সে। পিস্তলে ১২ রাউন্ড গুলিই ছিল বলে জানিয়েছে মাসুম।
মতিঝিল গোয়েন্দা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার রিফাত রহমান শামীম বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আরও কিছু জেনেছি। অনেকের নাম পেয়েছি। সেসব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট আরও কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হলে এ হত্যার মোটিভ পরিষ্কার হবে।
যেভাবে ঢাকা ছাড়ে মাসুম: টিপুকে গুলি করে রাস্তা পার হয়ে উল্টো পাশে অপেক্ষমাণ নম্বরবিহীন মোটরসাইকেলে চড়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে মাসুম। পরে শাহজাহানপুর হয়ে রাজারবাগ ফ্লাইওভার-বাংলামোটর-হাতিরঝিল হয়ে বনশ্রী যায় তারা। সেখান থেকে গোড়ান গিয়ে একটি জায়গায় মোটরসাইকেল ও পিস্তল রেখে আসে। সেখানে ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষার পর দুজনের সহায়তায় একটি প্রাইভেটকারে রাতেই গোড়ান থেকে জয়পুরহাটের উদ্দেশে রওনা হয়।
ধরা পড়ে যেভাবে: মতিঝিল গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক টিম বিভক্ত হয়ে তথ্য সংগ্রহের একপর্যায়ে মাসুমে গতিবিধি সম্পর্কে তথ্য পায়। সে তথ্যের ভিত্তিতে প্রাইভেটকারটি সম্পর্কে জানতে পারেন গোয়েন্দারা। সেই প্রাইভেটকারটি মাসুমকে জয়পুরহাটে রেখে যখন ঢাকায় ফিরছিল, মতিঝিল গোয়েন্দা পুলিশ ও বগুড়া পুলিশের সহায়তায় সেখান থেকে আটক করা হয় ওই গাড়ি। পরে প্রাইভেটকারে থাকা ব্যক্তিদের নিয়েই রওনা দেন গোয়েন্দারা। মাসুমকে যেখানে রেখে আসা হয়েছিল সেখানেই যান তারা। সেখানেই গ্রেফতার হয় মাসুম।- বাংলা ট্রিবিউন




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com