শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২২ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
সদর থানা দক্ষিণ কেওয়ার রাস্তা ভেঙ্গে পড়ায় এলজিইডি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা চকরিয়ায় মানববন্ধনেও থামছেনা বালু লুট পাটগ্রামে যুগের আলো পত্রিকার ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও মতবিনিময় সভা নগরকান্দায় বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত বিভিন্ন ক্যটাগরীতে গুণী শিক্ষক মনোনীত সংসারের পাশাপাশি দিনাজপুর জেলা বিএনপির রাজনীতিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন হাসি আকতার হিরা ভাঙ্গুড়ায় বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনা সভা বড়লেখায় শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন উদ্যোগে সিরাতুন্নবী সা. মাহফিল বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজা মন্ডপে সন্ত্রাসী হামলার আশংকা করছেন জয়নুল আবেদীন ফারুক কেশবপুরে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনা সভা খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে বিএনপি’র দোয়া ও আলোচনা সভা

এফআরসি’র পক্ষ থেকে আর্থিক প্রতিবেদন তৈরির মানদণ্ড নির্ধারণ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২২

সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষ ও রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে হিসাবরক্ষণ কাঠামোর আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি)। এজন্য এরই মধ্যে এফআরসির পক্ষ থেকে একটি খসড়া কাঠামো তৈরি করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৩০০টি প্রতিষ্ঠানকে এ কাঠামোর আওতায় আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ কাঠামো অনুসরণ করে এসব প্রতিষ্ঠানের আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করতে হবে। অবশ্য এরই মধ্যে কেউ কেউ এ কাঠামোয় সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষকে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে।
এ বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি সরকারের সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষ ও রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে হিসাবরক্ষণ কাঠামোর আওতায় আনা-সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এফআরসি। এতে বলা হয়, ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট (এফআরএ) ২০১৫-এর ধারা ২(৮) অনুসারে জনস্বার্থ সংস্থার অন্তর্ভুক্ত রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, করপোরেশন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, কাউন্সিল, বোর্ড, ইনস্টিটিউট, কমিশন, ট্রাস্ট, বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, ফাউন্ডেশন, কর্তৃপক্ষ, পরিষদ ও একাডেমির মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিষ্ঠাসংক্রান্ত আইন এবং এফআরএ আইনানুসারে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে যথাযথভাবে এর হিসাবরক্ষণ ও হিসাব বিবরণী প্রস্তুত করবে। এজন্য এফআরসি বিভিন্ন সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষ ও রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যাবলি ও আর্থিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে পাঁচ স্তরের খসড়া আর্থিক প্রতিবেদন কাঠামো ও এ-সংক্রান্ত খসড়া মানদ- প্রণয়ন করে প্রযোজ্য প্রতিষ্ঠানের তালিকা এবং প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য মানদ-, কাঠামো ও স্তর নির্ধারণ করেছে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে মতামত দিতে অনুরোধ করা হয়।
এফআরসি সূত্রে জানা গেছে, এ কাঠামো প্রস্তুতের বিষয়ে পেশাদার প্রতিষ্ঠান, কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অব বাংলাদেশের (সিএজি) কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে পাঁচ স্তরের আর্থিক প্রতিবেদন কাঠামো তৈরি করা হয়েছে। সরকারের সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষ ও রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি ও হিসাবরক্ষণ নীতির ভিত্তিতে বার্ষিক আর্থিক বিবরণী তৈরি করে। এক্ষেত্রে সব প্রতিষ্ঠান যাতে একটি অভিন্ন মানদ- অনুসরণ করে, সেজন্য এ কাঠামো প্রণয়ন করেছে বলে জানিয়েছে এফআরসি। এর মধ্যে যে ধরনের রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে প্রথম স্তরের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং তাদের পরিপূর্ণ ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড (আইএফআরএস) অনুসরণ করতে হবে। অন্যদিকে যেসব সরকারি কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমের বিস্তৃতি ব্যাপক এবং ১০০ কোটি টাকার বেশি ব্যয় করে, সেগুলোকেও প্রথম স্তরে রাখা হয়েছে এবং তাদেরও পরিপূর্ণ আইএফআরএস অনুসরণ করে আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করতে হবে। বড় আকারের সরকারি কর্তৃপক্ষ যারা ৬০ কোটি টাকার বেশি ব্যয় করে থাকে, তাদের দ্বিতীয় স্তরে রাখা হয়েছে এবং তাদের আর্থিক প্রতিবেদন তৈরির জন্য সরলীকৃত আইএফআরএস অনুসরণ করতে হবে। মাঝারি আকারের সরকারি কর্তৃপক্ষগুলোকে তৃতীয় স্তরে রাখা হয়েছে এবং তাদের সাধারণ বকেয়াভিত্তিক মানদ- অনুসরণ করে আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করতে হবে। ছোট আকারের কর্তৃপক্ষকে চতুর্থ স্তরে স্থান দেয়া হয়েছে এবং তাদের আর্থিক প্রতিবেদন তৈরির মানদ- হবে পরিবর্তিত বকেয়াভিত্তিক। অতি ক্ষুদ্র সরকারি কর্তৃপক্ষকে পঞ্চম বা সর্বশেষ স্তরে রাখা হয়েছে এবং তাদের আর্থিক প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে নগদভিত্তিক মানদ- অনুসরণ করতে হবে।
সরকারি সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষ ও রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর হিসাবরক্ষণ সংক্রান্ত এফআরসির কাঠামোয় প্রাথমিকভাবে ৩০০ প্রতিষ্ঠানকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ৫৮টি, বোর্ড ৪৫, কর্তৃপক্ষ ৩২, ইনস্টিটিউট ২৯, করপোরেশন ২৬, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ২০, ট্রাস্ট ১৯, কাউন্সিল ১২, কমিশন ১২, পরিষদ ১১, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ১৩, একাডেমি নয়, ফাউন্ডেশন আট, কেন্দ্র চার ও তহবিল দুটি।
সম্প্রতি এফআরসি প্রণীত এ কাঠামোর বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিবের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন অ্যাডভোকেট মো. নজরুল ইসলাম নামে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী। তিনি তার মতামতে বলেছেন, সরকারি কর্তৃপক্ষের আর্থিক বিবরণী প্রস্তুতের জন্য যে পাঁচটি কাঠামো তৈরি করা হয়েছে, সেটি গোপনে এফআরসির কাউন্সিল সভায় নামমাত্র আলোচনার মাধ্যমে গৃহীত হয়েছে, যেখানে কাউন্সিলের সব সদস্য উপস্থিত ছিলেন না এবং কাউন্সিল মিটিংয়ে কার্যপত্রেও সব সদস্যের স্বাক্ষর নেয়া হয়নি। এফআরসির এ কার্যক্রম এখতিয়ারবহির্ভূত এবং সিএজি ব্যতীত ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) ও ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) বা সরকারের কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগে কোনো ধরনের লিখিত মতামত গ্রহণ করা হয়নি। যদি সরকারি প্রতিষ্ঠানে আইএফআরএস, ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড অব অ্যাকাউন্টিং (আইএসএ) ও ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড (আইএএস) অনুসরণ করে আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করতে হয়, তাহলে সেটি বিধি দিয়ে সিএজি নির্ধারণ করবেন। এ কাঠামো কার্যকর হলে সরকারি প্রতিষ্ঠানে বহির্নিরীক্ষক বা আইসিএবির নিরীক্ষা চর্চার সনদ (সিওপি) প্রাপ্ত নিরীক্ষকদের নিয়োগ দিতে হবে। এতে সরকারের ব্যয়ভার বাড়ার পাশাপাশি সরকারি উন্নয়নকাজে হস্তক্ষেপ, দুর্নীতি ও অনিয়ম প্রকাশের নামে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন, দেশে বিনিয়োগ কমে যাওয়া এবং মাত্র ৪০০ জন নিরীক্ষক দিয়ে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নিরীক্ষা করার মাধ্যমে একচেটিয়া নৈরাজ্য সৃষ্টি হবে বলে চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এফআরসির মানদ- নির্ধারণী বিভাগের নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মদ আনওয়ারুল করিম বলেন, যেসব আপত্তি উত্থাপন করা হয়েছে, সেগুলোর কোনো বৈধতা নেই। আমরা সিএজিসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করেই খসড়াটি তৈরি করেছি। সরকারি কর্তৃপক্ষ ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক প্রতিবেদন কীভাবে তৈরি করা হবে, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো মানদ- এতদিন ছিল না। তাই এক্ষেত্রে একটি সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি ও মানদ- অনুসরণের জন্য আমরা একটি কাঠামো তৈরি করেছি। এতে সরকারি কর্তৃপক্ষ ও প্রতিষ্ঠানের হিসাব ও নিরীক্ষা কার্যক্রমে শৃঙ্খলা আসবে। চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের মাধ্যমে নাকি সিএজির মাধ্যমে নিরীক্ষা করা হবে, সেটি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও সিএজির আইনানুসারেই নির্ধারিত হবে। এফআরসির পক্ষ থেকে সম্প্রতি এ কাঠামোর বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের অবহিত ও সচেতন করতে একটি সেমিনার করা হয়েছে। তাছাড়া খসড়ার বিষয়ে চাইলে যে কেউ মতামত পাঠাতে পারেন। এ বিষয়ে যেসব মতামত, পরামর্শ ও আপত্তি উঠে আসবে, আমরা সেগুলো পর্যালোচনা করে যৌক্তিক মনে করলে চূড়ান্ত কাঠামোয় প্রয়োজনীয় সংযোজন-বিয়োজন করব।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com