সার আমদানীর নামে মোটা অংকের সরকারী অর্থ অপচয়, চলতি মৌসুমে সার সংকটে ফসল উৎপাদনসহ কৃষক ক্ষতিগ্রস্তের অশংকা জামালপুরের সরিষাবাড়ির তারাকান্দিতে অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ ইউরিয়া সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যমুনা সার কারখানায় দীর্ঘ দিন যাবত গ্যাস সংকটে স্যার উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘ সময় ইউরিয়া উৎপাদন বন্ধ থাকলে জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, রাজবাড়িসহ উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলায় আসন্ন আমন-ইরি বোরো মৌসুমে কৃত্রিম স্যার সংকটের পাশাপাশি ফসল উৎপাদন ব্যাহত হওয়াসহ এলাকার কৃষক ও স্যার ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসি। জানাযায় চলতি বছরের ২১ জুন গ্যাস সংকট এবং বিদ্যুতের লোডশেডিং এর কারণে স্যার উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। ফলে সময় থকতে সার উৎপাদনে যেতে না পারলে আসন্ন আমন-ইরি বোরো মৌসুমে কৃষকদের স্যার সরবরাহ ব্যাহত হবে। এতে করে ডিলাররাসহ কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি সাধনসহ ফসল উৎপাদন ব্যাহতের আশংঙ্কা করছেন এলাকাবাসি। সার ব্যবসায়ীদের অভিযোগ,একটি অসাধু চক্র নিজেদের স্বার্থ হাসিলের উর্দ্ধেশ্যে প্রতি বছর নানা অজুহাতে যমুনা স্যার কারখানা উৎপাদন বন্ধ রেখে দেশকে স্যার আমদানী নির্ভর করে তোলেন। পরে তারা সুকৌশলে সার আমদানীর নামে মোটা অংশের সরকারী অর্থ হাতিয়ে নেন। সার ব্যবসায়ী সরকার আবুল হোসেন,ফারুক হোসেন বলেন, আমরা অতীত থেকে লক্ষ্য করছি প্রতি বৎসর নানা অজুহাতে কারখানার উৎপাদন বন্ধ রেখে বিদেশ থেকে কয়েকগুন বেশি মূল্যে নিন্মমানের সার আমদানি করা হয়ে থাকে। এসব আমদানীকৃত স্যার প্রতি এক টনে সরকারকে ৮০ হাজার টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। এতে করে সরকার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও একটি অসাধু দুষ্ট চক্র লাভবান হচ্ছে। অপরদিকে কারখানায় স্যার উৎপাদন বন্ধ থাকলেও প্রতিদিন সহস্রাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী অলস সময় পার করে মাস শেষে কোটি কোটি টাকা সরকারী অর্থে বেতন নিচ্ছেন। এ সংক্রান্ত বিষয়ে জামালপুরের মানবাধিকার কর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, যমুনা স্যার কারখানায় প্রায় ১৬০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে। এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কারখানা বন্ধ রেখে প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকার বেতন না দিয়ে এমনকি হাজার হাজার কোটি টাকা স্যার আমদানীর নামে ভতুর্কী না দিয়ে সরকার চাইলেই গ্যাস সরবরাহ করে স্যার উৎপাদন অব্যাহত রাখতে পারেন। এতে করে সরকারের কোটি কোটি টাকার লোকসান গুনতে হবে না বলে উল্লখ করেন।এ বিষয়ে যমুনা স্যার কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী মো. জাকির হোসাইন এ সংক্রান্ত বিষয়ে তার বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। মুঠোফোনে যমুনা স্যার কারখানার মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) আব্দুল হাকিম জানান, গ্যাস সংকট ও বৈদ্যতিক লোডশেডিংয়ের কারণে স্যার উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। তিনি আরো বলেন যমুনা সারকারখানায় প্রতিদিন ১৭০০ মে. টন ইউরিয়া স্যার উৎপাদন করতে হলে ৪৫ মিলিয়ন ঘন ফুট গ্যাসের প্রয়োজন হয়। নিয়মিত গ্যাস এবং বৈদ্যতিক লোাডশেডিং না থাকলে আবারও সার উৎপাদন করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন। তারাকান্দি স্যার কারকানা ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম মানিক বলেন,স্যার কারখানা কেন্দ্রিক ৪২০টি ট্রাক রয়েছে। এসব ট্রাক সংশ্লিষ্ট জড়িত রয়েছে প্রায় ৮৪০ জন চালক, হেলপারসহ ট্রাক মালিকগণ। এছাড়া কারখানা কেন্দ্রীক হাজারও শ্রমিক জড়িত থেকে আয়-রোজি করে পরিবার পরিজন নিয়ে জীবন ধারণ করে থাকেন। কারখানা বন্ধ থাকলে তাদের আয় রোজিও বন্ধ হয়ে যায়। তাই কারখানা চালুই একমাত্র হাজারও পরিবারের অন্ন যোগায় বলে জানান।