প্রতি বছরের মতো এবারের রমজানেও বাদ যায়নি ফিলিস্তিনের পবিত্র আল আকসা মসজিদে হামলার দৃশ্য। মসজিদ চত্বরে মুসল্লিদের ওপর হামলাকালে এবার ভাইরাল হয় নতুন এক দৃশ্য। সাদা দাড়ি ও লম্বা পাঞ্জাবি পরা এক ফিলিস্তিনিকে দেখা যায় পায়ের ওপর পা তুলে বসে থাকতে। তার চারপাশেই তখন টহল দিচ্ছিল ইসরায়েলের পুলিশ বাহিনী। ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর সামানে তার বসে থাকার দৃশ্য শুধু সাহসই নয়, বরং দুঃসাহসও বটে। তবে এমন ভঙ্গিতে তার বসে থাকা দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর জন্য ছিল লজ্জা ও অপমানের।
জানা যায়, ওই ব্যক্তির নাম আবু সাদ্দাম আল তুতানজি (৫৭)। স্থিরচিত্তে তার চেয়ারে বসে থাকার সেই দৃশ্য ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আলজাজিরা মুবাশিরকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে প্রবীণ এ ফিলিস্তিনি বলেন, ওই দৃশ্য ধারণের কিছুক্ষণ আগেও এক ইসরায়েলি পুলিশ সদস্য ফিলিস্তিনি মুরাবিতের ওপর হামলা করে। তখন আমি ফিলিস্তিনির সাহায্যে এগিয়ে যাই এবং পুলিশ সদস্যকে প্রতিরোধ করি। সাক্ষাতকারে ওই ব্যক্তি আরো জানান, ‘তখন আমি পায়ের ওপর পা রেখে চেয়ারে বসে ছিলাম। আমার মধ্যে তখন বীরত্ব ও সাহসীকতাপূর্ণ ভাবনা কাজ করছিল। কারণ এ ভূখণ্ড আমাদের, এ জমি আমাদের। আমরা কিয়ামত পর্যন্ত প্রতি মুহূর্তে আল আকসা মসজিদে অবস্থান করব। রমজান মাস বা অন্যকোনো মাস সব সময় আমরা এখানে থাকব। ’
তিনি আরো জানান, ‘আমার বসার ভঙ্গিমা দখলদার বাহিনীর জন্য লজ্জা ও অবমাননার ছিল। আমার চারপাশে ঘুরঘুর করতে থাকা ইসরায়েলি দখলদারদের জন্য এ দৃশ্য ছিল অপমানজনক। তাদের জন্য নতুন শিক্ষা নিয়ে হাজির হয় এ দৃশ্য। ’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ছবি ছড়িয়ে দেওয়ায় সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানান আল তুতানজি। দৃঢ় মনোবলের এ দৃশ্য সারাবিশ্বের মানুষের মধ্যে ফিলিস্তিনিদের দৃঢ়তার আওয়াজ পৌঁছে দেবে বলে তার আশা। রমজান মাস ছাড়াও যেকোনো কঠিন পরিস্থিতিতে সব সময় তিনি আল আকসা মসজিদে অবস্থান করেন বলে জানান তিনি। আল আকসা মসজিদের আল সিলসিলা নামক ফটকের পাশে বসবাস করেন আবু সাদ্দাম আল তুতানজি। এক রুমের ছোট্ট ঘরেই তার সাধাসিধে জীবন। তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো বিপদে শঙ্কিত নই। মহান আল্লাহ আমাদের ভাগ্যে যা লিখে রেখেছেন তাই ঘটবে। মৃত্যুর ভয়ে আমরা ভীতু নই। কারণ আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, মুসলিমদের বিজয় অত্যাসন্ন। ’ সূত্র : আলজাজিরা মুবাশির