পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় উৎসব বৈসাবী উপলক্ষে আজ সোমবার থেকে ৫দিন ব্যাপী বৈসাবী মেলা শুরু হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে রাঙ্গামাটিতে শুরু হচ্ছে বৈসাবীর আমেজ। মেলা উপলক্ষে রাঙ্গামাটির বিভিন্ন পাহাড়ী এলাকাগুলোতে শুরু হয়েছে আনন্দ। মেলায় অংশ নিতে হাজারো পাহাড়ী নারী-পুরুষ যোগ দিবে এ আয়োজনে। গত সোমবার বিকেল ৪ টায় রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর ইনস্টিটিউটে ৫দিন ব্যাপী বৈসাবী মেলার উদ্বোধন করেন খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই-প্রু-চৌধুরী, রাঙ্গামাটি ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিঃ জেঃ মোহাম্মদ ইমতাজ উদ্দিন, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, জেলা পুলিশ সুপার মীর মোদদাছছের হোসেনসহ জেলা প্রশাসনের উধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়েছেন রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ সদস্য ও ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর বৈসাবী মেলা উদযাপন কমিটির আহবায়ক রেমলিয়না পাংখোয়া।
রেমলিয়ানা পাংখোয়া বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) জানান, পাহাড়ে বৈসাবী উৎসবের বর্ণিল আয়োজনের অংশ হিসেবে আজ ৪ এপ্রিল থেকে রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠি সাংস্কৃতিক ইনিষ্টিটিউটে শুরু হচ্ছে ৫ দিনের সংস্কৃতি মেলা। মেলায় নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী বস্ত্র ও হস্ত সামগ্রীসহ নানান পসরা প্রদর্শিত হবে। এছাড়া প্রতিদিন থাকবে সভা-সেমিনারসহ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। মেলা উপলক্ষে রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও ৫দিন ব্যাপী মেলার মধ্যদিয়ে বিজু সাংগ্রাই, বৈসুক, বিষু তথা বৈসাবী উৎসবের সূচনা হবে।
১২ এপ্রিল পাহাড়ের বৈসাবী উৎসবের প্রথম দিন চাকমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠীর ফুল বিজু বৈসু কিংবা বিষু। এদিন তারা বন থেকে ফুল আর নিম পাতা সংগ্রহ করে ফুল দিয়ে ঘর সাজানোর পাশাপাশি গঙ্গাদেবীর উদ্দেশ্যে কাপ্তাই হ্রদে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে উৎসবের সূচনা করেন। ১৩ এপ্রিল দ্বিাতীয় দিন চৈত্র সংক্রান্তির দিনকে বলা হয় মুল বিজু বৈসু বা বিষুু। এদিন তারা ঘরে ঘরে ঐতিহ্যবাহী পাচনসহ অন্যান্য খাবার রান্না করেন। আর ১৪ এপ্রিল থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত চলে মারমাদের জল কেলী উৎসব। মারমাদের পানি উৎসবের মধ্য দিয়েই পাহাড়ে বৈসাবী উৎসবরে সমাপ্তি ঘটে।
বিগত ২বছর করোনা মহামারীর কারণে পাহাড়ে বৈসাবী উৎসবের তেমন আয়োজন না থাকলেও এবার করোনা মহামারী কমে যাওয়াতে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়েই পাহাড়ের গ্রামে গ্রামে উদযাপিত হবে বৈসাবী উৎসব এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।