ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আনতে তেলবীজের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য গবেষণা ও উৎপাদন বাড়ানোর কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। বুধবার (১১ মে) বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বার্ক) মিলনায়তনে কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের সাম্প্রতিক অর্জন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মশালায় তিনি এ নির্দেশ দেন।
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘ভোজ্যতেল আমদানিতে বছরে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি খরচ হচ্ছে। ডাল আমদানি করতে হচ্ছে ৬ থেকে ৭ লাখ টন, তাতেও প্রচুর অর্থ বিদেশে চলে যাচ্ছে। আমাদের দেশে পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন চরাঞ্চলে ডাল ও তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন হচ্ছে। ধানের উৎপাদনকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে অতিরিক্ত ফসল হিসেবে আরও কোথায় কোথায় এসব ফসলের উৎপাদন করা যায়, তা খুঁজে বের করতে হবে। একই সঙ্গে গবেষণা বাড়াতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘ভোজ্যতেলের ৯০ শতাংশই আমদানি করতে হয়। আমরা আমদানির অর্ধেকও উৎপাদন করতে পারি কিনা, সেটা দেখতে হবে। আমাদের সে সক্ষমতা রয়েছে। কোথায় কোথায় সরিষার উৎপাদন বাড়ানো যায়, সেটা নির্ধারণ করতে হবে। এক্সটেনশন সিস্টেম ডেভেলপ করতে হবে, যাতে দ্রুত এর উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। এটি করতে পারলে আগামী ৩-৪ বছরের মধ্যে ভোজ্যতেলের চাহিদার ৪০ ভাগ স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা সম্ভব হবে।’ তবে এসব পণ্যের উৎপাদন বাড়াতে হলে ভালো মানের গবেষণার দরকার বলে জানান ড. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘সরকার গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ দিচ্ছে। এ টাকা দিয়ে কী মানের গবেষণা হচ্ছে, কোন কোন জার্নালে প্রকাশিত হচ্ছে, সেগুলো মানসম্পন্ন কিনা এ বিষয়গুলো দেখা হবে। শুধু গবেষণা করলে হবে না, মাঠ পর্যায়ে তা কী ফলাফল বয়ে আনছে, সে বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।’ পেঁয়াজের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘কদিন আগেই পেঁয়াজের ভরা মৌসুমে কৃষকরা দাম পাচ্ছিলেন না। এখন একটু দাম বৃদ্ধির কারণে কৃষকরা একটু মূল্য পাচ্ছেন। কৃষক যাতে দাম পান, সে জন্যই আমদানি কিছুটা বন্ধ রাখা হয়েছে। কারণ, কৃষকেরা উৎপাদন খরচ তুলতে না পারলে আগামী বছর পেঁয়াজ চাষে আগ্রহী হবেন না।’ অনুষ্ঠানে কৃষি সচিব সায়েদুল ইসলাম, বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ বখতিয়ার ও কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন।