বিগত বছরে পাটের আশানুরুপ দাম পাওয়ায় জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে পাটের চাষাবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবারও পাটের ভালো ফলন ও দাম পাবেন বলে আশা করছেন পাটচাষিরা। উপজেলার বাগজানা ইউনিয়নের বাগজানা গ্রামের পাট চাষি ফজলুল হক জানান, আমার আড়াই বিঘা জমি পাট চাষের জন্য বর্গা দিয়েছি, ফলন ভাল হওয়ায় প্রতি বিঘায় ফলন ১০ মণ আশা করছি। স্থানীয়রা জানায়, এই অঞ্চলের কৃষকরা দেশি, তোষা, মেশতা, রবি-১ মহারাষ্ট্র জাতের পাটের আবাদ করেছে। তবে উচ্চ ফলনশীল তোষা জাতের পাট চাষ বেশি হয়েছে। একই এলাকার পাট চাষি ফজলুর রহমান বলেন, এবার এক বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। এতে খরচ হয়েছে প্রায় ৫ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে পাটের ফলন ১০ মণ আশা করছি। গতবছর প্রতি মণ পাট ৩০০০ টাকা দরে বিক্রির করেছি। আশা করি এবছরও পাট বিক্রি করে লাভবান হবো। পাঁচবিবি উপজেলার আয়মারসুলপুর ইউনিয়নের কড়িয়া মন্ডলপাড়া গ্রামের আলহাজ্ব নুরুল আমিন মন্ডল জানান, সে এবার ৪ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। তার পাট খুব ভাল হয়েছে, আষাঢ় মাসের শেষে পাট কেটে এলাকার সবাই আমন ধান রোপন করে বলে জানায়। কৃষি অফিস জানায়, পাট জাগ দেওয়ার আধুনিক রিবন রেটিং পদ্ধতি এ উপজেলায় তেমন সাড়া জাগাতে পারেনি, কারণ এ পদ্ধতিতে নির্ধারিত সময়ের একদিন পরেও যদি পাট জাগ দেওয়া হয় তাহলে পাটের আঁশ সঠিকভাবে ছাড়িয়ে নেওয়া যায় না। এতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অন্য দিকে সনাতন পদ্ধতিতে পাট জাগ দেওয়ায় পরিবেশ দূষিতও হয়। তবে আধুনিক ভাবে পাট জাগ দেওয়ার বিরন রেটিং পদ্ধতি সম্পর্কে এই এলাকার কৃষকরা জ্ঞান সম্পন্ন না হওয়ায় তারা এখনও সনাতন পদ্ধতি অবলম্বন করছে। কৃষকরা যেনো পাট চাষে উদ্বুদ্ধ হয় সেজন্য উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে চাষিদেরকে আধুনিক পদ্ধতিতে স্বল্প পরিমান পানিতে পাট জাগ দেওয়ার প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা কৃষিবিদ লুৎফর রহমান বলেন, তিন বছর ধরে পাটের ভালো দামও পাচ্ছেন চাষিরা। তাই তাঁরা আবার পাট চাষে ঝুঁকছেন। চাষ বেশি হওয়ায় উৎপাদন আরও বাড়বে বলে আশা করছেন । তিনি বলেন পাঁচবিবি উপজেলায় এবছর গতবারের তুলনায় অধিক পরিমান জমিতে পাট চাষ হয়েছে। এবছর উপজেলায় ১হাজার ৪৪০ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছে এবং আশানরুপ দাম পেলে আগামীতে আরো অনেক বেশি পাট চাষ হবে বলে জানান।