সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন

মেয়েদের ট্র্যাভেল ফ্রেন্ডলি গেটআপ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৭ জুন, ২০২২

প্রতিদিনই বিভিন্ন বয়সী নারীরা পড়াশোনা, চাকরি বা ব্যবসার সুবাদে শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাতায়াত করছে। কেউ যায় ইউনিভার্সিটিতে, কেউ অফিসে বা কেউ অন্য জরুরি প্রয়োজনে অথবা নিছক বন্ধু-বান্ধবদের সাথে আড্ডা দিতে। সবাইকেই প্রতিদিন গাড়ির যানজট আর মানুষের ভিড়ের সাথে যুদ্ধ করে ট্র্যাভেল করতে হয়। রাশ আওয়ার হোক আর না হোক, এই ভিড় সারাক্ষণই লেগে থাকে। তাই এসময় এমনভাবে ড্রেসআপ করতে হবে যা একই সাথে সুন্দর, আরামদায়ক ও ট্র্যাভেল ফ্রেন্ডলি।
পোশাক: পোশাক সিলেকশনের ক্ষেত্রে সবার আগে কমফোর্টকে প্রাধান্য দিতে হবে। বাস, রিকশা বা সিএনজিতে চলাফেরা করার সময় দ্রুত উঠা-নামা করতে হয়। সুতরাং খুব বেশি লম্বা ঝুলের পোশাক পড়লে অ্যাকসিডেন্ট করার ভয় থাকে। রিকশার চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে যাবার রিস্কের কথা সবাই জানে, তবুও বেশিরভাগ সময়ই ওড়না গুছিয়ে রিকশায় বসার কথা অনেকের মনে থাকে না।
যারা জর্জেট বা সিল্কের ওড়না পড়েন যা বারবার পিছলে নেমে যায়, তারা দুইপাশে সমান লেন্থ রেখে ওড়নাটা সেফটিপিন লাগিয়ে পরতে পারেন। এখন লম্বা ঝুলের কামিজ বা গাউন পড়ার ট্রেন্ড চলছে। এক্ষেত্রেও জামার ঝুল তুলে বসতে হবে যাতে চাকা পর্যন্ত পৌঁছাতে না পারে। রেগুলার চলাফেরার জন্য শাড়ি খুব বেশি কমফোর্টেবল না। যারা সবসময় পরে অভ্যস্ত তারা হয়ত সবখানেই শাড়ি পড়ে চলাফেরা করতে পারেন কিন্তু ভার্সিটি ও অফিসে যাতায়াতের জন্য সালওয়ার কামিজ ও কুর্তি পারফেক্ট। গোড়ালি পর্যন্ত লম্বা গাউন পড়ে বাসে ওঠানামা খুবই রিস্কি। একবার পায়ের নিচে জামা পরলে হোঁচট খেয়ে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। এখন তো বিভিন্ন অ্যাপের কল্যাণে মেয়েদের মোটরবাইকে চড়ার প্রবনতা বেড়ে গিয়েছে।
রাস্তায় নিজের বাইক বা স্কুটি চালানো মেয়ের সংখ্যাও অনেক বেড়ে গিয়েছে। বাইকে চলার সময় লম্বা ঝুলের পোশাক অ্যাভয়েড করা উচিত। বাইক রাইডারদের জন্য সাধারণত সিগারেট প্যান্ট, জিন্স বা গ্যাবার্ডিনের প্যান্ট, কুর্তি, টপস, কামিজ ইত্যাদি পরা ভাল। স্কার্ট, শাড়ি, গাউন পরে বাইকে চলাফেরা ঝামেলা। যারা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করেন তাদের জন্য নরম সুতি, লিলেন, ক্রেপ কাপড় আরামদায়ক। মোটা জর্জেট বা সিল্ক কাপড় তাপ অনেকক্ষণ ধরে রাখে তাই বেশি গরম হয়ে থাকে।
জুতা: এবার আসি জুতার প্রসঙ্গে। ড্রেসের মত জুতাও জায়গা আর যানবাহন অনুযায়ী সিলেক্ট করতে হবে। বাস, রিকশা, বাইকে চলাচল করলে সবচেয়ে কমফোর্টেবল জুতা হবে- ‘সু’। সু এর চেয়ে আরামদায়ক জুতা আর হয় না। যেকোনো যানবাহনে সহজে ও দ্রুত ওঠানামা করার ক্ষেত্রে সাধারণত ব্যালেরিনা সু, ফ্লিপফ্লপ স্যান্ডেল, ফ্ল্যাট স্যান্ডেল, সেমিহিল সু, স্নিকার, লোফার সু, ক্যানভাস সু ইত্যাদি পড়া সবচেয়ে কমফোর্টেবল। হাঁটাহাঁটি যারা একটু বেশি করেন তাদের জন্যেও এসব জুতা অনেক আরামদায়ক। কোনভাবেই হাইহিল পড়ে বাসে চলাফেরা করা উচিত না। স্পেশালি রাশ আওয়ারে বাসে ওঠার জন্য অনেক মানুষ ধাক্কাধাক্কি করে, তখন হিল পড়ে বাসে ওঠার চেষ্টা খুবই রিস্কি। হোঁচট খেয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
অন্যান্য এক্সেসরিজ: ট্রাভেল করার জন্য শুধুমাত্র জামা-জুতাই নয়, ব্যাগের ব্যাপারেও কিছু জিনিস লক্ষ্য রাখা দরকার। যেমন এই গ্রীষ্মে ট্র্যাভেলের সময় একটা ছাতা, পানির বোতল, সানগ্লাস, ছোট্ট সুন্দর হাতপাখা, বডি স্প্রে, টিস্যু, রুমাল ইত্যাদি রাখা খুবই দরকারি। এজন্য ছোট পার্স বা সাইড ব্যাগের চেয়ে একটু বড় বা মাঝারি সাইজের ব্যাগ ক্যারি করা উচিত। সবচেয়ে পারফেক্ট হল ব্যাকপ্যাক। এগুলো এখন বিভিন্ন সাইজের ও ডিজাইনের হয়। মেয়েদের জন্য সুন্দর ও কিউট ডিজাইনের কাপড়, রেক্সিন ও লেদারের ব্যাকপ্যাক সব মার্কেটেই অ্যাভেইলেবল। অনেকেই লম্বা জার্নির সময় ফোনে গান শুনতে পছন্দ করে। ইয়ারফোন তাদের জন্য একটা মাস্ট আইটেম। এছাড়া অসম্ভব জরুরী কিছু জিনিস যা সব মেয়েদের ব্যাগেই থাকা উচিত তা হল অ্যান্টি-কাটার, সেফটিপিন, সুইস নাইফ, পেপার স্প্রে এগুলোর কোন একটি। আজকাল প্রচুর অঘটনের কাহিনী শোনা যাচ্ছে। সিএনজি, বাস, রিকশা কোনকিছুই পুরোপুরি সেইফ না। ছিনতাই, কিডন্যাপ, হ্যারাসমেন্ট, মোলেস্ট, রেইপের মত ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে। তাই সাবধান তো হতেই হবে, সেইসাথে আত্মরক্ষার জন্যেও সবসময় প্রস্তুত থাকা লাগবে। মেয়েদের ট্র্যাভেল ফ্রেন্ডলি গেটআপ এ এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মেয়েদের ঘরের কোণে পড়ে থাকার সময় আর নেই। মেয়েরাও এখন ছেলেদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে চলছে। অসংখ্য প্রতিকূলতার মাঝেও এই পথচলা যতটা সম্ভব মসৃণ করতে হবে আমাদেরই। তাই সবার উচিত যার যার কমফোর্ট জোনের ভিতর থেকে নিজের সেইফটি নিশ্চিত করে ট্র্যাভেল করা।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com