বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় অনুষ্ঠিত হল বাঙালী সংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহী ঘোড়া দৌঁড় ও গ্রামীণ মেলা। এতোদাঞ্চলের সবচেয়ে বড় ঘোড়া দৌঁড় প্রতিযোগিতায় এবারে সাতক্ষীরা, খুলনা, যশোর, মাগুড়া, নড়াইল, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জসহ আশপাশ এলাকা থেকে ২৪টি ঘোড়া অংশ নেয়। করোনার কারণে দুই বছর বন্ধ থাকার পর এবারে আবারও এ আয়োজন করায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে কোটালীপাড়াসহ আশপাশ এলাকার লক্ষাধিক মানুষ। মঙ্গলবার ও বুধবার লাটেঙ্গা গ্রামের ৩ শ’ একরের বিশাল চারণভূমিতে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে দু’দিনব্যাপী এ গ্রামীণ অনুষ্ঠান। বুধবার সন্ধ্যায় পুরস্কার বিতরণীর মধ্য দিয়ে শেষ হয় আয়োজন। আওয়ামীলীগ নেতা ও কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাসের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এলাকার সাধারণ মানুষ বিগত দুই যুগ ধরে জাগ্রত করে রেখেছেন এ ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ সংস্কৃতিকে। মেলার দোকানগুলোকে মাঝখানে রেখে চারণভূমির চারিদিকে বৃত্তাকারে তৈরী করা হয় ঘোড়-দৌড়ের পথ। ৭ রাউন্ডের রেসে ঘোড়াগুলো অন্তঃত ১১ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে। বিভিন্ন জেলা থেকে ঘোড় সাওয়াররা এসে অংশ নেন প্রতিযোগিতায়। অংশগ্রহণকারীদের আকর্ষণীয় পুরস্কারে পুরস্কৃত করা। একারণেই লাটেঙ্গা গ্রামের এই ঘোড়-দৌঁড়ের আয়োজনটি কোটালীপাড়ার প্রাচীণ সংস্কৃতিতে বিশেষভাবে পরিচিত। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এবারেও এ অনুষ্ঠানে লাখো মানুষের সমাগম ঘটে। আয়োজনের শেষদিনে বুধবার বিকেলে সেখানে অনুষ্ঠিত হয় ঘোড়-দৌড় প্রতিযোগিতার মূল পর্ব। লাটেঙ্গা মাঠ ও মেলা কমিটির সভাপতি যাদব চন্দ্র মল্লিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মূল পর্বের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা। বক্তব্য রাখেন কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কৃষ্ণপ্রসাদ মজুমদার, যুবলীগ নেতা অশোক কুমার বৈদ্য, প্রমূখ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ রাশেদুর রহমান, কোটালীপাড়ার ইউএনও ফেরদৌস ওয়াহিদ, উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান লক্ষ্মী রাণী সরকার ও সাদুল্যাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সমর চাঁদ মৃধা সহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠানে বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে সকলকে বৈশাখী শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান এবং সকলের শুভ কামনা করেন। পরে ঘোড়-দৌঁড় প্রতিযোগিতা শেষে অতিথিবৃন্দ বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে নড়াইলের সুজন মোল্লার ঘোড়া, দ্বিতীয় স্থানে ছিলো মাগুড়ার মিজানুর রহমান এবং তৃতীয় স্থানে ছিলো নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার রবিউলের ঘোড়া। তাদের প্রত্যেককেই বিভিন্ন আকারের এলইডি রঙ্গিন টেলিভিশন পুরস্কার দেয়া হয়। এছাড়াও ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক ঘোড়া সাওয়ারকে নগদ ২ হাজার টাকা করে সান্ত¡না পুরস্কার দেয়া হয়।