বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মাঠে নেমেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সারাদেশে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে। সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত নেতাকর্মীরা ঘরে ফিরবে না।’
গতকাল শুক্রবার (২৭ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘নির্দলীয় নিরপক্ষে সরকারের অধীনে নির্বাচন ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার’ দাবিতে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) একাংশ এ সভার আয়োজন করে। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগের রাহু থেকে জনগণকে মুক্ত করতে হবে। বিএনপি কোনো ব্যক্তি বা দলকে ক্ষমতায় বসাতে নয়, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আন্দোলনে নেমেছে।’
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার পর প্রধান বিচারপতি বিবৃতি না দেওয়ায় ক্ষোভ জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা সুপ্রিম কোর্টে ঢুকে হামলা করেছে। অথচ প্রধান বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা একটি বিবৃতি পর্যন্ত দিলেন না। কারণ সরকার আজকে সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের নৃশংসভাবে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে আহত করেছে ছাত্রলীগের গুণ্ডারা। শুধু ছেলেদের নয়, মেয়েদের ওপরও হামলা করেছে ওরা। মেয়েদের একজন আইসিইউতে ভর্তি হয়েছেন। ছাত্রলীগ লাঠি নিয়ে রাজপথে যেভাবে প্রতিপক্ষকে পিটিয়েছে, তা দেখে পল্টনে লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যার পৈচাশিকতা পুনরাবৃত্তি বলে মনে হয়েছে। এটাই হলো আওয়ামী লীগের চরিত্র। তারা একটি সন্ত্রাসী দল।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ তাদের প্রতিষ্ঠাতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকেও টিকতে দেয়নি। দলের কাউন্সিলে তাকে হেনস্থা করা হয়েছিল। তিনি বেরিয়ে গিয়ে নতুন দল ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি করেন। গত ১৩ বছরে আওয়ামী লীগ আমাদের নেতাকর্মীদের নির্যাতন করেছে। ৩৫ লাখ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। আমি নিজে বহুবার কারাগারে গেছি। এ অবস্থার অবসান হতে হবে।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যার যার যে অবস্থান থেকে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। এ সরকারের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। কারণ এ সরকারের অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয়।’
এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তাফা জামাল হায়দার, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বাবু নিতাই রায় চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাগপা সভাপতি খন্দকার লূৎফর রহমান, এনডিপির চেয়ারম্যান আবু তাহের, এনডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, ডিএল সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সিনিয়র সহ-সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার টি এস আয়ুব, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট অহিদুজ্জামান দিপু প্রমুখ।