ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকার শিবনগর গ্রামে শংকর দাস ও শ্যামলী রানী দাসের কনিষ্ঠ সন্তান শিশু অর্ণব দাস ৫ মাস আগে শারীরিক প্রতিবন্ধী অবস্থায় জন্মগ্রহণ করে। জন্ম থেকে অর্ণবের কোমর ও দুই পায়ের পাতা বেশ বাঁকা ও মাথাটি ছোট একই সাথে কিছুটা অস্বাভাবিকও। অর্ণবের শারীরিক এই ত্রুটির পাশাপাশি সবথেকে চিন্তার বিষয় হলো জন্মের পর থেকে আজ পর্যন্ত ঘুমানো এবং খাওয়ার সময়টুকু বাদে বাকি সময় তার কান্নাকাটি করেই কাটে। কোনো ভাবেই থামানো যায় না তার কান্না। খাবার বলতে যতটুকু দুধ সে খায় তার অধিকাংশই বমি করে উঠিয়ে দেই। সেলুনে কাজ করে সীমিত আয় দিয়ে কোনরকমে সংসার চালিয়ে শিশুসন্তানের এই অজানা রোগের চিকিৎসা করতে হিমশিম খাচ্ছেন বাবা শংকর দাস। নিজের গচ্ছিত অর্থে শিশু সন্তানের চিকিৎসার ব্যয় সংকুলন করতে না পেরে ধার দেনা করেও চালিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসা। একের পর এক ডাক্তার দেখানোসহ নানাবিধ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুনির্দিষ্টভাবে সন্তানের রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি আজও। প্রতিদিনকার প্রায় হাজার টাকার ওষুধ কিনতে ব্যায় করাও কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তবুও নিরুপায় এই পিতা-মাতা তাদের সন্তানের সুস্থতার জন্য উন্নত চিকিৎসা দিতে নিতে চান পার্শ্ববর্তী দেশ ইন্ডিয়াতে। কিন্তু চিকিৎসার এই বিশাল ব্যায়ভার বহনের চিন্তার রেখা তাদের চোখে-মুখে ফুটে উঠছে। শিশুটির পিতা শংকর দাস জানান, অসাভাবিক অবস্থায় আমার সন্তান জন্মগ্রহণ করার পরপরই আমি প্রথমে কালীগঞ্জে ডাঃ প্রদীপ মিত্রকে দেখায়। তারপর কালীগঞ্জের প্রতিবন্ধী চিকিৎসালয়ের ডাঃ সুনীল কুমার ঘোষকে দেখালে তিনি ঘুমের ঔষধ দেন। ঘুম থেকে উঠেই আবার কান্না শুরু। এরপর যশোর কুইন্স হাসপাতালে শিশু ও কিশোর রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ মো: মাহফুজুর রহমানের নিকট ৪ বার দেখিয়ে ঔষধ খাওয়ায়েও হয়নি কোনো প্রতিকার। এরপর ব্রেইন, নার্ভ এবং স্পাইন সার্জন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডাঃ এম এম এনামুল হককে দেখালাম। তিনি বেশ কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা দেন এবং বলেন ব্রেইন, স্পাইন ও স্নায়ু রোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন ডাঃ মোঃ জিয়াউদ্দিনকে দেখানোর জন্য। তখন আমার ছেলেকে এই ডাক্তার দেখালে তিনি জানান, আমার শিশু সন্তানের ব্রেইনের পানি শুকিয়ে যাচ্ছে এবং খাদ্যনালী সরু। একাধিক ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেও কোনো ডাক্তার সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারেননি কি কারণে আমার ৫ মাসের শিশু সন্তান সারাক্ষণ কান্না করে।আর কি চিকিৎসায় তার কান্না বন্ধ হবে। এই শিশুটির অসুস্থতাজনিত সার্বিক চিকিৎসা সম্পর্কিত ব্যাপারে ডাঃ জিয়া উদ্দীনের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই শিশুটির চিকিৎসায় পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার আশা ক্ষীণ। তবে আরোও উন্নত চিকিৎসার জন্য অবিভাবককে দেশের বাইরে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। বাচ্চাটির সুচিকিৎসার জন্য ভারতে নিতে প্রয়োজন অনেক অর্থের। কিন্তু গরিব পিতা-মাতার পক্ষে এই অর্থের যোগান দেওয়া সম্ভব নয়। তাই শিশুটির বাবা শংকার দাস সমাজের বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধি ও সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের নিকট সহযোগিতা চেয়েছেন। আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে তার মায়ের শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের শ্যামলী রানী দাস নামের ১১০৩১২১০০০১৫২৮৬ নং হিসাব নাম্বার কিংবা তার বাবা শংকার দাসের ০১৭২৫-৩১৭-১২০ (বিকাশ পারসোনাল) নাম্বারে পাঠান যাবে। আমরা সকলেই যদি সামর্থ্য অনুযায়ী এই শিশুটির সুচিকিৎসায় কিছুটা আর্থিক সহযোগিতা করতে পারি তাহলে হয়ত সে সুচিকিৎসা নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে।