রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৩৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
দেশের উন্নয়ন ও মানুষের কল্যাণে বিএনপির নেতা কর্মীদের কাজ করতে হবে বনশ্রী আফতাব নগর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত সভাপতি বাবলু পন্ডিত, সম্পাদক জহুরুল ইসলাম ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি. এর নবগঠিত পরিচালনা পর্ষদের ১৫তম সভা মহানগরী জোন আন্তঃকলেজ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় মাইলস্টোন কলেজের কৃতিত্ব স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আজ ৮৯তম জন্মবার্ষিকী নগরকান্দায় দু’গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ, ওসি, সাংবাদিকসহ আহত- ৩০ কালীগঞ্জে নানা সংকটে গ্রাম আদালত সুফল পেতে প্রয়োজন কার্যকরী উদ্যোগ কটিয়াদীতে তারুণ্যের উৎসব উদযাপন, ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ মুন্সীগঞ্জে লুন্ঠিত মালামালসহ ৭ ডাকাত গ্রেফতার লক্ষ্মীপুর ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে বর্ণিল পিঠা উৎসব

ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে: ১০ টোল বুথের ৭টি সচল, ৪ কিমি যানজট

খবরপত্র ডেস্ক
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১ জুলাই, ২০২২

ফরিদপুরের ভাঙ্গা-মাওয়া-ঢাকা এক্সপ্রেসওয়েতে টোল আদায় শুরু হয়েছে। টোলপ্লাজায় কাউন্টারের সংখ্যা কম থাকায় দুর্ভোগে পড়েন যাত্রী ও চালকরা। সেখানে আটকা পড়েছে শত শত গাড়ি। স্থানীয়রা জানান, সকাল থেকে মহাসড়কের ফরিদপুরের ভাঙ্গার বগাইল টোল প্লাজায় যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। ১০টি টোল প্লাজার মধ্যে চালু রয়েছে ৭টি। এরমধ্যে ঢাকাগামী যানবাহন থেকে দুটি বুথের মাধ্যমে টোল নেওয়া হচ্ছে। আর ঢাকা থেকে আসা গাড়ির টোল আদায় করা হচ্ছে পাঁচটি বুথে। ভোর থেকেই গাড়ির টোলপ্লাজায় ব্যাপক চাপ রয়েছে। দুপুর পর্যন্ত ৩-৪ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। টোল প্লাজার ইনচার্জ ফারুক হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা ফ্লাইওভারমুখী পয়েন্টে তিনটি কাউন্টার ও বিপরীত দিকে পদ্মা সেতু অভিমুখী সড়কের একটি কাউন্টার দিয়ে টোল আদায় শুরু হয়।
যাত্রী ও চালকরা জানান, টোল আদায়ে ধীরগতির কারণে সেখানে রাতেই দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা টোল প্লাজার সামনের যানজটে আটকে থাকেন। সকাল নাগাদ যাত্রীরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এবং টোল আদায়কারীদের সঙ্গে বাকবিত-ায় জড়িয়ে পড়েন। পরে যানবাহনের চাপের মুখে কাউন্টার বাড়ানো হয়।
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হামিদউদ্দিন বলেন, পদ্মা সেতু হয়ে বের হবার জন্য তিনটি ও সেতুতে ওঠার জন্য একটি কাউন্টার চালু করা হয়। এতে সেখানে প্রচ- যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে, পরে টোলপ্লাজায় কাউন্টার বাড়ানো হয়।
ঢাকা-মাওয়া রুটের বাসের নতুন গন্তব্য ভাঙ্গা: পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থায় এসেছে আমূল পরিবর্তন। কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছেন ফরিদপুর, শরীয়তপুর, খুলনা, সাতক্ষীরাসহ ২১ জেলার মানুষ। সেতু চালুর আগে ঢাকা-মাওয়া ছিল বেশকিছু গাড়ির জমজমাট রুট। পরিবর্তন এসেছে সেখানেও। এসব গাড়ির নতুন গন্তব্য পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত। তবে নতুন এ রুটের যাত্রীদের দ্বিধা কাটেনি এখনো। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সময় লাগবে অন্তত মাসখানেক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা-মাওয়া রুটে বেশ কয়েকটি পরিবহন চলাচল করে। এর মধ্যে রয়েছে ইলিশ, প্রচেষ্টা, স্বাধীন, বসুমতি, আপন, আনন্দ, ডিএম, গাংচিল ও গ্রেট বিক্রমপুর। গাংচিল ও গ্রেট বিক্রমপুর ছাড়া বাকি পরিবহনগুলো এখন ঢাকা-মাওয়া রুটের পরিবর্তে ঢাকা-ভাঙ্গা পর্যন্ত চলাচল করছে। ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত আগে প্রতিটি পরিবহনে ভাড়া ছিল ৮৫ টাকা। এখন ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত যেতে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ২৫০ টাকা করে। কোনো কোনো যাত্রীর কাছ থেকে ২০০ টাকাও নেওয়া হচ্ছে। তবে গাড়িতে ওঠা নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে কিছুটা বিভ্রান্তি কাজ করছে এখন। আগে ঢাকা-মাওয়া রুটের সব গাড়ির গন্তব্যই ছিল ঘাট পর্যন্ত। তাই সহজেই যে কোনো গাড়িতে উঠে যেতে পারতেন যাত্রীরা। এখন কোন বাসে উঠবেন এটা নিয়ে কিছুটা সংশয়ে থাকেন শরীয়তপুর, মাদারীপুর, বরিশাল, খুলনা, বাগেরহাটগামী মানুষ। আবার ভাঙ্গা পর্যন্ত যাত্রীও কিছুটা কম বলে জানান পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। ইলিশ পরিবহনের সুপারভাইজার আব্দুল খালেক বলেন, আগে মাওয়া পর্যন্ত যেতাম, ঘাট পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের সব যাত্রী পাওয়া যেত। কিন্তু এখন ভাঙ্গা পর্যন্ত যেতে হচ্ছে। আগে গুলিস্তান থেকে শুধু একটি বাস ভাঙ্গা পর্যন্ত যেত, এখন বেশকিছু বাস যায়। এ কারণে যাত্রী তুলনামূলক কম পাওয়া যাচ্ছে। এদিকে ভাঙ্গা থেকে ফিরতি পথে তেমন যাত্রী পাওয়া যায় না বলে জানান তারা। আবার বাস স্টপেজগুলো থেকে যাত্রী তুলতে গেলেও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নামে টাকা তোলা হয় বলে অভিযোগ তাদের। আনন্দ পরিবহনের একটি বাসের সুপারভাইজার মো. আবু কালাম বলেন, যাওয়ার সময় যাত্রী মোটামুটি পাই, তবে আসার সময় সেতুর ওপারে যাত্রী তুলতে পারি না। যাত্রী তুলতে গেলে সেখানে টাকা দিতে হয়। ৫-১০ জন যাত্রী তুললেই ৫০ থেকে ১০০ টাকা করে দেওয়া লাগে। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হওয়া দরকার। দীর্ঘদিন ধরে গুলিস্তান-মাওয়া রুটে গাড়ি চালান ইলিশ পরিবহনের চালক মোহাম্মদ সুলতান। তিনি বলেন, সেতু চালু হওয়ায় এখন ভাঙ্গা পর্যন্ত যাই। গুলিস্তান থেকে কদমতলী পর্যন্ত কিছুটা জ্যাম পাওয়া যায়, এছাড়া ভাঙ্গা পর্যন্ত কোনো জ্যাম নেই। তবে ওপার থেকে আসার সময় যাত্রী কম পাওয়া যায়। যাত্রী তুলতে গেলে টাকা দিতে হয়। ঢাকা-ভাঙ্গা রুটে চলাচলকারী যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পদ্মা সেতু হওয়ায় যাতায়াতে সময় কম লাগছে তাদের। আবার আগে যে ভোগান্তি ছিল সেই ভোগান্তিও নেই। ভাড়াও তুলনামূলক কম। গত মঙ্গলবার (২৮ জুন) দুপুরে গুলিস্তানে কথা হয় বাগেরহাটের মো. শাহিন ফকিরের সঙ্গে। ভাঙ্গাগামী বাসে ওঠার সময় তিনি বলেন, পদ্মা সেতু হওয়ায় আমাদের অনেক সুবিধা হয়েছে। ভাঙ্গা পর্যন্ত ২৫০ টাকা ভাড়া।
এদিন করোনার টিকা নিতে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার মালিগ্রাম থেকে ঢাকায় আসেন আল মামুন মুন্সী নামে এক যুবক। তিনি বলেন, ভালো মানের টিকা দেওয়ার জন্য ঢাকায় আসি সকালে। সকাল ৮টায় বাসে উঠে ঢাকায় এসে টিকা নিয়ে আবার বাড়ি যাচ্ছি।
শরীয়তপুর থেকে আসা নিপা আক্তার বলেন, বাচ্চাকে ডাক্তার দেখাতে ঢাকায় এসেছিলাম। আগে অনেক কষ্ট করে বাচ্চাকে নিয়ে আসতে হতো। এবার আর লঞ্চ বা ফেরির জন্য অপেক্ষা করতে হয়নি। সেতু দিয়ে অল্প সময়েই এখন ওপারে চলে যাবো। এদিকে নতুন এই রুটে চলাচলকারী পরিবহনগুলো এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত নয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। শৃঙ্খলা ফেরাতে নতুন করে বাস মেরামতসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটের অনুমোদন প্রয়োজন। একই সঙ্গে সরকার দ্রুত সময়ে ভাড়া নির্দিষ্ট করলে যাত্রী ও পরিবহন মালিকদের সবারই সুবিধা হবে বলে জানান তারা। প্রচেষ্টা পরিবহনের সুপারভাইজার মো. শহীদ বলেন, আমাদের বাসগুলো ওপাড়ে যেতে পারবে কি না সে বিষয়ে আগে থেকে কোনো নির্দেশনা পাইনি। এ কারণে আমাদের তেমন প্রস্তুতি ছিল না। রুট যেহেতু বেড়েছে, গাড়িগুলোও নতুন করে মেরামত করতে হবে। ভাড়াও এখনো নির্ধারিত হয়নি। দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার স্বপ্নের দুয়ার খুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত শনিবার (২৫ জুন) উদ্বোধন হয়েছে পদ্মা সেতুর। প্রথম যাত্রী হিসেবে টোল দিয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন বেলা ১১টা ৪৮ মিনিটে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে প্রধানমন্ত্রী নিজ হাতে টোল দেন। এরপর দুপুর ১২টার একটু আগে সুইচ টিপে সেতুর ফলক উন্মোচন করেন। এর মাধ্যমেই খুলে যায় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগের সড়কপথের দ্বার।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com