ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ছাত্রলীগের হামলায় ছাত্রদলের অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
হামলায় আহতরা হলেন ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আফসান মো: ইয়াহিয়া, সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক আকতারুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক এজাজুল কবির রুয়েল, সজীব মজুমদার, শরীফুল ইসলাম শরীফ, জহুরুল হক হলের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল, আহবায়ক সদস্য মানসুরা আলমসহ প্রমুখ। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা যায়। জানা যায়, কয়েক দিন আগে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের একটি বক্তব্যের কারণে তখন থেকেই ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ফেসবুকে মারধরের হুমকি দিয়ে আসছিলেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এর সূত্র ধরে গত রোববার তাদের হামলায় টিএসসিতে ছাত্রদলের তিনজন নেতাকর্মী আহত হন। এরপরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে সংবাদ সম্মেলন করার ঘোষণা দেয় ছাত্রদল।
এদিকে তাদের প্রতিহত করার জন্য আগে থেকেই পুরো ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে ছিলেন ছাত্রলীগের বিভিন্ন হলের নেতাকর্মীরা। সকাল ১০টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেয়ার জন্য ছাত্রদল ঢাকা মেডিক্যাল এলাকা থেকে ক্যাম্পাসে প্রবেশকালে শহীদ মিনারের কাছাকাছি এলে কাজল দাসের নেতৃত্বে জগন্নাথ হল, মেহেদী হাসান শান্ত’র নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু হল এবং তানভীর শিকদারের নেতৃত্বে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়।
দ্বিতীয় দফায় সাড়ে ১১টার দিকে আবারো ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে কার্জন হল এলাকায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হামলার শিকার হন। এ সময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা প্রতিরোধের চেষ্টা করলে দুই পক্ষের মধ্যে ঢিল ছুড়াছুড়ি হয়। একপর্যায়ে ছাত্রদল নেতারা পিছু হটে। এ সময় কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিবসহ তিনজন আহত হন। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থেমে থেমে বিচ্ছিন্নভাবে সংঘর্ষ চলছে। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, আমাদের সাধারণ সম্পাদক সেদিন কী বক্তব্য দিয়েছেন সেটি ব্যাখা করার জন্য আজকে আমরা সংবাদ সম্মেলন ডেকেছি। এরপর আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ঢাকা মেডিক্যালের জরুরি বিভাগের গেইট থেকে শহিদ মিনার হয়ে প্রায় পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী টিএসসি যাচ্ছিলাম। তিনি বলেন, তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের কারণে আমরা কোনো স্লোগানই দেইনি। এরপর বিভিন্ন হলের ছাত্রলীগ কর্মীরা আমাদের সামনে আসে। আমরা তাদের কাছে জানতে চেয়েছি আমাদের অপরাধ কী, কেন আমাদের উপর হামলা চালানো হচ্ছে? বারবার এটা জানতে চাওয়ার পরও তারা কোনো উত্তর না দিয়ে আমাদের উপর হকস্টিক, লোহার রড, স্ট্যাম্প ও চাপাতিসহ আক্রমণ করে। এতে আমাদের নারী নেত্রী লাি তসহ ৩০ জন আহত হয়েছেন। এখন আপনারা কী করবেন জানতে চাইলে রাকিব বলেন, এখন আমাদের প্রথম কাজ হচ্ছে আমাদের আহত নেতাকর্মীদের চিকিৎসা করানো। এরপর আমাদের কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক হাই কমান্ডের সাথে কথা বলে যেই সিদ্ধান্ত নিবেন সেটির আলোকেই আমরা পরের কর্মসূচি ঘোষণা করবো। ঢাবি শাখার সদস্য সচিব আমান উল্লাহ আমান বলেন, আমরা প্রতিদিনের মতো স্বাভাবিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ক্যাম্পাসের দিকে যাচ্ছিলাম। ক্যাম্পাসের অবস্থা আপনারা জানেন। গতকালকে তারা ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে হামলা করার কথা বলে। তারই অংশ হিসেবে আমাদের ওপর অতর্কিতে হামলা করে। আমাদের নেতাকর্মীরা মেডিক্যালের এমারজেন্সিতে আছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা মনে করি, আমাদের শিক্ষার্থীবান্ধব কর্মসূচিতে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে এই হামলা করেছে। তাদের হাতে লাঠি-সোটা, হকিস্টিকসহ সব ধরনের দেশীয় অস্ত্র ছিল, আপনারা সেগুলো দেখেছেন।