জেলার লালমাই পাহাড়ে কচুর বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছে কৃষকরা। লাইমাই পাহাড় কুমিল্লার দর্শনীয় অন্যতম একটি স্থান। কুমিল্লা আদর্শ সদর, সদর দক্ষিণ ও বরুড়া উপজেলা জুড়ে এ লালমাই পাহাড়টি অবস্থিত। পাহাড়ের উত্তর-দক্ষিণে ১১ মাইল লম্বা এবং পূর্ব-পশ্চিমে ২ মাইল চওড়া। এ পাহাড়ের মাটি লাল হওয়ার কারণে পাহাড়ের নামকরণ লালমাই করা হয়। লামমাই পাহাড়ের সর্বোচ্চ উচ্চতা ৫০ ফুট। আর এ লালমাই পাহাড়ের বুকে বিভিন্ন সময় শাক-সবজি, ফল-মূল ইত্যাদি উৎপাদন হয়ে আসছে। চলতি বছরে আগাম বৃষ্টির হওয়ার কারণে লালমাই পাহাড়ে কচুর বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছে কৃষকরা। লালমাই পাহাড়ের আদি অধিবাসীদের একমাত্র প্রধান পেশা হলো কচু চাষ করা। একজন চাষি আগ থেকে বলতে পারেন কোন বছর তাদের বাম্পার ফলন হবে। যে বছর বৃষ্টি বেশী হবে, সেই বছর কচুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা থাকে। চারা বপনের সময়ে প্রথমে কৃষকরা পাহাড় কোঁদাল দিয়ে মাটি কেটে বীজ বপনের জন্য প্রস্তুুত করা হয়। মাটি কাটা শেষ হলে বীজ বপনের কাজ শুরু হয়। বীজ রোপণ করতে হয় এক হাতের (১৮ ইঞ্চি) মধ্যে তিনটি। প্রতি শতকে উৎপাদনে খরচ হয় ৮০০-১০০০ টাকা। আর তা বিক্রি করা হয় ১২০০-১৫০০ টাকা। শতকে উৎপাদন হয়ে থাকে ৩-৪ মণ। কৃষকরা এ পেশার অর্থ উপার্জন দিয়ে সংসার, ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া ও ভরণ পোষণ করে থাকেন।
সদর দক্ষিন উপজেলা কৃষি অফিসারের তথ্য অনুযায়ী জানা যায় চলতি বছর ৪০ হেক্টর জমিতে কচু উৎপাদন করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রতি হেক্টর জমিতে কচুর উৎপাদন হবে ২০ টন। ৪০ হেক্টর জমিতে উৎপাদন হবে ৮০০ টন। এক সময় এ লালমাই পাহাড়ের কচু দেশের সকল জেলার চাহিদা মিঠিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করে উপার্জন করা হতো বৈদাশিক মুদ্রা।
লালমাই পাহাড়ের পশ্চিম শ্রীবিদ্যার এলাকার কৃষক রমিজ উদ্দিন জানান, পাহাড়ে পানি সেচ দেওয়ার কোন ব্যবস্থা না থাকার কারণে বৃষ্টির উপর আমাদের ফসলের নির্ভর হয়ে থাকতে হয়। যেহেতু এ বৎসর আগাম বৃষ্টি হয়েছে তাই আমরা বেশী ফলনের আশা করতে পারি। অপর কৃষক হরিচন্দ্র পাল জানান, আবহাওয়া শেষ পর্যন্ত যদি অনুকূলে থাকে তাহলে এবার বাম্পার ফলন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান বাসসকে বলেন, আমরা পাহাড়ের অধিবাসী কৃষকদের সকল ধরনের পরামর্শ দিয়ে থাকি। যাতে করে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও পাহাড়ে কচু চাষে বিপ্লব ঘটবে।