চলতি বন্যায় পানিবন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বন্ধ ঘোষণা করা হলেও উন্নয়ন সংঘের সিডস প্রকল্পের আওতায় ভাসমান বিদ্যালয়টিতে চলছে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম। মঙ্গলবার ২১ জুন দুকুল প্লাবিত প্রমত্তা যমুনা নদীর ওপাড়ে ইসলামপুর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের দক্ষিণ বরুল গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে পাঠ্যক্রম অনুস্বরণ করে সাবালিলভাবে পাঠদান চলছে। শিক্ষক রোজিনা আক্তার ২০জন শিক্ষার্থী নিয়ে শ্রেণি পরিচালনা করছে। এদিন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন নরওয়েভিত্তিক আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা স্ট্রমী ফাউন্ডেশনের এশিয়া অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক ক্রিস্টিয়ান নিউম্যান, বাংলাদেশের সমন্বয়ক মিজানুর রহমান, জ্যেষ্ঠ সমন্বয়কারী (এমইএএল) রাহুল বড়–য়া, উন্নয়ন সংঘের নির্বাহী পরিচালক মো. রফিকুল আলম মোল্লা, মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিচালক জাহাঙ্গীর সেলিম, সহকারী পরিচালক কর্মসূচি মুর্শেদ ইকবাল, প্রকল্প কর্মকর্তা শামসুদ্দিন প্রমুখ। পরিদর্শক দল এরপর চাইল্ড ক্লাব ও সংলাপ কেন্দ্র, আত্মনির্ভরশীল দলের কার্যক্রম দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের নদী ভাঙ্গন কবলিত বরুল গ্রামে সিডস প্রকল্পের আওতায় ২০১৯ সালের ১৭ নভেম্বর ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে ভাসমান বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়। বন্যাকালিন যাতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত না হয় এ উদ্দেশ্যে এ কার্যক্রম চালু করা হয়। তৎকালীন স্ট্র্রমী ফাউন্ডেশন-হেইবাডেন এর প্রতিনিধি দল এলাকা পরিদশর্নে এসে এবং উপযুক্তা বিবেচনা করে উন্নয়ন সংঘ সীডস প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং ভাসমান বিদ্যালয়ের কাজ শুরু করে। প্রচলিত শিক্ষার পাশাপাশি ভাসমান বিদ্যালয়ে বাথরুম সুবিধাসহ স্যানিটেশ ব্যবস্থা এবং শিক্ষামূলক বিনোদন কার্যক্রমও পরিচালিত হয়ে থাকে।বরুল গ্রামের ইউপি সদস্য মোঃ আঃ বারিক মন্ডল বলেন যে, এই ভাসমান স্কুল পেয়ে আজ আমরা নিজেদেরকে ধন্য মনে করছি। ভাসমান বিদ্যালয় স্থাপনের ফলে এই এলাকার লেখাপড়াও শিক্ষার হার ক্রমশই বাড়ছে। এই মহৎ উদ্দ্যোগ নেওযার জন্যে দাতা সংস্থা ষ্ট্রমী ফাউন্ডেশন-হেইবাডেনসহ উন্নয়ন সংঘকে ধন্যবাদ জানান তিনি। গ্রামের রওশনারা বলেন যে, এমন স্কুল আমরা কোনদিনও দেখি নাই,আমরা আমাদের সন্তানকে এই স্কুলেই পড়াবো। যারা এই স্কুল দিছে তাদেরকে আমরা ধন্যবাদ দেই।উল্লেখ্য স্ট্রমী ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে উন্নয়ন সংঘের সিডস প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন ভাসমান নৌকাটি এলাকার অন্যান্য সামাজিক কাযক্রম যেমন বিচার সালিশ, বন্যার সময় উদ্ধার কাজ, কিশোরী শিক্ষা কাযক্রম, ঝরেপড়া শিশুদের নিয়ে ব্রীজ স্কুল কাযক্রম পরিচালিত হয়। এককথায় ভাসমান নৌকাটি মাল্টিপারপাস সামাজিক কাযক্রমের ব্যবহারিত হচ্ছে। করোনাকালিন স্বাস্থ্যবিধি মেনে উল্লেখিত কার্যক্রমগুলো বাস্তবায়ন এলাকায় অনন্য সাধারণ ভূমিকা রাখছে বলে অনেকেই অভিমন ব্যক্ত করেছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে শিক্ষা ও সামাজিক কাজে এধরণে প্রকল্প একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচনা করেছে। অন্যান্য দ্বীপচরবাসী এধরণের ভাসমান বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি করেছেন।