অপরিশোধিত তেল পুড়িয়ে সিনথেটিক কাপড় তৈরি করা হয়। এর ফলে বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত হয়, যা বিশ্বকে আরো বেশি উত্তপ্ত করে। অপরদিকে সুতি কাপড় পরিবেশে কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না। তাই অনেক সচেতন ক্রেতা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কয়েক বছর ধরে সুতি কাপড় দিয়ে তৈরি পোশাক বেশি পছন্দ করছেন। অনেক আগেই স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, মাইক্রোপ্লাস্টিক পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি করে এবং অনেক ক্রেতা বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে সিনথেটিক কাপড় দিয়ে তৈরি কোনো সোয়েটার, শার্ট ও টপস কিনতে চান না।
কিন্তু এর ফলে যে সমস্যাটি হয়, তা হলো তুলা প্রচলিতভাবে জন্মালে পরিবেশেরও ক্ষতি হতে পারে। তাই পরিবেশবাদী ক্রেতাদের উচিত অর্গ্যানিক সুতা দিয়ে তৈরি পোশাক কেনা। এই পদ্ধতির সমস্যা হল যে তুলা, বিশেষ করে যখন এটি প্রচলিতভাবে জন্মায়, তখন পরিবেশেরও ক্ষতি হতে পারে। সবুজ ক্রেতাদের জন্য একটি সমাধান হল অর্গ্যানিক তুলা বা সুতা দিয়ে তৈরি পণ্য কেনা। বিভিন্ন পোশাকের উপকরণগুলো খুব ভালোভাবে দেখলে বোঝা যায় যে, অর্গ্যানিক সুতা সত্যিই সিনথেটিক উপকরণের একটি টেকসই বিকল্প হতে পারে।
প্রথমত, তুলা একটি নবায়নযোগ্য সম্পদ। অপরদিকে অপরিশোধিত তেল পুড়িয়ে সিনথেটিক কাপড় তৈরি করা হয়। এর ফলে বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত হয়, যা বিশ্বকে আরো বেশি উষ্ণ করে এবং জলবায়ু পরিবর্তনকে আরো ত্বরান্বিত করে। উপরন্তু, সিনথেটিক কাপড় নষ্ট হয় না। পরিবেশের সাথে মিশে যায় না। ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ ন্যাচারাল টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রির (আইভিএন) হেইক হেস বলেছেন, ‘সিনথেটিক কাপড় পচে না এবং শেষ পর্যন্ত মাইক্রোপ্লাস্টিক হয়ে যায়।’
তবে স্বাভাবিকভাবেই ভিন্ন মত ব্যক্ত করেন সিনথেটিক ফাইবার প্রস্তুতকারকদের প্রতিনিধিত্বকারী জার্মান অ্যাসোসিয়েশন। তারা জানায়, সমস্ত পরিবেশগত দিক বিবেচনা করলে, কৃত্রিম তন্তুগুলো আসলে তুলোর চেয়ে ভালো। সিনথেটিক ফাইবারগুলো কৃষি জমির উপর চাপ কমিয়ে দেয়। আরো বেশি করে খাদ্য জন্মানোর জন্য এটিতে মুক্ত করে দেয়। আর সিনথেটিক ফাইবার প্রস্তুত করতে খুব কম পানি প্রযোজন হয়।
পিপল ওয়্যার অর্গ্যানিকের প্রধান নিকোল প্যালিক। তার প্রতিষ্ঠানটি শিশুদের জন্য অর্গ্যানিক তুলা থেকে তৈরি পোশাক বিক্রি করে। তিনি বলেন, প্রচলিত তুলা মাটির ক্ষতি করে কিন্তু অর্গ্যানিক তুলা তা করে না। এ ব্যপারে হেস বলেন, অর্গ্যানিক তুলা অবশ্যই ভালো মাটির গুণের কারণে পানি সংরক্ষণ করে। কারণ মাটি ভালোভাবে পানি সঞ্চয় করতে পারে। কৃষকরা পোকামাকড় দূরে রাখতে, আরো ছায়া দিতে এবং মাটির ক্ষয় কমানোর জন্য তুলোর মধ্যে বিভিন্ন গাছ লাগান। এর মানে হলো মাটি স্বাস্থ্যকর, ‘এতে আরো জীবন আছে।’ সূত্র : ডেইলি সাবাহ