সয়াবিনের বিকল্প হিসেবে রাইস ব্র্যান ও শর্ষে উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, দেশে এখন রাইস ব্র্যান ৫০ থেকে ৬০ হাজার টন উৎপাদন হয়। এটিকে সাত লাখ টনে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। সেটি করতে পারলে মোট চাহিদার ২৫ শতাংশ পূরণ করা সম্ভব হবে। তা ছাড়া সয়াবিনের চেয়ে রাইস ব্র্যান ভালো। সয়াবিন তেল শরীরের জন্য ক্ষতিকর। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে দ্রব্যমূল্য পর্যালোচনা-সংক্রান্ত টাস্কফোর্স কমিটির দ্বিতীয় সভা শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। বৈঠকে বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধি, গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে গম আমদানির ৬৪ শতাংশ আসে ভারত থেকে। দেশটি গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলেও তা বাংলাদেশের জন্য পুরোপুরি প্রযোজ্য হবে না। তা ছাড়া এ মুহূর্ত দেশে গমের যে মজুত, তাতে ভয়ের কিছু নেই। তেলের দাম প্রসঙ্গে টিপু মুনশি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার কারণে দেশের বাজারে তেলের দাম বাড়ছে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে সাত লাখ টন রাইস ব্র্যান তেল উৎপাদন সম্ভব। তাই আমদানির ওপর নির্ভরশীল না থেকে সরকার রাইস ব্র্যান তেলের উৎপাদনের দিকে নজর দিচ্ছে। সেটা হলে ২৫ শতাংশ তেলের চাহিদা পূরণ সম্ভব হবে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সয়াবিনের চেয়ে রাইস ব্র্যান ভালো। শরীরের জন্যও উপকারী। সয়াবিন তেল শরীরের জন্য ক্ষতিকর। ভোজ্যতেল আমদানিতে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ৫ মে দেশে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়। ৭ মে থেকে নতুন দাম কার্যকর হয়েছে। নতুন দাম অনুযায়ী, বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের খুচরা মূল্য ১৯৮ টাকা। খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৮০ টাকা। খোলা পাম তেল প্রতি লিটার ১৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ভোজ্যতেলের বাজারে অস্থিরতা শুরু হয় গত বছর থেকে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ভোজ্যতেলের দাম বিশ্ববাজারে অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। তবে মার্চের শেষ ও এপ্রিলের শুরুতে দাম কমে যুদ্ধের প্রায় আগের অবস্থার কাছাকাছি চলে আসে। তবে এই ধারা বেশি দিন থাকেনি। এপ্রিলের শেষে বিশ্বের শীর্ষ পাম তেল উৎপাদক ও রপ্তানিকারক দেশ ইন্দোনেশিয়া রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এরপর বিশ্ববাজারে পাম ও সয়াবিনের দামের আগের সব রেকর্ড ভেঙে যায়।