বিশ্বের মানচিত্রে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ একটি গর্বিত ভূখ-। এই ভূখ-ে বসবাসকারী আমজনতার আজন্ম লালিত স্বপ্ন ও সাধ, আত্মমর্যাদা বিকাশের অধিকার লাভের উদ্দেশ্যে নিয়োজিত সুদীর্ঘ সংগ্রামের চূড়ান্ত বিজয় লাভের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, অনন্য ঐক্য গঠনে আপনার অধিকার প্রতিষ্ঠা, নিজের পায়ে নিজে দাঁড়ানোর, স্বাধীন আশায় পথ চলার এবং আপন বুদ্ধিমতে চলার ক্ষমতা লাভ করে।
স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার। কিন্তু এই অধিকার কেউ কাউকে এমনিতে দেয় না, কিংবা ছেলের হাতের মোয়ার মতো নয় তা সহজপ্রাপ্যও; তাকে অর্জন করতে হয়, আদায় করে নিতে হয়। আবার অর্জন করার মতো সেই স্বাধীনতাকে রক্ষা করাও কঠিন। কেননা, স্বাধীনতার শত্রুর অভাব নেই। স্বাধীনতাহীনতায় বাঁচতে চায় কে? আবার সুযোগ পেলে অন্যকে নিজের অধীনে রাখতে চায় না কে? বেশি দামে কেনা স্বাধীনতা কম দামে বিক্রির নজির যে নেই তা তো নয়। আপাতদৃষ্টিতে বাংলাদেশের জনগণ শোষণ বঞ্চনার বিরুদ্ধে, পরাধীনতার নাগপাশ থেকে বেরিয়ে আসার সংগ্রামের মাধ্যমে, ইতিহাসের বহু পটপরিবর্তনে চড়াই উতরাই পেরিয়ে, অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে অর্জন করে তাদের আজন্ম লালিত স্বাধীনতার স্বপ্নসাধ। যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে অশেষ আত্মত্যাগের বিনিময়ে বিজয় অর্জন তার প্রত্যাশিত পণ পূরণ এবং যথাযথ বাস্তবায়ন সম্ভব না হলে স্বাধীনতার জন্য আত্মত্যাগের যৌক্তিকতা ভিন্ন অর্থেই পর্যবসিত হতে পারে । ব্যবসায় বাণিজ্য ব্যাপদেশে এ দেশে আগমন ঘটে ঈস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ছত্রছায়ায় সাত সমুদ্র তেরো নদী পার হয়ে আসা ইংরেজদের। তাদের আগে মগ ও পর্তুগিজরাও অবশ্য এসেছিল এ দেশে। প্রতিদ্বন্দ্বী বিবেচনায় এরা পরস্পরের শত্রুভাবাপন্ন হয়ে ওঠে। অত্যাচারী মগ ও পর্তুগিজদের দমনে ব্যর্থপ্রায় সমকালীন শাসকদের সাহায্যে এগিয়ে আসে নৌযুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী ইংরেজ বণিক। ক্রমে তারা অনুগ্রহভাজন হয়ে ওঠে সমকালীন বিলাসপ্রিয় উদাসীন শাসকদের আর সেই উদাসীনতার সুযোগেই রাজপ্রাসাদ-অভ্যন্তরে কূটনৈতিক প্রবেশ লাভ ঘটে ইংরেজদের। প্রধান সেনাপতি মীর জাফর আলী খাঁকে হাত করে তারা ক্ষমতাচ্যুত করে নবাব সিরাজউদদৌলাকে। পরবর্তীতে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে বাংলা বিহার উড়িষ্যার এবং ক্রমে ক্রমে ভারতবর্ষের প্রায় গোটা অঞ্চল। মীর কাসিম খান, টিপু সুলতান প্রমুখ সমকালীন স্বাধীনচেতা রাজন্যবর্গ স্থানীয়ভাবে তাদের প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরকে চাঙ্গা করেও ব্যর্থ হন- বলাবাহুল্য, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের শুরু সেখান থেকেই। বিদেশ বিভূঁইয়ে সাহায্য ও সহানুভূতি পাওয়ার জন্য সম্প্রদায়গত বিভাজন সৃষ্টি করতে আনুকূল্য প্রদর্শনার্থে ১৭৯৩ সালে লর্ড কর্নওয়ালিস প্রবর্তন করেন ‘চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত’। এই নীতির ফলে এ দেশীয় স্বাধীনতাকামী জনগণের মধ্যে পৃথক পৃথক অঞ্চলে জাতীয়তাবাদী চেতনা জাগ্রত হয় এবং ব্রিটিশ শাসকের ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ পলিসিতে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে বৃহৎ দু’টি সম্প্রদায়। হিন্দু জমিদাররা ইংরেজদের আনুগত্য পেতে থাকে, পক্ষান্তরে রাজ্য হারিয়ে মনমরা মুসলমান সম্প্রদায় (যার বেশির ভাগ পরিণত হয় রায়ত কৃষকে) দিনদিন বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে যেতে থাকে। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহেও ইংরেজদের ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ পলিসি বেশ কাজ করে; আরো দ্বিধাবিভক্তিতে আচ্ছন্ন হয় উভয় সম্প্রদায়। এরপর স্যার সৈয়দ আহমদ, নবাব আবদুল লতিফ, সৈয়দ আমির আলী, খানবাহাদুর আহছানউল্লাহ, নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী প্রমুখের শিক্ষা ও সমাজসংস্কারবাদী কর্মপ্রচেষ্টার ফলে মুসলমান সম্প্রদায় ধীরে ধীরে আধুনিক শিক্ষার আলোক পেয়ে ক্রমান্বয়ে চক্ষুস্মান হতে থাকে। ১৮৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস এবং তার ২১ বছর পর ১৯০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘মুসলিম লীগ’ নামের রাজনৈতিক সংগঠন। বৃহৎ ভারত বর্ষের ব্যাপারে না গিয়ে শুধু এই বাংলাদেশ বিষয়ে মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার পেছনে যে প্রধান ঘটনা স্থপতি হিসেবে কাজ করেছে তা হলো- ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন।
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে এমন দ্বিধাবিভক্তির প্রেক্ষাপটে প্রতিদ্বদ্বী মনোভাব থেকেই ১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ মুসলিম লীগের লাহোর অধিবেশনে পূর্ববাংলার নেতা শেরেবাংলা ‘উপমহাদেশের মুসলমান প্রধান অঞ্চল’সমূহ নিয়ে ‘রাষ্ট্রসমূহ’ গঠনের প্রস্তাব করেন। মুসলমানপ্রধান পূর্ববাংলাবাসী ওই প্রস্তাবমতে একটি পৃথক রাষ্ট্র গঠনের দাবিদার। ১৯৩০ সালে চৌধুরী রহমত আলী ‘পাকিস্তান’ ( (P for Punjab, A for Afghanistan, K for Kashmir, I for Indus valley and stan for Baluchistan) শব্দটরি উৎপত্তি ও রাষ্ট্র প্রতষ্ঠিার কথা যখন প্রথম প্রকাশ করনে তখন তাতে বাংলা নামরে কোনো শব্দ বা র্বণ ছলি না, এমনকি ১৯৩৬ সালরে ডসিম্বের মাসে পাকস্তিানরে র্দাশনকি ভাবনর্মিাতা স্যার মুহাম্মদ ইকবাল পাকস্তিান রাষ্ট্র প্রতষ্ঠিার যে কল্পনা ব্যক্ত করনে তাতে বাংলা অর্ন্তভূক্তরি কোনো কথা ছলি না। এতদসত্ত্বওে ১৯৪০ সালরে লাহোর অধবিশেনে ‘রাষ্ট্রসমূহ গঠনরে প্রস্তাবক’ে উপচয়ি,ে বশ্বিাসঘাতকতায়, র্পূব বঙ্গবাসীর পৃথক রাষ্ট্র প্রতষ্ঠিার আন্দোলন ভারতর্বষরে পশ্চমি সীমান্তে অবস্থতি সহস্রাধকি মাইল ব্যবধানে অবস্থতি পাকস্তিান নামক রাষ্ট্র প্রতষ্ঠিার সাথে একীভূত হয় এবং পাকস্তিানরে একটি প্রদশে হসিবেে ১৯৪৭ সালে ব্রটিশি শাসন থকেে স্বাধীনতা লাভ কর।ে এটা য,ে র্পূববঙ্গরে প্রকৃত র্অথে স্বাধীনতা প্রাপ্তি ছলি না বরং উপনবিশেবাদরে কাছে হস্তান্তর মাত্র তা র্পূব বঙ্গবাসী ক্রমে ক্রমে উপলব্ধি করতে পার।ে
এটা বোঝা গয়িছেলি, এই নব্য উপনবিশেবাদে নজিদেরে আত্মর্মযাদা ও আত্মপরচিয় নশ্চিহ্নি হয়ে যাব।ে প্রতবিাদে সোচ্চার হয়ে তাদরে সচতেনতার পরচিয় দয়ে ১৯৫৪-এর নর্বিাচন,ে ১৯৬২-এর ছাত্র আন্দোলন,ে ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে এবং ১৯৭০-এর সাধারণ নর্বিাচন।ে এতদনিে পশ্চমি পাকস্তিানি সামন্তবাদী চক্ররে আসল মুখোশ উন্মোচতি হয়। র্পূবপাকস্তিানকে একসময় তারা ব্যবহার করছেলি ইংরজে শাসন থকেে স্বাধীনতা লাভরে র্স্বাথ,ে সইে আন্দোলনরে অন্যতম উদগাতা ছলি র্পূব পাকস্তিানরিা। একইভাবে র্পূব ও পশ্চমি পাকস্তিানি বষৈম্যরে বরিোধও তমেনি তাদরেকে প্রথমে স্বাধকিার এবং পরে স্বাধীনতার আন্দোলনে উজ্জীবতি কর।ে প্রখ্যাত লখেক হুমায়ূন কবীর তার ‘বাংলার কাব্য’ে লখিছেনে, ‘বাংলার র্পূবাঞ্চলরে প্রকৃতি ভন্নির্ধমী। র্পূববাংলার নর্সিগ হৃদয় তাকে ভাবুক করছেে বটে কন্তিু উদাসী করনে।ি দগিন্তপ্রসারী প্রান্তররে অভাব সখোনে নইে কন্তিু সে প্রান্তরওে রয়ছেে অহরহ বস্মিয়রে চঞ্চল লীলা। পদ্মা যমুনা মঘেনার অবরিাম স্রোতোধারার নতুন জগতরে সৃষ্টি ও পুরাতনরে ধ্বংস।’ র্পূববাংলায় নর্সিগ নন্দনকাননইে শুধু পরণিত করনে,ি তাদরে (বাংলাদশেরে জনগণক)ে করছেে পরশ্রিমী, সাহসী-শান্ত-সুজন, আত্মবশ্বিাসী, ভাবুক, চন্তিাশীল, আবগেময় ও ঔৎসুক্যপ্রবণ। তাদরে রয়ছেে নজিস্ব নামে দশে সৃষ্টরি ইতহিাস, ঐতহ্যি, চলন বলন, শল্পি, সাহত্যি, স্থাপত্য ইত্যাদ।ি দহৈকি গড়ন গঠনে আবগে অনুভূততি,ে রগে রক্তে তারা পৃথবিীর অন্যান্য জাতি ও সম্প্রদায় থকেে আলাদা। ভৌগোলকি কারণওে তারা পৃথক ভন্নি প্রকৃতরি। জাতগিত ভাবার্দশ,ে রাষ্ট্রীয় আনুগত্য প্রকাশ,ে জাতীয়তাবোধে অন্যান্য রাষ্ট্র ও অঞ্চলে বসবাসকারী স্বর্ধমী ও স্বভাসীদরে থকেওে তারা স্বতন্ত্র প্রকৃতরি। বাংলাদশেরে জনগণ শান্তি প্রয়ি। তারা তাদরে আত্মনয়িন্ত্রণরে অধকিার নজিরোই র্অজন করতে জানে এবং নয়িন্ত্রণ কর।ে নর্দিষ্টি ভৌগোলকি সীমারখোয় জনগণরে রাজনতৈকি ও ঐতহিাসকি সত্যরে আত্মপ্রতষ্ঠিার মাধ্যমে বাংলাদশেরে জনগণ স্বাধীন র্সাবভৌম রাষ্ট্ররে প্রতষ্ঠিা করে নজিদেরে গণতান্ত্রকি মূল্যবোধ সচতেনতা জাতসিত্তার মৌলকি পরচিয়ে সমুন্নত করছেনে । স্বাধীনতা লাভে বাঙালরি জাতীয় জীবনে যে নবদগিন্তরে সূচনা হয় তাতে সীমাহীন শোষণ ও সুর্দীঘকালরে অবজ্ঞায় নষ্পিষেতি ঔপনবিশেকি জীবনযাত্রা থকেে মুক্তি পাওয়ার এবং নজিদেরে নয়িমে চলার, নজিে পায়ে নজিরে দাঁড়ানোর, বাঁচার এবং বকিশতি হওয়ার অধকিার তারা পয়েছে।ে বাঙালরি র্অথনতৈকি জীবনযাত্রায়, সাংস্কৃতকি সঙ্গীতায়নে নতুন দগিন্ত উন্মোচতি হয়ছে।ে নতুন গণতান্ত্রকি প্রক্রয়িা শুরু করার ক্ষত্রেে আমরা নজিরোই নজিদেরে প্রশাসনরে সুযোগ লাভ করছেি এবং নজিরোই নজিদেরে উন্নতি ও অবনতরি নয়িন্তা, হয়ছেি সফলতা ও র্ব্যথতার দাবদিার।
স্বাধীন র্সাবভৗৈম বাংলাদশেে আমরা কভিাবে নজিরে পায়ে নজিরো দাঁড়াব, র্দীঘদনিরে অবহলো আর অবজ্ঞার ফলে ধ্বংসপ্রায় আমাদরে র্অথনতৈকি জীবনকে আমরা কভিাবে চাঙ্গা করে তুলব, আমরা কভিাবে আমাদরে সমাজজীবন থকেে বন্ধ্যানীতি কুসংস্কার আর অপয়া ভাবধারাকে অপসারতি করে আমাদরে জাতসিত্তার বকিাশ ঘটয়িে জাগ্রত জাতি সভায় আমাদরে অবস্থান ও গৌরবকে আরো ঐর্শ্বযম-তি করার সে চতেনা জাগৃততিে আমাদরে ইতহিাস ও ঘটনা পরক্রিমা এই প্রতীতি জাগাতে পারে য,ে আমরা গণতন্ত্রমনা, আমরা আমাদরে উন্নয়ন লক্ষ্যে একাগ্র, আমাদরে র্কতব্য পালনে আমরা নরিলস এবং অনন্য ঐক্যে বশ্বিাসী ও ধাতস্থ। সুতরাং আত্মত্যাগরে সুমহান সঙ্কল্পে আমাদরে আত্মর্মযাদাবোধ যনে জাগ্রত থাকে এবং কোনো প্রকার বভ্রিান্ততিে জড়য়ি,ে দায়ত্বিহীনতায়, অলসতায়, একে অন্যরে দোষারোপরে অবয়বে আমাদরে আত্মশক্তরি অপচয় অপব্যবহাররে অবকাশ সৃষ্টি না হওয়াই বাঞ্ছনীয়। লখেক : উন্নয়ন র্অথনীতরি বশ্লিষেক, ই মইেল: mazid.muhammad@gmail.com