নড়াইল সদর উপজেলার বিছালী ইউনিয়নের আড়পাড়া গ্রামের নিরীহ লোকজনের উপর সন্ত্রাসীদের অব্যাহত হামলা, নির্যাতন, বাড়িঘর ভাংচুর এবং নীরব চাঁদাবাজির প্রতিবাদে মানববন্ধন,বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের জনগনের আয়োজনে আড়পাড়া বাজারের সড়কের উপর এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ বক্তৃতা করেন বিছালী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট মো: মোকারম হোসেন সর্দার, সাধারন সম্পাদক সাবেক ইউপি মেম্বার মিনা মিলন হোসেন, আওয়ামীলীগ সদর উপজেলা কমিটির সদস্য সৈয়দ রিয়াজ আলী,স,ম বায়েজীদ হোসেন, স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা বিশ্বজিত গোলদার, হামিদা বেগম, প্রভাতী সরকার, ইস্মিতা, শিলা বিশ্বাস প্রমূখ। স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সাবেক ইউপি মেম্বার মিনা মিলন হোসেন বক্তৃতায় বলেন,পূর্ব শত্রুতার জের ও তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আড়পাড়া গ্রামের সন্ত্রাসী রবিউল শেখ ও তার তিন সহযোগি মিলে গত ৮ এপ্রিল দুপুর আড়াইটায় আমার ভাই মিনা হিলন হোসেনকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে খুন করার উদ্দেশ্যে রামদা দিয়ে মাথায় কুপিয়ে এবং লোহার রড, হাতুড়ি ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে তাকে গুরুতর জখম করে। আমার ভাইকে প্রথমে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। বর্তমানে আমার ভাই হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।এ ঘটনার সময় সন্ত্রাসীরা আমাকেও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। আওয়ামীলীগ নেতা মোকারম হোসেন তার বক্তৃতায় বলেন, বিছালী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান, স্বাধীনতাবিরোধী পরিবারের সন্তান এস.এম আনিসুল ইসলামের সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য আড়পাড়া গ্রামের রবিউল শেখ ও তার লোকজন, মীর্জাপুর গ্রামের রিয়াজ শেখ, ইমরান মুন্সী, আজিম শেখ, আল ফয়সাল, পারভেজ ফটিক, বেলাল শেখ, হাসানুর শেখ, সোহান খন্দকার, আনোয়ার মোল্যা, আজমীর মোল্যা, নুর ইসলাম ডাক্তার,জাহেদ মুন্সী এলাকার নিরীহ ও শান্তিপ্রিয় লোকজনের উপর হামলা ও অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলেছে।উল্লেখিত লোকজন গত বছরের ২৪ নভেম্বর দুপুরে মির্জাপুর স্কুলের মধ্যে অবস্থানকালে আমাকে, আমার ছেলে সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের অনার্স ১ম বর্ষের ছাত্র রাসুল সর্দার, আমার ভাই নিসারত হোসেনকে খুন করার উদ্দেশ্যে ধারালো দা, লোহার রড, হাতুড়ী ও লাঠিশোঠা নিয়ে আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়।এ ঘটনায় আমার ছেলে ও ভাই গুরুতর আহত হয়। আওয়ামীলীগ সদর উপজেলা কমিটির সদস্য সৈয়দ রিয়াজ আলী তার বক্তৃতায় বলেন, গত ২০২১ সালের ১১নভেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়া বিছালী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আমরা নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় স্বতন্ত্র প্রার্থী এস.এম আনিসুল ইসলাম আমাদের উপর ক্ষেপে যান।নির্বাচন পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে তার সন্ত্রাসী বাহিনীর চিহ্নিত কতিপয় লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে প্রতিপক্ষ শান্তিপ্রিয় লোকজনের উপর একের পর এক হামলা ও নির্যাতন চালাচ্ছে।আমরা এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা বিশ্বজিত গোলদার বলেন, আড়পাড়া গ্রামের হিন্দু-মুসলমান মিলে আমরা দীর্ঘদিন যাবত শান্তিপ্রিয়ভাবে বসবাস করে আসছি।বিগত ইউপি নির্বাচনে আমরা নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার কারণে দশরথ গোলদারকে মারপিট করে স্বতন্ত্র প্রার্থী এস.এম আনিসুল ইসলামের লোকজন।সে সময় থেকে এখনও পর্যন্ত আমাদের গোত্রীয় মা-বোনদের অশ্রাব্যভাষায় গালিগালাজসহ ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। আমরা সন্ত্রাসীদের ভয়ে বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছি। স,ম বায়েজীদ বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান এস.এম আনিসুল ইসলাম ও তার লোকজন এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করায় আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। নিরীহ ও শান্তিপ্রিয় মানুষকে হামলা-নির্যাতন থেকে রক্ষা করতে সন্ত্রাসীদের লালনকারী ও মদদদাতা এবং কতিপয় চিহ্নিত সন্ত্রাসীকে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এদেরকে দ্রুত গ্রেফতারপূর্বক আইনের আওতায় আনা না হলে এলাকার শান্তি-শৃংখলার অবনতি ঘটতে থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ ব্যাপারে সাবেক চেয়ারম্যান এস.এম আনিসুল ইসলাম বলেন, আমার মান সম্মান ক্ষুন্ন করতে ও সমাজে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে প্রতিপক্ষরা ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমার লোকজন কোন ধরনের সন্ত্রাসী কিংবা আইনশৃংখলা বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত নেই। এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠাকল্পে আমি সবসময় সচেষ্ট আছি।