বুধবার, ০২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৪২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
কিশোরগঞ্জে ভাসমান সবজি চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা চৌদ্দগ্রামে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে জোরপূর্বক সীমানা প্রাচীর নির্মাণের অভিযোগ কালিয়ায় কন্যা শিশু দিবস পালিত ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে সহকারী শিক্ষকদের মানববন্ধন তারাকান্দায় ১০ গ্রেডে উন্নীতের দাবিতে শিক্ষকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি কালীগঞ্জে বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রেখে শিক্ষকদের মানববন্ধন : মিশ্র প্রতিক্রিয়া ডিমলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মিলন সম্পাদক পাভেল কালের বিবর্তনে বিলুপ্তির পথে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী কাচারি ঘর মানিকগঞ্জে সাড়ে ৪লাখ ছাগলের বিনামূল্যে টিকাদান কর্মসূচী শুরু আন্দোলনে নিহত নয়নকে বীরের মর্যাদা দেয়া হবে-দুলু

ভারত সরকারকে মুসলিম উম্মাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার আহবান

খবরপত্র ডেস্ক
  • আপডেট সময় বুধবার, ৮ জুন, ২০২২

মহানবী (সা.) কে নিয়ে আপত্তির মন্তব্যের প্রতিবাদে ঢাকা নগরী জামায়াত
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, ভারতের একটি উগ্রবাদী গোষ্ঠী এখন দেশটিতে ইসলাম, ইসলামী মূল্যবোধ ও ইসলামী স্মারকগুলোকে বিশেষভাবে টার্গেট করেছে। সে ধারাবাহিকতায় ক্ষমতাসীন বিজেপির মুখপাত্র নুপুর শর্মা ও নবীন কুমার জিন্দাল মহানবী (সা.) ও উম্মুল মোমেমিন হযরত আয়েশা (রা.)কে নিয়ে আপত্তিকর ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। তিনি অবিলম্বে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের জন্য অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করে ভারত সরকারকে মুসলিম উম্মাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার আহবান জানান।
তিনি গত ৭ জুন রাজধানীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত ভারতের ক্ষমতাসীন দলের দুই শীর্ষনেতার মহানবী (সা.) ও হযরত আয়েশা (রা.)কে নিয়ে আপত্তির মন্তব্যের প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য প্রত্যাহারের করে মুসলিম উম্মাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে এক বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে এসব কথা বলেন। বিক্ষোভ মিছিলটি মহাখালী রেল গেইট থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে টাংগাইল বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম, মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ডাঃ ফখরুদ্দীন মানিক, ঢাকা মহনগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য জিয়াউল হাসান, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ, ইয়াছিন আরাফাত ও জামাল উদ্দীন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী উত্তরের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, পশ্চিম সভাপতি সাব্বির বিন হারুন ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি পারভেজ হোসেন প্রমূখ।
ড. এম আর করিম বলেন, বাবরী মসজিদ বিতর্কে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় উদ্রবাদীরা বিজয়ী হওয়ার পর তারা এখন নতুন করে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। ধর্মান্ধরা জ্ঞানবাপী মসজিদ, আগ্রার তাজমহল ও দিল্লির কুতুব মিনার দখলের অপচেষ্টায় লিপ্ত। সম্প্রতি বিজেপি নেতাদের মহানবী (সা.)কে নিয়ে কটূক্তির পর মুসলিম দেশগুলো অতীতের নিরবতা ভঙ্গ করে এবার নড়েচেড়ে বসেছে। কাতার, কুয়েত ও ইরান ভারতের দূতদের তলব করে বিষয়টির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। এছাড়া ওআইসি, সৌদি আরব ও পাকিস্তান এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বাংলাদেশ দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ হওয়া স্বত্তেও ক্ষমতাসীন সরকার এই দুঃখজনক ঘটনার কোন নিন্দা না করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আবেগ-অনুভূতি এবং বিশ্ব নবী (সা.) ও তার পরিবারের প্রতি চরম অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছে। তিনি গর্হিত মন্তব্যের জন্য সরকারকে জাতীয় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ এবং অন্যায়ভাবে কারাগারে আটক আল্লামা সাঈদীসহ সকল আলেম-উলামার অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার আহবান জানান।
তিনি বলেন, ভারতের ধর্মান্ধ ও উগ্রবাদীরা মূলত ইসলাম বিরোধীতা ও মুসলিম বিদ্বেষকে রাজনৈতিক হাতিয়ার বানিয়েছে। মূলত, ভারতের রাজনীতিতে উগ্রবাদীদের উত্থান পুরো উপমহাদেশকেই অস্থিতিশীল করে তুলেছে। সাম্প্রতিক ঘটনা প্রবাহে প্রমাণ হয় দেশটির উগ্রবাাদীরা পরিকিল্পতভাবেই মুসলিম বিদ্বেষ উস্কে দিয়ে আগামীতে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চায়। কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ আলাদা। কারণ, এই ইস্যুতে পুরো মুসলিম উম্মাহই এখন ঐক্যবদ্ধ। তাই এবারের খেলা তাদের জন্যই বুমেরাং হতে বাধ্য। তিনি ভারতে মুসলিম বিদ্বেষ মোকাবেলায় ওআইসি, আবরলীগসহ বিশ্ব মুসলিমকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ: ভারতে ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতাদের মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সা. ও তার সহধর্মিণী আয়েশা রা. সম্পর্কে চরম অবমাননাকর মন্তব্যের প্রতিবাদে গত ৮ জুন ২০২২ বুধবার সকালে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি জননেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে শুরু হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে এক প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

বিক্ষোভ মিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসের শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী যথাক্রমে এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন ও দেলওয়ার হোসাইন, ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী যথাক্রমে কামাল হোসাইন ও ড. আব্দুল মান্নান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুস সালাম, আব্দুর রহমান, মোবারক হোসাইন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী পুর্বের সভাপতি মু. আবুল খায়ের, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারী তৌহিদুল ইসলাম সহ ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের বিভিন্ন থানা আমীর, সেক্রেটারি ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী প্রতিবাদ সমাবেশে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ভারতে ক্ষমতাসীন দল বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মা ও দিল্লি শাখার গণমাধ্যম প্রধান নবীন কুমার জিন্দাল রাসূল সা. কে নিয়ে কটূক্তি করে সমগ্র মুসলিম উম্মাহর কলিজায় আঘাত দিয়েছে। একজন মুসলমানদের কাছে প্রিয়নবী সা. এর সম্মান নিজের জীবনের চেয়েও মূল্যবান। ফলে কোনভাবেই রাসূল সা. এর সামান্যতম অসম্মান আমরা বিশ্বের মুসলমানেরা বরদাশত করতে পারিনা। আমরা ঘৃণার সাথে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বিজেপি সরকার সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা তৈরি করে বিশ্বকে হুমকির মুখে ফেলছে। সাম্প্রদায়িক বিজেপি সরকার শুধু বিশ্বের জন্য নয় ভারতের জন্যও হুমকি স্বরূপ। রাসুল সা. এর অবমাননার প্রতিবাদে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিবাদ জানালেও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এখনো প্রতিবাদ না করায় মুসলিম উম্মাহর অংশ হিসেবে আমরা চরম ক্ষুব্ধ ও ব্যথিত। আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে দাবী জানাই, বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে অবিলম্বে জাতীয় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব পাশ করতে হবে এবং ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করে রাসুল সা. এর অবমাননার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতে হবে।

তিনি আরও বলেন, রাসূল (সা.)-এর অবমাননা সর্বকালে অগ্রহণযোগ্য ও সবদিক থেকে ধিক্কারযোগ্য। কোনো সভ্য জাতি বা নেতা কারো মৌলিক বিশ্বাসের উপর এভাবে আঘাত হানতে পারে না। ভারতে রাসূল সা-কে নিয়ে কটূক্তি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটা মূলত মুসলমানদের বিরুদ্ধে চলা ভারতের সাম্প্রদায়িক বিজেপি সরকারের ধারাবাহিক ষড়যন্ত্রেরই বহিঃপ্রকাশ। এর আগেও ভারতে কুরআনের আয়াত পরিবর্তন চেয়ে রীট করা হয়েছে, মুসলিম নারীদের হিজাব পরিধানে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে, মুসলমানদের উপর গণহত্যা, মসজিদ ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন নিপীড়নমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করেছে এই বিজেপি সরকার। তাদের এসব নীতিহীন অপকর্ম ও কান্ডজ্ঞানহীন আচরণ শান্তিকামী বিশ্ববাসীকে হতবাক করেছে। ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানো আন্তর্জাতিক আইনের লংঘন ফলে আন্তর্জাতিক আদালতেই এর বিচার করতে হবে। তিনি বিজেপি সরকারের মুসলিম নিপীড়ন ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ও.আই.সি সহ মুসলিম রাষ্ট্র সমুহকে আরও কার্যকর ভূমিকা পালনের উদাত্ত আহবান জানান।
ড. মাসুদ আরও বলেন, আল্লাহর নবী ও মা আয়েশা সম্পর্কে কটূক্তি ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য মূর্খতা ও অজ্ঞতার প্রমাণ। এই নিন্দনীয় কাজ বিশ্বের প্রতিটি বিবেকবান মানুষের হৃদয়ে কুঠারাঘাত করেছে। ইতোমধ্যেই মুসলিম বিশ্ব এই অবমাননার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে, চারিদিকে প্রতিবাদের ঝড় বইছে। দেশে দেশে ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন সুপার স্টোর ও শপিং মল থেকে ভারতীয় পণ্য সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। এটা প্রিয়নবী স.-এর প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। আসুন আমরাও নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রিয় নবী (সা.) এর মর্যাদা রক্ষায় ভারতীয় পণ্য বয়কট ও প্রতিবাদের আওয়াজ তুলি। একইসাথে তিনি ভারতের বিজেপি সরকারকে অন্যের ‘বিশ্বাস ও ধর্মের প্রতি সম্মান জানানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, অবিলম্বে কটূক্তিকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করে এঘটনার জন্য মুসলিম বিশ্বের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। প্রেসবিজ্ঞপ্তি




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com