জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শহীদ রফিক-জব্বার হলের ছাদ থেকে পড়ে মারা যাওয়া অমিত কুমার বিশ্বাসের বালিশের নিচ থেকে একটি ‘চিরকুট’ পাওয়া গেছে। তাঁর বাবা ও শিক্ষকেরা নিশ্চিত করেছেন, ‘চিরকুটের’ লেখা অমিতের। অমিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ রফিক-জব্বার হলের রফিক ব্লকের ৩১৫ নম্বর কক্ষে থাকতেন। এ কক্ষে মোট চারজন থাকতেন তাঁরা। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে তাঁর রুমমেটরা কক্ষে যান। তাঁরা অমিতের বিছানার বালিশের নিচে একটি চিরকুট পান। চিরকুটে লেখা, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না। আমার মস্তিষ্কই আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী।’ এ বিষয়ে ওই হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে চিরকুটের লেখার সঙ্গে তাঁর আগের খাতার লেখার মিল পাওয়া গেছে। আমরা আপাতত কক্ষ বন্ধ করে রেখেছি। পুলিশ বাকিটুকু দেখবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, অমিতের কক্ষে পাওয়া চিরকুটটি তাঁর বাবা অজয় কুমার বিশ্বাসকে দেখানো হয়েছে। তিনি নিশ্চিত করেছেন, এটি অমিতেরই হাতে লেখা। অমিতের একজন সহপাঠী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত বছর থেকে অমিত বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রন্থ নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। নানা ধর্মের বিষয় সম্পর্কে জানার আগ্রহ তৈরি হয়েছিল তাঁর। ধর্ম নিয়ে বিভিন্ন সময় নানা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগতেন তিনি। উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নুহু আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘অমিত খুবই ভদ্র একজন ছাত্র ছিলেন। সন্তানতুল্য ছাত্রের এভাবে চলে যাওয়া মেনে নেওয়া যায় না। তাঁর মৃত্যুর প্রকৃত কারণটি উদ্ঘাটন করতে হবে এবং এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তির যেন না হয়।’ গত মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে হলের পাঁচ তলার ছাদ থেকে পড়ে যান অমিত কুমার বিশ্বাস। তাঁকে তাৎক্ষণিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অমিতের মৃত্যু হয়।