ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটিয়ে নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিএনপি ভাববে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। গতকাল মঙ্গলবার বিএনপি নেতা মৃত গৌতম চক্রবর্তীর স্মরণসভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে তিনি এ কথা জানান। গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বক্তব্য চলাকালে সাংবাদিকদের কাছ থেকে চিরকুট পাঠিয়ে প্রশ্ন করা হয়। সেখানে সাংবাদিকরা দুটি বিষয় জানতে চান। এক হচ্ছে, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে বিধি অনুযায়ী কুমিল্লা-৬ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিনকে এলাকা থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে চিঠি দিয়েছিল। তারপরও তিনি এলাকায় অবস্থান করেন। কিন্তু কমিশন কোনো ব্যবস্থাই নিতে পারেনি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন নিয়ে এই মুহূর্তে আমাদের ভাবনা নেই। আমরা যেদিন সরকারের হাত থেকে দেশকে দখলমুক্ত করতে পারব, সেদিন-ই নির্বাচন কমিশনের পারা না পারা নিয়ে কথা বলব।’
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে গয়েশ্বর বলেন, ‘চিকিৎসকরা যা বলেছেন, তাতে করে গণতন্ত্রের মাতা ভালো নেই। দেশবাসীর মতো আমরাও প্রত্যাশা করি সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী যেন সীমিত চিকিৎসার মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেন। এজন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।’
এ সময় গৌতম চক্রবর্তীর নানা ইতিবাচক দিক তুলে ধরেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের দর্শন দিয়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ খৃস্টানসহ বাংলাদেশের মানুষের একটি পরিচয় দিয়েছিলেন। আজ সেই দর্শণে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির পতাকা তলে একত্রিত হয়েছে। জিয়াউর রহমানের সাথে গয়েশ্বরের সম্পর্কের মাপকাঠি তুলে ধরে তিনি বলেন, বিএনপি’র জন্মের আগে থেকে জিয়াউর রহমানের সাথে সম্পর্ক। আমি বিএনপি’র জন্মের আগে বিএনপি করি। সেই সময় জিয়াউর রহমানের বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের দর্শন দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে জাগিয়ে তুলেছিল। জিয়াউর রহমান দেশের মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী বহুদলীয় গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তারপথ ধরে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ নয় বছর গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে স্বৈরাচারমুক্ত করে দেশকে আবার গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি এখনো গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছেন। আশা করি, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে রাজপথের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্যদিয়ে দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং ভোটাধিকার ফিরে আসবে। এ জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। নয়াপল্টনে ভাসানী ভবনে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এই স্মরণ সভায় সংগঠনের সভাপতি হাসান জাফির তুহীনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুলের পরিচালনায় কৃষক দলের নেতাকর্মীরা বক্তব্য রাখেন।