রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৫৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আজ ৮৯তম জন্মবার্ষিকী নগরকান্দায় দু’গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ, ওসি, সাংবাদিকসহ আহত- ৩০ কালীগঞ্জে নানা সংকটে গ্রাম আদালত সুফল পেতে প্রয়োজন কার্যকরী উদ্যোগ কটিয়াদীতে তারুণ্যের উৎসব উদযাপন, ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ মুন্সীগঞ্জে লুন্ঠিত মালামালসহ ৭ ডাকাত গ্রেফতার লক্ষ্মীপুর ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে বর্ণিল পিঠা উৎসব ছয় মাসেও উদ্ধার হয়নি নিখোঁজ অন্তঃস্বত্তা গৃহবধূ স্বপ্না হিলির রেললাইনের ধারে খেজুর রস নামাতে ব্যস্ত গাছিরা মোহাম্মদিয়া ইসলামী যুব সংঘের উদ্যোগে তাফসীরুল কোরআন মাহফিল সম্পন্ন গাইবান্ধায় ছোটবোন ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে নির্যাতিত গৃহবধূর সংবাদ সম্মেলন

শ্রীপুরে লিচুর ফুলে মধু চাষ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল, ২০২২

গাজীপুরের লিচু বাগানগুলোতে এখন সারি সারি মৌ বাক্স শোভা পাচ্ছে। লিচু ফুলে গুঞ্জন ছড়িয়ে উড়ে বেড়াচ্ছে হাজার হাজার মৌমাছি। মৌ চাষীরা কয়েক’শ টন লিচুর মধু উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে এ বছর মৌ বাক্স সাজিয়ে বসেছেন। প্রতি মৌসুমে লিচুর ফুল থেকে তিনবার মধু সংগ্রহ করেন মৌয়ালরা। ইতোমধ্যে দুইবার মধু সংগ্রহ শেষ হয়েছে। মধু সংগ্রহে লাভজনক এ চাষে চাষীর সংখ্যা বাড়ছে। প্রাকৃতিক এ মধু সংগ্রহ করে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হচ্ছেন বাগান মালিক ও চাষীরা। প্রকৃতি থেকে পাওয়া লিচুর মধু স্বাদেও অনন্য বলে জানিয়েছেন চাষীরা। শ্রীপুর উপজেলায় ৭’শ ২৮ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ করা হয়। বেশ কয়েকটি জাতের লিচু চাষ হয় শ্রীপুরে। চলতি বছর লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮’শ ৯৫ মে.টন।
শ্রীপুরের মুলাইদ গ্রামের মৌ চাষী মোহাম্মদ আলী বলেন, সার্বিকভাবে দেশে মধু উৎপাদন আগের থেকে এখন অনেক ভালো। ব্যক্তি পর্যায়ে দেশের বাইরেও এখন মধু রপ্তানি হচ্ছে । শ্রীপুরে যে পরিমাণ লিচু বাগান রয়েছে তাতে বসন্তকালে বাগানে বাক্স স্থাপন করা হলে শত শত টন মধু সংগ্রহ করা সম্ভব। এবছর অতিরিক্ত খড়ায় ফুল থেকে মধু বাষ্প হয়ে উড়ে গেছে। গত বছরের তুলনায় এবার উৎপাদন ২০ থেকে ২৫ ভাগ কম। তিনি প্রতি বছর ১৫ টন মধু উৎপাদন করেন। অর্ডার ছাড়াও বাড়ি থেকে ৫/৬ টন মধু খুচরা বিক্রি করেন। তিনি বলেন, বসন্তের আবহাওয়া বৃষ্টি ও ঠান্ডামুক্ত থাকলে প্রতি ১’শ বাক্সের বিপরীতে আট থেকে সাড়ে আট’শ কেজি মধু সংগ্রহ করা যায়। চলতি বছর বসন্তের প্রথম দিকে কিছুটা ঠান্ডা আবহাওয়া ছিল। মৌমাছি সাধারণত দুপুরে মধু সংগ্রহে বের হয়। ফলে এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় মধুর উৎপাদন কিছুটা কম। টেপিরবাড়ী মৃধা পাড়া এলাকায় তার তত্বাবধানে তিনটি বাগানে প্রায় ৫’শ মৌ বাক্স বসানো হয়েছে। সারা উপজেলায় চার হাজারের বেশি মৌ বাক্স বসানো হয়েছে। মধু সংগ্রহে বসন্তের এ সময়ে কমপক্ষে শ্রীপুর উপজেলায় ২’শ প্রশিক্ষিত শ্রমিক দুই মাসের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়ে থাকেন। মৌ চাষী আমীর আলী বলেন, ১৯৯১ সাল থেকে তিনি মৌ চাষে যুক্ত হন। সেরেনা জাতের মৌমাছি দিয়ে তিনি ওই সময়ে মধু উৎপাদন করেন। পরে ম্যালিফেরা জাতের মৌমাছি দিয়ে মধু উৎপাদন শুরু করে আজও তা চালিয়ে যাচ্ছেন। ম্যালিফেরা জাতের মৌমাছি অধিক ও মানসম্মত মধু তৈরি করে।
চাষী মাজহারুল ইসলাম বলেন, লাভজনক চাষ হওয়ায় তিনি প্রশিক্ষণ নিয়ে মৌ চাষে ঝুঁকেছেন। এ পেশায় তার মতো অন্যান্যদেরও যুক্ত হওয়ার আহবান জানান।
মৌয়ালরা বলেন, দক্ষ প্রশিক্ষিত ব্যক্তি ছাড়া মধু সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না। চাক থেকে মেশিনে মধু নিষ্কাশন, বাক্স থেকে ফ্রেম বের করে মধু ছেঁকে আবার বসাতে হয়। অপ্রশিক্ষিত লোকের মাধ্যমে মধু সংগ্রহ ও পরিচর্যা করতে গেলে মৌমাছির ক্ষতি হয়। চাকে মধু থেকে যায়, ডিম লার্ভা নষ্ট হয়ে মৌমাছি মারা যায়। কেওয়া গ্রামের লিচু বাগান মালিক নূরুল আলম মাস্টার বলেন, গত বেশ কয়েক বছর যাবত লিচু গাছে ফুল ফোটার পর কীটনাশক ব্যবহার করা হয় না। কৃষি অফিসের পরামর্শে ফুলের আঁটি বের হওয়ার সময় ও ফুল ঝড়ার পর লিচুর গুটি হলে কীটনাশক দেয়া হয়। এতে মৌ চাষীদের মধু সংগ্রহে সুবিধা হয়। কেওয়া গ্রামের অপর লিচু বাগান মালিক আলমাছ উদ্দিন বলেন, বাগানে মধু চাষীরা মৌ মাছির বাক্স স্থাপন করায় পরাগায়ন বেশি হয়। ফলে লিচুর উৎপাদন কমপক্ষে ২৫ ভাগ বেশি হয়। টেপিরবাড়ী গ্রামের আমীর হোসেন বলেন, লিচুর মধু তিনি নিয়মিত ব্যবহার করেন। এ মধু দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়। এর স্বাদ অন্যান্য মধুর চেয়ে অনেক বেশি। এ মৌসুমে প্রতি কেজি মধু তিনি সাড়ে ৩’শ টাকায় ক্রয় করেছেন। শ্রীপুর উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ কর্মকর্তা ইমতিয়াজ জাহান খান বলেন, শ্রীপুরে এ বছর চার হাজার ২১০টি মৌবাক্স স্থাপন করা হয়েছে। শ্রীপুর পৌরসভা ও তেলিহাটী ইউনিয়নে এ চাষ বেশি হয়। লিচু আবাদের সাথে মৌচাষের ফলে লিচুর ফলন বৃদ্ধি পায়। ফুল ফোটার সময় চাষীদের লিচু ফুলে কীটনাশক প্রয়োগ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেয়া হয়। ঘন ঘন পরাগায়ন মৌচাষ উপযুক্ত মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। এবছর উপজেলায় ৩৫০ মে.টন মধু লিচুর ফুল থেকে আহরণ করা সম্ভব। -বাংলাদেশ জার্নাল




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com