মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪, ১১:৫৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
নারীদের গৃহস্থালির কাজের স্বীকৃতি দেওয়া হবে: অর্থ প্রতিমন্ত্রী চুয়াডাঙ্গায় বাজারে উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন জাতের লিচু সাতক্ষীরায় রেমালের ব্যাপক তান্ডব ; ঢাল হয়ে রক্ষা করেছে সুন্দরবন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এবার ঈদে ১৫’শ কোটি টাকার পশু বেচাকেনার আশা সরকারের কাছের লোকেরাই সিন্ডিকেট করে জনগণের পকেট কাটছে : নজরুল ইসলাম এ সরকার দেশের অর্থনীতিকে একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছে : রিজভী ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ ওবায়দুল কাদেরের ২০২৯ সাল পর্যন্ত নগদ সহায়তা অব্যাহত চান ব্যবসায়ীরা সাতক্ষীরায় ফলন কম হওয়ায় এ বছর আমের দাম চড়া যুক্তরাষ্ট্রে ঝড়ের তাণ্ডবে নিহত ১৪, ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ৩ রাজ্যে

গোপালপুরে যানজটের সড়কে অবৈধ বাসস্ট্যান্ড

সেলিম হোসেন (গোপালপুর) টাঙ্গাইল :
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৩ জুন, ২০২২

গোপালপুরে একমাত্র ক্ষীণ প্রধান সড়কের বাইপাস সড়ক, বাসটার্মিনাল ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা না থাকায় যানজটে নাকাল নগরবাসী। এখানে স্কুল, কলেজ ও দোকানের সামনেই যত্রতত্র গড়ে উঠেছে ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা ও সিএনজি স্ট্যান্ড। নানা অজুহাতে প্রভাবশালী পরিবহন মালিকরা দেড় শতাধিক বাস রেখে প্রধান সড়ক জবরদখল করে গড়েছে অবৈধ বাসস্ট্যান্ড। ক্ষীণ সড়কটিতে অনিয়মতান্ত্রিক ও অদক্ষ চালকের বেপোরোয়া গতির যান চলাচলের কারণে যানজটের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দুর্ঘটনা। এতে অকালে প্রাণ হারানোসহ পঙ্গুত্ববরণ করছে মানুষ। তবে, পৌর কর্তৃপক্ষের স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড ও বাইপাস সড়ক নির্মাণ এখনো প্রকল্পতেই সীমাবদ্ধ। জানা যায়, বৈরাণ নদীকে ঘিরে ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় গোপালপুর পৌরসভা। প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ এ শহরে প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য রয়েছে একমাত্র সড়ক। বেশ ক’টি আঞ্চলিক সড়কের মিলনস্থল এ সড়ক। এটি সরু হওয়ায় দু’টি ট্রাক ও বাস পাশাপাশি চলতে পারে না। বাইপাস সড়ক না থাকায় আঞ্চলিক সড়কের সব যানবাহন শহরের এ সড়ক দিয়ে চলাচল করে। তাই, যানজট ও সড়ক দুর্ঘটনার সাথে যুদ্ধ করে নাগরিক জীবন হয়ে পড়েছে অচল। স্কুল শিক্ষক শফিকুল ইসলাম তালুকদার জানান, প্রতিদিন শহরে যানজটের কারণে সঠিক সময়ে শিক্ষার্থীরা স্কুলে উপস্থিত হতে পারেনা। আবার ছুটির পর সময়মত বাসায় পৌঁছাতেও পারেনা। অনেক শিক্ষার্থী রাস্তা পারাপারের সময় দুর্ঘটনায় আহত হয়। স্কুল গেটের সামনে অটোরিকশা স্ট্যান্ড থাকায় সারাক্ষণ কোলাহল লেগেই থাকে। ফলে পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটে। মানবাধিকারকর্মী আজমল খান জানান, যানজটের কারণে মানুষ অতিষ্ঠ। মনে হয়, এটি বাস, ট্রাক ও ব্যাটারিচালিত অটোবাইকের শহর। দুর্ঘটনা এখানে স্বাভাবিক চিত্র। ঝুঁকি নিয়েই আসা-যাওয়া করতে হয়। কয়েক বছরের ব্যবধানে এ সড়কে স্কুলের প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন পথচারী নিহত হয়েছেন। সু-শাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কমিটির সভাপতি অধ্যাপক বাণীতোষ চক্রবর্তী জানান, পরিবহন মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসন এদের টিকি স্পর্শ করতে পারে না। নাগরিক ভোগান্তি ঘটিয়ে সড়কে জবরদখল করে মাসের পর মাস পরিবহন ব্যবসা করার নিন্দা জানান তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নাগরিকরা জানান, বাসস্ট্যান্ড খালি রেখে শহরের ব্যস্ততম সড়ক জবর দখল ও নাগরিকদের জিম্মি করে গায়ের জোরেই পরিবহন ব্যবসা চলছে। গোপালপুর সরকারি কলেজের সামনে প্রতিনিয়ত সড়কের বাম পাশের লন জুড়ে সারিবদ্ধভাবে বাস-ট্রাক রাখা হয়। গোপালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল মোমেন বলেন, উপজেলা সদরে কোনো বাস ও ট্রাকস্ট্যান্ড নেই। মালিকেরা শতশত বাস-ট্রাক শহরের প্রধান সড়কের নন্দনপুর মোড় থেকে সমেশপুর পর্যন্ত সারিবদ্ধভাবে রেখে দেন। অনেক সময় সড়কের পাশে রেখেই বাসে যাত্রী ওঠানামা করানো হয়। ব্যস্ত সড়কের বড় অংশজুড়ে বাস ও ট্রাক রাখায় শুধু যানজটই হয় না, ঘটে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। শহরের বাইরে একটি স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে। বাস মালিক সমিতির সভাপতি রহমাতুল কিবরিয়া বেলাল জানান, বর্ষাবাদলে পুরোনো বাসস্ট্যান্ডটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে যায়। জমি ভাড়া নিয়ে এ অস্থায়ী বাসস্ট্যান্ড চালানো হয়। প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও এখানে সরকারি বাসটার্মিনাল নেই। সরকার নতুন কোনো বাসটার্মিনাল নির্মাণ না করে দেয়া পর্যন্ত অগত্যা সড়কেই বাস রাখতে হয়। তিনি আরো জানান, পুরাতন পেট্রোল পাম্পের সামনে পরিকল্পিতভাবে একটি আধুনিক বাসস্ট্যান্ডের জন্য আবেদন করা হয়েছে। যা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন। পৌর মেয়র রকিবুল হক ছানা বলেন, নন্দনপুর মোড় থেকে বৈরাণ নদী ক্রস করে ভুয়ারপাড়া এবং মধুপুর ভট্ট থেকে সূতি পর্যন্ত দু’টি বাইপাস সড়ক নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলেই যানজট নিরসন করা হবে। এদিকে, নানা জটিলতায় নতুন বাস টার্মিনাল নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকারের বরাদ্ধ এক কোটি টাকা ইতিপূর্বে ফেরত গেছে। পেট্রল পাম্পের নিকট বাসস্ট্যান্ড করার জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগের বরাদ্ধকৃত জায়গায় সরকারি খাদের চালগম খরচ হলেও পরে সেটি বেদখল হয়ে যায়। বর্তমানে বাসস্ট্যান্ডের পাশেই একোয়ার করার মত ৩৫বিঘা জমি পতিত রয়েছে। কিন্তু বড় বাসটার্মিনাল করা নিয়ে নানামুখি লাভালাভি ও টানাপোড়ন থাকায় স্থায়ী বাসটার্মিনাল নির্মাণে অনিশ্চয়তা রয়েছে। তবে, রাস্তার উপর গাড়ি রেখে নাগরিকদের কষ্ট দেয়া উচিৎ নয়। স্থানীয় সংসদ সদস্য ছোট মনির জানান, জনদুর্ভোগ কখনোই সমর্থন যোগ্য নয়। একটি বাইপাস রোড ও নতুন বাসস্ট্যান্ড করার চেষ্টা হচ্ছে। জমিও খোঁজা হচ্ছে। কিন্তু সেটি সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। বাসটার্মিনাল নির্মাণে সরকারের পাশাপাশি পরিবহন মালিকদেরকেও এগিতে আসতে হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com