শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৩ পূর্বাহ্ন

ঋণ পরিশোধ অর্থনীতির জন্য বোঝায় পরিণত হচ্ছে কি

ড. মইনুল ইসলাম
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন, ২০২২

৯ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের ডিজিটাল বাজেট প্রেজেন্টেশন থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট সম্পর্কে যেটুকু ধারণা পাওয়া গিয়েছিল, সেটাকে খুব অতৃপ্তিকর মনে হলেও পরবর্তী সময়ে বাজেটের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে মিডিয়ায় যেসব বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপিত হয়ে চলেছে তা থেকে বলা যায়, আগামী অর্থবছরের বাজেট চলমান মূল্যস্ফীতি সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণ এবং বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে মারাত্মক ডলার সংকট মোকাবেলাকেই অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। এ দুটো উদ্দেশ্যকেই যথাযথ বলা চলে, কারণ বেশ কিছুদিন ধরে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এগুলোকেই সংকটজনক ইস্যু হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল। বেশ কয়েক বছর বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে ১ ডলারের দাম ৮৫ টাকার আশপাশে ধরে রাখায় সফল হয়ে সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলেও ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশ এক অভূতপূর্ব ডলার সংকটে নিমজ্জিত হয়েছে, যার শুরুটা হয়েছিল আমদানি ব্যয়ের বেলাগাম বৃদ্ধির মাধ্যমে। ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে বাংলাদেশের আমদানি ব্যয় বেড়েছে ৪৬ শতাংশ। ওই দশ মাসে দেশের রফতানি আয়ও ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল, ওই দুটো বৃদ্ধির প্রবণতা হয়তো কভিড-১৯ মহামারীর অবদমিত চাহিদার মহামারী-উত্তরণ পর্বের উল্লম্ফনের স্বাভাবিক প্রতিফলন। কিন্তু ওই ভুল ভাঙতে দেরি হয়নি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর। যুদ্ধের অভিঘাতে বাংলাদেশের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ আমদানি পণ্যের দাম হু-হু করে বেড়ে যাওয়া অব্যাহত থাকায় আমদানি ব্যয়ের অনেকখানি উল্লম্ফন ঘটেছে—এটা বোঝা গেলেও ওভার ইনভয়েসিং অব ইমপোর্টস, আন্ডার ইনভয়েসিং অব এক্সপোর্টস ও হুন্ডি ব্যবসা আবার চাঙ্গা হওয়ায় দেশ থেকে বিদেশে পুঁজি পাচারও যে দ্রুত বেড়ে চলেছে, সেটা টের পেতে বিলম্ব হয়নি। কার্ব মার্কেটে ডলারের দাম বেড়ে যখন ১০৪ টাকায় পৌঁছে গেল, তখন ব্যাপারটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়াই স্বাভাবিক। বাংলাদেশ ব্যাংক দ্রুত আমদানি নিয়ন্ত্রণ পদক্ষেপ গ্রহণ শুরু করল এপ্রিল থেকেই, যার ধারাবাহিকতায় ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটেও প্রধান অগ্রাধিকার পাওয়ার কথা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, ডলার সংকট নিরসন এবং আমদানি নিরুৎসাহিত করার মাধ্যমে বাণিজ্য ঘাটতি দ্রুত কমিয়ে আনা। বিশেষত বোঝা গেল, কভিড মহামারী থেকে নিষ্কৃতি লাভের পর্বে যেভাবে দেশের আমদানি ব্যয় হু-হু করে বাড়তে শুরু করেছিল, সেটাতে প্রচ- ঘৃতাহুতি দিয়ে চলেছে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এ যুদ্ধ চার মাস ধরে পুরো বিশ্বকে একটা ভয়াবহ যুদ্ধ পরিস্থিতিতে নিক্ষেপ করেছে। ফলে বিশ্ব অর্থনীতি এখন বড় ধরনের মূল্যস্ফীতি সংকটে নিমজ্জমান বলা চলে। এর সঙ্গে অদূরভবিষ্যতে যুক্ত হবে বিশ্বমন্দা। খোদ রাশিয়াও হয়তো যুদ্ধটা এত দীর্ঘস্থায়ী হবে চিন্তা করতে পারেনি। সপ্তাহখানেকের মধ্যে ইউক্রেনের পতন হবে ধরে নিয়েই হয়তো রাশিয়া সুপরিকল্পিত আগ্রাসন চালিয়েছিল, কিন্তু প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির নেতৃত্বে ইউক্রেনের নাগরিক ও সৈন্যরা যেভাবে রাশিয়ার সুপারপাওয়ার সশস্ত্র বাহিনীকে চার মাস ধরে মরণপণ প্রতিরোধ করে চলেছে তা বিশ্ববাসীকে হতবাক করে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পুরো পশ্চিমা বিশ্ব এখন রাশিয়ার প্রতিপক্ষ হিসেবে এ প্রক্সি যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে যাওয়ায় যুদ্ধটি যে দীর্ঘায়িত হবে তা এখন নিশ্চিতভাবেই আন্দাজ করা যাচ্ছে। রাশিয়ার আগ্রাসনে পুরো ইউক্রেনের এক-তৃতীয়াংশ এরই মধ্যে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলেও পশ্চিমা বিশ্বের আধুনিক অস্ত্র সহায়তা পেয়ে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীও রাশিয়ার সৈন্যবাহিনী ও সমরাস্ত্র ধ্বংসের এক অভূতপূর্ব প্রতিরোধ যুদ্ধ চালিয়ে যেতে সক্ষম হচ্ছে। জুনের শেষে রাশিয়া পূর্ব ইউক্রেন ও দক্ষিণ ইউক্রেনে হয়তো তাদের সামরিক বিজয় অর্জন করতে সমর্থ হবে, কিন্তু এর পরও ইউক্রেনের প্রতিরোধ যুদ্ধ হয়তো চলতেই থাকবে আরো বহুদিন। তার মানে বিশ্বজুড়ে যে মূল্যস্ফীতির আগুন প্রজ্বলিত হয়েছে, সেটা আগামী বছরেও প্রশমিত না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ সংকট আমাদের আমদানি ব্যয়কে আগামী বছরেও দ্রুতগতিতে বাড়াতে থাকবে। সুতরাং বাজেট ঘোষণার আগে এবং প্রস্তাবিত বাজেটে আমদানি নিয়ন্ত্রণের যেসব পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে, সেগুলো আরো সম্প্রসারণ করতে হতে পারে। তা না হলে আগামী বছরের আমদানি ব্যয় ৯০-৯৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে যাওয়ার আশঙ্কাকে উড়িয়ে দেয়া যাবে না। দেশের রফতানি আয়ও ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩৪ শতাংশ বেড়ে ৩০ জুন নাগাদ ৫০-৫১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে যাবে, কিন্তু ২০২২-২৩ অর্থবছরে রফতানি আয়ের টার্গেটকে ৬০ বিলিয়ন ডলারে নির্ধারণ করে সর্বশক্তি প্রয়োগে ওই টার্গেট পূরণকে অগ্রাধিকার দিতে হবে আমাদের। একই সঙ্গে ফরমাল চ্যানেলের রেমিট্যান্স এ বছর যে ২২ বিলিয়ন ডলারে নেমে যাচ্ছে, সেখান থেকে ওই প্রবাহকে আগামী বছর কমপক্ষে ২৫-২৬ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যেতেই হবে। তার পরও আগামী বছর আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পতন থামানো যাবে কিনা সন্দেহ! ওপরে অর্থনীতির চলমান সংকটের যে একটা সম্ভাব্য চালচিত্র দেয়া হলো, সেটাকেই সামনে রেখে আগামী বছরের অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তগুলো প্রস্তুত রাখতে হবে। সুতরাং আগামী বছর জিডিপির প্রবৃদ্ধি নিয়ে মাতামাতি করার তেমন যৌক্তিকতা থাকবে না। বাজেটে যদিও আগামী অর্থবছরে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন ঘোষিত হয়েছে, সেটাকে আমি খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করি না। আমার কাছে অনেক বেশি গুরুত্ববহ ব্যাপার হলো, আগামী বছরের মূল্যস্ফীতির হার ১০ শতাংশের নিচে রাখতে আমরা সক্ষম হব কিনা এবং বাণিজ্য ঘাটতিকে সহনীয় রাখা যাবে কিনা। বাজেটে চলমান ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রাক্কলিত মূল্যস্ফীতির হার ৬ শতাংশের কম দেখানো খুব বিশ্বাসযোগ্য মনে হবে না কারো কাছেই, প্রকৃত মূল্যস্ফীতি এখন ১০ শতাংশের বেশি। তেমনিভাবে আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতিকে মাত্র ৫ দশমিক ৬ শতাংশে আটকে রাখার যে টার্গেট ঘোষিত হয়েছে, সেটাকেও অবাস্তব আখ্যায়িত করবে ওয়াকিবহাল মহল। চলমান মূল্যস্ফীতির পাগলা ঘোড়াকে লাগাম পড়াতে হলে আরো অনেক সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন অনস্বীকার্য, কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে ওগুলোকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। আশা করি, অনতিবিলম্বে গভীর চিন্তাভাবনা করে পর্যায়ক্রমে সেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ঘোষিত বাজেটকে এরই মধ্যে ব্যবসায়ীবান্ধব আখ্যায়িত করা হয়েছে, সাধারণ জনবান্ধব তেমন কিছু বাজেটে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। করপোরেট করহারকে যেভাবে বাজেটে কমিয়ে ফেলার প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটা কি এবার আদৌ প্রয়োজন ছিল? বলা হচ্ছে, বিনিয়োগ উৎসাহিত করার জন্য করপোরেট করহার হ্রাস করার প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু এর ফলে সরকারি রাজস্ব আয়ের শতাংশ হিসেবে প্রত্যক্ষ করের অবদান বর্তমানে যতখানি অকিঞ্চিৎকর রয়েছে, সেটা আরো সংকুচিত হয়ে যাওয়ার বিষয়টা কি অর্থমন্ত্রী মহোদয় বিবেচনা করেছেন? প্রস্তাবিত ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয়ের মধ্যে করপোরেট করসহ আয়করের অবদান মাত্র ১ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা। মাত্র ২৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ। অর্থনীতির ছাত্র হিসেবে আমাদের জানানো হয়েছে, কোনো দেশ যদি স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয় তাহলে সে দেশের সরকারি রাজস্ব আয়ে প্রত্যক্ষ করের অবদান ক্রমেই বাড়তে থাকবে এবং পরোক্ষ করের অবদান দ্রুত কমে আসবে। একই সঙ্গে ওই দেশে কর-জিডিপির অনুপাতও ক্রমান্বয়ে বাড়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বাংলাদেশে আমরা কী দেখছি? বর্তমান অর্থমন্ত্রী ২০১৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর তিন বছর ধরে এ দেশে কর-জিডিপির অনুপাত কমতে কমতে এখন ৮ শতাংশের কাছাকাছি চলে এসেছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সর্বনি¤œ। আরো দুঃখজনক হলো, মোট কর রাজস্বের মধ্যে প্রত্যক্ষ করের অবদানও কমতে কমতে আগামী অর্থবছরে মাত্র ২৫ দশমিক ৮৭ শতাংশে নেমে যাবে। এ হারগুলোর অবনমন অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বের দুর্বলতা মনে হওয়াই স্বাভাবিক! অর্থমন্ত্রী সুযোগ পেলেই তার ব্যবসায়ী বন্ধুদের সুবিধা দেন, সেটা সাড়ে তিন বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে। এবারের বাজেটেও তার ব্যতিক্রম দেখা যায়নি, কিন্তু দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ নি¤œবিত্ত ও নি¤œমধ্যবিত্ত মানুষ যে মূল্যস্ফীতির কারণে জীবনযাত্রা নির্বাহের দৈনন্দিন সংগ্রামে পর্যুদস্ত হয়ে যাচ্ছে, তাদের জন্য বিশেষ কোনো ব্যবস্থা বাজেটে নেই কেন?
বরং এবারের বাজেটে দেশ থেকে পুঁজি পাচারকারীদের ঢালাও ইনডেমনিটি প্রদান করে নি¤œহারে কর দিয়ে বিনা প্রশ্নে পাচারকৃত অর্থ দেশে ফেরত আনার যে ব্যবস্থা চালু করার প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটাকে অযৌক্তিক ও অনৈতিক বলতেই হচ্ছে। এর আগে ঋণখেলাপিদের অনেক অন্যায় সুবিধা দিয়ে ব্যাংকের খেলাপি ঋণ সমস্যাকে কার্পেটের নিচে লুকিয়ে ফেলতে দেখা গিয়েছিল অর্থমন্ত্রীকে, এবার তিনি পুঁজি পাচারকারীদের পুরস্কৃত করতে চলেছেন! এ সুবিধা দিয়ে ফরমাল চ্যানেলে রেমিট্যান্স হয়তো কিছুটা বাড়তে পারে, কিন্তু এ সত্ত্বেও এমন ইনডেমনিটি প্রদান সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিকে হাস্যাস্পদ করে তুলবে।
বাজেটে বিলাসপণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করার যে পদক্ষেপগুলো প্রস্তাব করা হয়েছে, সেগুলো প্রশংসনীয়। দেশের আমদানি বিকল্প শিল্পগুলোকে উৎসাহিত করার প্রস্তাবিত নীতিমালা সাধুবাদ পাবে। চলমান মেগা প্রকল্পগুলোর অর্থায়ন অব্যাহত রেখে নতুন কোনো মেগা প্রকল্প শুরু না করার সিদ্ধান্তকেও সময়োপযোগী বলা যায়। সামগ্রিক বাজেটটি সংকোচনমূলক, গতবার যেখানে সরকারি ব্যয় জিডিপির প্রায় ১৮ শতাংশের কাছাকাছি ছিল, এবার তা জিডিপির ১৫ দশমিক ৪ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিষয়টি সময়োপযোগী হলেও শিক্ষা খাতে সরকারি ব্যয় বরাদ্দকে বর্তমান সরকারের আমলে এবারই সর্বপ্রথম জিডিপির ১ দশমিক ৮৩ শতাংশে মানে ২ শতাংশের নিচে নামিয়ে ফেলার প্রস্তাব করা হলো, যাকে লজ্জাজনক অভিহিত করাই সমীচীন। আরো দুঃখজনক হলো, ব্যাপারটাকে লুকিয়ে ফেলার জন্য শিক্ষা খাতের বরাদ্দকে প্রযুক্তি খাতের সঙ্গে একীভূত করে দেখানো হয়েছে জনগণের কাছ থেকে ব্যাপারটিকে আড়াল করার উদ্দেশ্যে। ইউনেস্কো যেখানে শিক্ষা খাতের সরকারি ব্যয় বরাদ্দকে ক্রমান্বয়ে বাড়িয়ে জিডিপির ৬ শতাংশে নেয়ার জন্য সদস্য দেশগুলোর কাছ থেকে অঙ্গীকার আদায় করেছে, সেখানে বাংলাদেশ উল্টো পথে যাত্রা করে ১৪ বছরের মধ্যে এই প্রথমবার শিক্ষা খাতের সরকারি ব্যয় বরাদ্দকে জিডিপির ২ শতাংশের নিচে নামিয়ে ফেলল? স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দও এবার জিডিপির শূন্য দশমিক ৮৩ শতাংশে স্থির থাকছে! বাজেটে ঋণের সুদাসল পরিশোধ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮০ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা, যার মধ্যে ৬৩ হাজার কোটি টাকা অভ্যন্তরীণ ঋণ পরিশোধের জন্য। বৈদেশিক ঋণে অর্থায়িত বাস্তবায়নাধীন মেগা প্রকল্পগুলোর ঋণ শোধের ‘গ্রেস পিরিয়ড’ শেষ হলে আগামী অর্থবছরগুলোয় এ খাতে বরাদ্দ আরো অনেক দ্রুতগতিতে বাড়বে, হয়তো ২০২৩-২৪ বছরের বাজেটেই তা ১ লাখ কোটি টাকা অতিক্রম করবে। মনে হচ্ছে ঋণ শোধের বার্ষিক কিস্তির বিষয়টি কয়েক বছরের মধ্যেই বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য বিপজ্জনক বোঝায় পরিণত হতে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে মনে করিয়ে দিতে চাই, সরকারের কর-জিডিপির অনুপাত যেখানে ৯ শতাংশের নিচে কিংবা ৮ শতাংশের কাছাকাছি চলে এসেছে, সেখানে ঋণ পরিশোধের জন্য এত দ্রুত বর্ধমান বাজেট বরাদ্দ ‘অশনি সংকেতের’ শামিল। বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে ২,৪৫,০৬৪ কোটি টাকা, বাজেটে উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ২,৫৯,৬১৭ কোটি টাকা। তাহলে কি আগামী বছরের সরকারি খাতের উন্নয়ন কর্মকা- ৯৪ দশমিক ৩৯ শতাংশই দেশী-বিদেশী ঋণনির্ভর রয়ে যাবে? ড. মইনুল ইসলাম: একুশে পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ ও অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক,অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com