চুল পড়া খুব পরিচিত এক সমস্যা। ইদানিং অধিকাংশ নারীই এই সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। চুল অনেক কারণেই পড়তে পারে। তাই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সঠিক কারণ বের করা জরুরি। সাধারণত ভিটামিনের স্বল্পতা, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ, প্রেগন্যান্সি-এর কারণে চুল পড়ে যায়। এছাড়া চুল রিবন্ডিং করা, ধূলাবালি, খুশকি, রাত জাগা, একটানা ওষুধ গ্রহণ করা সহ বিভিন্ন কারণেও চুল পড়তে পারে।
শরীরে ভিটামিনের স্বল্পতা থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স খাওয়া উচিত। চুলের জন্য আয়রন ট্যাবলেট অনেক উপকার দেয়। এছাড়া প্রাকৃতিক ভাবেও চুলের যতœ নেয়া যায়। এ জন্য প্রয়োজন হেয়ার মাস্কের। যা ঘরোয়া উপায়ে তৈরি করা যায় খুব সহজে।
চলুন জেনে নেয়া যাক ঘরোয়া উপায়ে হেয়ার মাস্ক তৈরির উপায়-
তেলের মাস্ক: তেলের মাস্ক তৈরিতে প্রথমে এক চামচ বাদাম তেল, এক চামচ নারিকেল তেল, এক চামচ ক্যাস্টর অয়েল, এক চামচ সরিষার তেল, এক চামচ অলিভ অয়েল, এক চামচ মেথি গুঁড়ো মিশিয়ে গরম করে নিন। এবার গরম তেল চুলে লাগিয়ে ১৫ মিনিট ম্যাসাজ করে সারারাত রেখে দিন। পরের দিন চুল ভিজিয়ে শ্যাম্পু করে ফেলুন। এতে চুল পড়া কমার পাশাপাশি চুল বাড়বে খুব দ্রুত। পাবেন খুশকি থেকে মুক্তি, গজাবে নতুন চুলও।
কলার মাস্ক: কলার মাস্ক তৈরিতে একটি কলা, তিন চামচ মধুর সাথে মিশিয়ে ৩০ মিনিটের জন্য চুলে দিয়ে রাখুন। তারপর শ্যাম্পু করে ফেলুন। দেখবেন চুল পড়া কমে যাবে।
প্রোটিন প্যাক: প্রোটিন প্যাক তৈরিতে ২ চামচ মধু, একটি ডিম, টক দই ও পাঁচ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে রাখুন ১ ঘণ্টা। এতে চুল অনেক বেশি নরম হবে।
অ্যালোভেরা জেল: শুধু অ্যালোভেরা জেল লাগালে চুল পড়া কমে, খুশকি দূর হয়। তাছাড়া চুল তাড়াতাড়ি লম্বা ও ঘনও হয়।
ফলের মাস্ক: ফলের মাস্ক তৈরিতে ব্লেনডার-এ একটি কলা, তিন চামচ অ্যালোভেরা জেল, পাঁচ চামচ টক দই, একটি ভিটামিন-ই ক্যাপসুল ভেঙ্গে ব্লেন্ড করে নিন। এবার লাগিয়ে অপেক্ষা করুন ৩০ মিনিট। এরপর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন চুল অনেক নরম ও ঝলমলে দেখাবে।
খুশকি দূর করার মাস্ক: এ মাস্ক তৈরিতে তিন টেবিল চামচ মেহেদি গুঁড়া, এক টেবিল চামচ দই, এক টেবিল চামচ বাদাম তেল মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে রাখুন এক ঘণ্টা। এরপর শ্যাম্পু করে ফেলুন। দেখবেন খুশকি কমে গেছে।
এক চামচ হরতকি গুঁড়া, এক চামচ আমলকি গুঁড়া, এক চামচ মেহেদি গুঁড়া, এক চামচ মেথি গুঁড়ার সাথে নারিকেল তেল মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে রাখুন এক ঘণ্টা। তারপর শ্যাম্পু করে ফেলুন। এছাড়া ছয় চামচ টক দই, ছয় চামচ লেবুর রস মিশিয়ে চুলে দিন। খুশকি কমবে।
চা-এর মাস্ক: চা-এর লিকার একটি স্প্রে বোতলে ঢেলে নিন। এরপর চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত স্প্রে করে নিন। ২ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। এরপর শ্যাম্পু করে নিন। এই হলো শ্যাম্পু করার আগের মাস্ক। তেলের মাস্ক আপনি নরমাল তেল হিসেবেও ব্যবহার করতে পারবেন। চুলে তেল দেবার পর চুলে গরম ভাপ নিলে চুল পড়া কমে। যে কোনো চুলের মাস্ক লাগানোর আগে চুলে তেল দেয়া থাকলে অনেক ভালো ফল পাওয়া যায়। চুলে শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনিং করা আবশ্যক। সবশেষে ছোট্ট একটি টিপস দেই, চুল বড় এবং ঘন করার জন্য ক্যাস্টর অয়েল ও মেথির তুলনা নেই। আর চুল নরম করার জন্য কলা এবং ডিমের তুলনা নেই। যারা রিবন্ডিং করেছেন তারা চুলের বেশি যতœ নিবেন।