কাতারে অনুষ্ঠেয় ফুটবল বিশ্বকাপ-২০২২-এর ম্যাচগুলোতে ব্যবহার করা হবে পাকিস্তানের তৈরি ফুটবল। দেশটির শিয়ালকোটে ‘আল রিহলাহ’ নামে ওই বলগুলো তৈরি হচ্ছে। গত সোমবার পাকিস্তানের সরকারি সংবাদ সংস্থা এপিপির সূত্রে ডন এই খবর নিশ্চিত করে। এ প্রসঙ্গে শিয়ালকোট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ জুহাইব রফিক শেঠি বলেন, ‘কাতারে অনুষ্ঠেয় ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপ-২০২২-এর ম্যাচগুলোতে শিয়ালকোটে তৈরি ‘আল রিহলাহ’ ফুটবল ব্যবহৃত হবে।’ তিনি জানান, শিয়ালকোটের প্রসিদ্ধ কোম্পানি ফরোয়ার্ড স্পোর্টস এডিডাস থেকে ‘আল রিহলাহ’ ফুটবল তৈরির স্বত্ব পেয়েছে। শেখ জুহাইবের মতে- এটি শিয়ালকোট তো বটেই; বরং গোটা পাকিস্তানের জন্য গর্বের ব্যাপার। তিনি বললেন, ‘তবে শিয়ালকোটের বল দিয়ে এবারই প্রথম বিশ্বকাপ নয়; এর আগেও অন্তত তিনবার ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপে ফরোয়ার্ড স্পোর্টস ব্র্যান্ডের ফুটবল ব্যবহৃত হয়েছে।’
শেখ জুহাইব রফিক শেঠি জানান, আসন্ন বিশ্বকাপের জন্য তৈরি ফুটবলের ডিজাইনে কাতারের সংস্কৃতি প্রতিফলিত হয়েছে। বল তৈরিতে ব্যবহৃত হয়েছে আবহাওয়া উপযোগী পুনর্ব্যবহারযোগ্য উপাদান ও পরিবেশবান্ধব পানিভিত্তিক কেমিক্যাল। তিনি বলেন, ‘এই বল ২০টি প্যানেলের সমন্বয়ে গঠিত। একইসাথে এটিকে পৃথিবীর অন্যতম সেরা ফুটবল আখ্যায়িত করা হচ্ছে।’ বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে শেখ জুবাইব জানান, শুরুতে ঐতিহ্যগতভাবে বলগুলো হাতে সেলাই করা হতো। কিন্তু ২০১৪ সাল থেকে বল সেলাইয়ে থার্মোস বাইন্ডিং নামে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে।
ক্রীড়াপণ্য রফতানির দিক থেকে শিয়ালকোট পাকিস্তানের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর। শহরটি ফুটবলের পাশাপাশি ভলিবল, হকিস্টিক, ক্রিকেট ব্যাট ও খেলার জার্সিসহ অন্যান্য ক্রীড়াসামগ্রী তৈরির জন্য বিখ্যাত। বর্তমানে বিশ্বমানের প্রযুক্তি ব্যবহার করে এসব সামগ্রী তৈরি করা হয়।
শেখ জুবাইব বলেন, ‘আমাদের জন্য এটা গর্বের যে, এই বিশ্বকাপে বিশ্বখ্যাত খেলোয়াড়েরা শিয়ালকোটের তৈরি বল দিয়ে খেলবেন। এটি শুধুমাত্র পাকিস্তানের ফুটবল শিল্পকে উৎসাহিত করবে না বরং ক্রীড়া শিল্পেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’ তার মতে- শিয়ালকোটের এই শিল্প পাকিস্তানের অর্থনীতি মজবুত করার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
উল্লেখ্য, আসন্ন কাতার ফুটবল বিশ্বকাপ চলতি বছরের নভেম্বরে শুরু হবে। ১৯ নভেম্বর দেশটির আল বাইত স্টেডিয়ামে স্বাগতিক কাতার ও ইকুয়েডরের মধ্যকার ম্যাচটি দিয়ে পর্দা উঠবে বিশ্বকাপের। এবারের বিশ্বকাপে ৮টি গ্রুপে ভাগ হয়ে মোট ৩২টি দল খেলবে। গ্রুপের মধ্যে প্রতি ৪টি দল নিজেদের মধ্যে একটি করে ম্যাচ খেলবে। কোয়ার্টার ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে ডিসেম্বরের ৯ তারিখে। দুইটি সেমিফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে যথাক্রমে ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বরে। আর ১৮ ডিসেম্বরে ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মেগা এই টুর্নামেন্টের পর্দা নামবে। -নয়াদিগন্ত অন লাইন