৪৮ ঘণ্টা পর হলেও বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখনো স্থিতিশীল নয় এবং সংকট পুরোপুরি কাটেনি। ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণের পর হার্টের বাকি দুই ব্লক নিয়ে কাজ করা হবে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। গতকাল সোমবার (১৩ জুন) এ তথ্য নিশ্চিত করেন তিনি। হঠাৎ অসুস্থ হওয়ায় গত শুক্রবার দিবাগত রাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে ভর্তি করানো হয়।গত বছরের এপ্রিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন খালেদা জিয়া। এ নিয়ে তাকে পাঁচ দফা এভারকেয়ারে ভর্তি করা হলো। সবশেষ গত ৬ এপ্রিল নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ওই হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।
উল্লেখ্য, দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্ত সাপেক্ষে সাজা স্থগিত করে তাকে সাময়িকভাবে মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর থেকে গুলশানের বাসায় থাকছেন তিনি।
খালেদা জিয়ার কয়লাখনি দুর্নীতি মামলার অভিযোগ গঠন ২৫ সেপ্টেম্বর: দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ অন্যান্য আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল সোমবার মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকায় আদালতে হাজির হতে পারেননি। এ জন্য আসামির পক্ষে তার আইনজীবী সময়ের আবেদন করেন। কেরানীগঞ্জ কারাগারে নবনির্মিত ভবনে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-২ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক সৈয়েদা হোসনে আরা সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে নতুন এ দিন ধার্য করেন। বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় আসামী ছিলেন ১৩ জন। এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর নেতা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদ- কার্যকর হয়েছে। এ ছাড়া স¤প্রতি আরেক আসামি ব্যারিস্টার আমিনুল হক মারা গেছেন। ফলে বর্তমানে এ মামলার আসামি ১০ জন। এর মধ্যে আরো দু’জন সাবেক কৃষিমন্ত্রী এম কে আনোয়ার ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী এম শামসুল ইসলাম ও ইতোমধ্যে মারা গেছেন। অন্য আসামিরা হলেন খালেদা জিয়া, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন, মোঃ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন, সাবেক জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সচিব নজরুল ইসলাম, পেট্রো বাংলার সাবেক পরিচালক মুঈনুল আহসান, সাবেক জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশারফ হোসেন। ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন। শাহবাগ থানায় মামলাটি করেন দুদকের তৎকালীন সহকারি পরিচালক মোঃ সামছুল আলম। একই বছরের ৫ অক্টোবর ১৬ আসামির বিরুদ্ধে দুদকের উপ-পরিচালক মোঃ আবুল কাসেম ফকির অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, কয়লা উত্তোলনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা সিএমসির সঙ্গে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তি করায় সরকারের প্রায় ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির অনুমোদন দিয়ে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি করা হয় বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।